1. newsroom@saradesh.net : News Room : News Room
  2. saradesh.net@gmail.com : saradesh :
কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী দলীয় ভাবমূর্তি ও ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নষ্ট করছে - সারাদেশ.নেট
মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
কোটা সংস্কার আন্দোলন: সারাদেশে ৬ জন নিহত কোটার বিষয়ে আদালতকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করবে না সরকার: আইনমন্ত্রী কোটা নিয়ে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে রাস্ট্রপক্ষের `লিভ টু আপিল’ সচেতনতার অভাবে অনেক মানুষ বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে : প্রধান বিচারপতি ৪৪ জনকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে হাইকোর্টের রায় এলআরএফ এর নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ, নিজেদের স্বার্থেই সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : সোহেল হায়দার চৌধুরী কুমিল্লা জজ কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ জালাল উদ্দিন স্বপনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ৭ জুলাই আপিল নিস্পত্তির পূর্বে সাজা কখনও স্থগিত হয় না : হাইকোর্ট কুমিল্লার চাডিগাঁইয়া সমাজের কৃতী ব্যক্তিদের জীবনী সঙ্কলন: উজ্জ্বল নক্ষত্র জীবনীগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এলআরএফের পাল্টাপাল্টি কমিটি: একপক্ষের নেতৃত্বে আশরাফ-মিশন: অপরপক্ষে মাসউদ-রব্বানী

কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী দলীয় ভাবমূর্তি ও ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নষ্ট করছে

  • Update Time : বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক:
কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী দলীয় ভাবমূর্তি ও ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নষ্ট করছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এক আদেশে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হলে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করার পর আজ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা খবরে দেখা যাচ্ছে, সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্টভাবে আবাসিক হল ও হোস্টলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে অপ্রত্যাশিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। কলেজজীবন পেরোনোর সময় তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে নিষ্পাপ শিক্ষার্থী, বিশেষত নবাগতদের নির্যাতন করে। আদালত বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা খবরে দেখা যাচ্ছে, সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্টভাবে আবাসিক হল ও হোস্টলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে অপ্রত্যাশিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। কলেজজীবন পেরোনোর সময় তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে নিষ্পাপ শিক্ষার্থী, বিশেষত নবাগতদের নির্যাতন করে। এ ধরনের অবাধ্য ছাত্ররা শিক্ষার মানসম্মত পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে, এমনকি দলীয় শৃঙ্খলাও ভঙ্গ করে। এর মাধ্যমে তারা দলের ভাবমূর্তি ও ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নষ্ট করছে।

আদালত বলেন, ইবি ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখে বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত দেবে। আদালত বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন, অন্য সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে। অনেক সময় রাজনৈতিক আশ্রয়ের অপব্যবহার করে কেউ কেউ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নষ্ট করে দিচ্ছে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করো-এসব কথাও উঠতে পারে। তবে ছাত্ররাজনীতির যে প্রয়োজন, সেটি আমরা আমাদের ইতিহাস থেকে দেখেছি। কিন্তু এটাকে নষ্ট করার জন্য, ক্ষুণ্ন করার জন্য অনেকে না বুঝে করে, অনেকে বুঝে করে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

আদেশে আদালত ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী জড়িত ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দেয়। একই সঙ্গে ওই হলের প্রভোস্ট ড. শামসুল আলমকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে শুনানি শেষে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সিলগালা করে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িত শিক্ষার্থী, অবহেলা করা হল প্রশাসনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ ৫ ছাত্রীকে সব ধরণের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ও ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে।

বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী হলেন-পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, চারুকলা বিভাগ ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার উর্মি, আইন বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের ইসরাত জাহান মীম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান।

এছাড়া ঘটনার সময় নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনের ভিডিও করা চারুকলা বিভাগ ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার উর্মির মোবাইল ফোন সংগ্রহ এবং ধারণ করা ভিডিও উদ্ধার করে আদালতে দাখিল করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নির্ভয়ে স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন চালিয়ে নিতে তিন দিনের মধ্যে আবাসিক হলে ফুলপরীর জন্য সিট বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল কর্তৃপক্ষকে। সেই সঙ্গে কুষ্টিয়ার এসপি ও পাবনার এসপিসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফুলপরীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ঘটনার সাক্ষীদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এ আদেশের বিষয়ে ৮ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদেশের সময় রিটকারী আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মনিটরিংয়ে রাখব। আপনিও এ বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। কোনো সমস্যার উদ্ভব হলে আদালতকে জানাবেন। তখন আমরা প্রয়োজনীয় আদেশ দেব।’

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযোগ ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তারা ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। র‌্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে গত মঙ্গলবার ১৪ ফেব্রুয়ারি হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। হাইকোর্ট প্রশাসন ক্যাডার, বিচার বিভাগ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এ সময় দুই অভিযুক্তকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়।

সেই অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কমিটি এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে পাঠানো হয়। প্রতিবেদন পাঠানোর পর ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই পাঁচ শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির প্রতিবেদন মতে, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নির্দেশে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২০২২ সেশনের শিক্ষার্থী ফুলপরীকে র‌্যাগিং ও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। এই অমানবিক, পাশবিক, শারীরিক, ন্যাক্কারজনক, জঘন্য ঘটনার সঙ্গে সরাসরি চারুকলা বিভাগ ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার উর্মি, আইন বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের ইসরাত জাহান মীম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের তাবাসসুম ইসলাম এবং মোয়াবিয়া জড়িত ছিলেন।

ডিএএম/এসএম//

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *