1. newsroom@saradesh.net : News Room : News Room
  2. saradesh.net@gmail.com : saradesh :
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক : প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা - সারাদেশ.নেট
রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার হাইকোর্টে ২৩ অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ খালাস পেলেন যুবদল নেতা আইনজীবী নুরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত হলেন এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা নিউইয়র্কে ইউনূস ও বাইডেনের বৈঠক মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর বিচারপ্রার্থীগণকে উন্নত সেবা প্রদানে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা প্রথমবারের মতো সেনাসদরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশ পুনর্গঠনে মার্কিন সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যাক্তিদের একটি তালিকা তদন্ত কমিশনে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক : প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা

  • Update Time : সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্বপালনে নিউজ কভার করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম ইমন মারাত্মক আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৮দিন ধরে হাসপাতালে।

দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের সাংবাদিক ইমন গত ২০ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার পরিবার জানায়, উন্নত চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট না পেলে তাকে বাঁচানো ও সুস্থ করা অসম্ভব হয়ে উঠছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ জানান, ইমনের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে একাধিক বুলেট বিদ্ধ। তাছাড়া বিদ্ধ হয়েছে অসংখ্য ছড়রাগুলি। ইতোমধ্যে একাধিক অপারেশন হয়েছে। নতুন করে হার্টে সমস্যা হয়েছে।

গত ২০ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মালিবাগ রেলগেইট এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী অ্যাকশনের দৃশ্য ধারণ করতে গেলে গায়ে প্রেস লেখা সিকিউরিটি জ্যাকেট ও বুকে সাংবাদিকের পরিচয়ের আইডি কার্ড ঝুলানো থাকার পরও সরাসরি গায়ে ইমনকে গুলি করে পুলিশ। একটি গুলি তার শরীরের তলপেটে ভেদ করে, আরেকটি গুলি তার পায়ের উপরে গোপনাঙ্গের পাশ ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়। তাছাড়া শরীরে বিদ্ধ হয় অসংখ্য ছড়রাগুলি। ওই স্থানে উপস্থিত পুলিশ তাকে মৃত ভেবে তার দেহকে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। একপর্যায়ে স্থানীয় কয়েকজন তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন যে তার প্রাণ রয়েছে। চিকিৎসকগণ ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের বিপরীতে বার্ণ ইউনিটে তাকে স্থানান্তর করেন।

চিকিৎসকদের চেষ্টায় আটচল্লিশ ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিয়ে আসে। বার্ন ইউনিটের ৫ নাম্বার বেডে কয়েকদিন চিকিৎসার পর তাকে শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার শরীরে দুইটি অস্ত্র পাচার সম্পন্ন হয়। সেখানে কেবিন নাম্বার ১৪২৯ ও ১৪৪২ এ ২৮ দিন চিকিৎসা চলা অবস্থায় গতকাল রোববার সাংবাদিক ইমনের হার্ট এট্যাক হয়। সেখান থেকে তাকে এখন ঢাকা মেডিকেলের সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। সিসিওতে বেড নাম্বার ৬ এ এখন সাংবাদিক ইমন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

সাংবাদিক ইমনের স্ত্রী সুমি বেগম জানান, টানা ৩৮ দিন ধরে তার স্বামীকে নিয়ে চিকিৎসায় লড়াই করছেন। আশংকাজনক অবস্থা এখনো কাটেনি। আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতজনদের কাছ থেকে ধার করে ইতিমধ্যে অনেক অর্থ তারা খরচ করেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তাদের কাছে নেই। তিনি বলেন, বিএনপি’র পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতালে গিয়ে ইমনকে দেখে এসেছেন এবং কিছু অর্থ সহায়তাও দিয়েছেন। ইমনের ব্যক্তিগত বন্ধু ও দু’একজন শুভাকাঙ্ক্ষী ছাড়া আর কেউ তার খবর নেয়নি। তাদের পাঁচ সন্তান রয়েছে। সকলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন।

ইমন পরিবার নিয়ে কেরানীগঞ্জের রিভারভিউ এলাকায় থাকেন। বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলার বদনিভাঙ্গা গ্রামের মৃত হেমায়েত হোসেনের পুত্র ইমন।

ইমনের পুত্র মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল উদয় জানান, রাজধানীর তেজগাঁও কলেজে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য তিনি। উদয় জানান, কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে গঠিত দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবে অংশ নিয়েছেন। তার বাবা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে দীর্ঘ ৩৮ ধরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার বাবাকে সুস্থ করতে হলে আরো উন্নত চিকিৎসা ও লজিস্টিক সাপোর্ট প্রয়োজন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী পিতার চিকিৎসায় এগিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পুত্র উদয়।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিক হাসান মেহেদী সহ চার সাংবাদিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। আরো আহত হন অনেক সংবাদকর্মী।

উল্লেখ্য সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবী জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে যৌক্তিক ভাবে সমাধানের পথে না গিয়ে বিগত আওয়ামী সরকারের সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে লেলিয়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিগত সরকারের নির্দেশে কঠোর অবস্থানে থেকে শিক্ষার্থীদের উপরে চড়াও হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন। ওইদিন দেশব্যাপী ছয় জনের মৃত্যু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ সারা বাংলাদেশের ছাত্র জনতা ফুসে ওঠে। পর্যায়ক্রমে এ আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়। আন্দোলনকে দমন ও নির্মূল করতে গিয়ে তৎকালীন আওয়ামী সমর্থিত ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সহস্রাধিক মানুষ নির্মমভাবে গুলিতে নিহত হন।

এ আন্দোলনে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পরে পুলিশও মৃত্যুর শিকার হন। এ আন্দোলনে কয়েক হাজার মানুষ গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, গণতন্ত্রকামী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও সাধারণ মানুষের লাল বিপ্লবে বাংলা বসন্তের ফলে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিগত সংসদ ভেঙে দেয়া হয়।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিদায়ী সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অপশাসন হত্যা গনহত্যা গুমের সাথে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।
এসএম/ডিএএম//

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *