1. newsroom@saradesh.net : News Room : News Room
  2. saradesh.net@gmail.com : saradesh :
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের - সারাদেশ.নেট
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচনে ভোট গননায় মারামারি : জামিন পেলেন যুবদল নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ নারী নির্যাতন মামলায় অভিযোগকারীগন ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীদের ১৫ ব্যাচ এর নতুন কমিটি : আহ্বায়ক অভি, সদস্য সচিব তামান্না আইনপেশা পরিচালনায় আইনজীবীদের পেশাগত নৈতিক মানদণ্ড রক্ষার ওপর প্রধান বিচারপতির গুরুত্বারোপ বাংলাদেশ মেডিয়েটরস ফোরাম (বিএমএফ) এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবেক এমডি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা শিল্প বিকাশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রায় গর্বিত সহযোগী আব্দুল মোনেম লিমিটেড : মঈনুদ্দিন মোনেম ভূমিদস্যু কামরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১০ আইনজীবীর আবেদন টাকা আত্মসাতের মামলায় সাইমেক্স লেদারের এমডি বিএনপি নেতা টিএস আইয়ুব ও তার স্ত্রী কারাগারে সরকারি খরচায় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে ৩০৪৮ মামলায় আইনি সহায়তা

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের

  • Update Time : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি : ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ।

বাংলাদেশের জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা গৌরবের এক অনন্য দিন ৭ মার্চ।

৫০ বছর আগের এ দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে গর্জে উঠেছিল উত্তাল জনসমুদ্র। লাখ লাখ মানুষের গগনবিদারী স্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় সেদিন পত পত করে উড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজের পতাকা।

অগ্নিঝরা সেই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহতী কাব্যের কবি হয়ে এলেন বঙ্গবন্ধু। তার বজ্রকণ্ঠের নিনাদে বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হলো স্বাধীনতার ঘোষণা।

একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য কি দারুণ অপেক্ষা আর উত্তেজনা নিয়ে/লক্ষ লক্ষ উন্মুক্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে/ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে/কখন আসবেন কবি?’/ …শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে/রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে/অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন/…. কে রোধে তাঁহার বজ কণ্ঠ বাণী?/ গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি/এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।/ সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’ কবি নির্মলেন্দু গুণ অগ্নিঝরা একাত্তরের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের মুহূর্তটি এভাবে কবিতায় মূর্ত করে তুলেছেন।

বঙ্গবন্ধু সেদিন শুধু স্বাধীনতার চূড়ান্ত আহ্বানটি দিয়েই চুপ থাকেননি, স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখাও দিয়েছিলেন। মূলত বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণই ছিল ৯ মাসব্যাপী বাংলার মুক্তি সংগ্রামের ঘোষণা ও মূল ভিত্তি। সেদিন বেলা ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন। ফাগুনের সূর্য তখনও মাথার উপর। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। তখন পুরো রেসকোর্স ময়দান লাখ লাখ বাঙালির ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ মুজিব-শেখ মুজিব’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে।

প্রায় ১৯ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের পুরো ক্যানভাস তুলে ধরেন। বজ কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘… তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাক, কেউ কিছু বলবে না। গুলি চালালে আর ভালো হবে না। সাত কোটি মানুষকে আর দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙালি মরতে শিখেছে, তাদের কেউ দাবাতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধুর এ তেজোদীপ্ত ভাষণে গর্জে ওঠে উত্তাল জনসমুদ্র। তিনি সেদিন জনতাকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।’ বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা মুক্তিকামী মানুষের কাছে লাল-সবুজ পতাকাকে মূর্তিমান করে তোলে। আর এ মাধ্যমে বাঙালির ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধু সেদিন ‘আমি যদি হুমুক দেবারও না পারি’ বলেও সাড়ে সাত কোটি বাঙালির উদ্দেশে স্বাধীনতার আহ্বান রেখে যান।

সেদিন সারা দেশ থেকে ছুটে আসা স্বাধীনতা-পাগল মানুষের ঢলে রেসকোর্স ময়দানের চতুর্দিকে জনবিস্ফোরণ ঘটে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে নারী-পুরুষের স্রোতে তিলধারণের জায়গা ছিল না। বেলা ৩টায় রেসকোর্সে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকে মানুষের সমুদ্রে রূপ নেয়। রাজধানী ঢাকার চতুর্দিকে ছিলেন ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। আকাশে উড়তে থাকে হানাদারদের জঙ্গিবিমান।

শহীদ জননী জাহানার ইমামের লেখা একাত্তরের দিনলিপি গ্রন্থে ৭ মার্চের বর্ণনায় আছে, ‘রেসকোর্স মাঠের জনসভায় লোক হয়েছিল প্রায় তিরিশ লাখের মতো। কত দূরদূরান্ত থেকে যে লোক এসেছিল মিছিল করে, লাঠি আর রড ঘাড়ে করে- তার আর লেখাজোখা নেই। টঙ্গী, জয়দেবপুর, ডেমরা- এসব জায়গা থেকে তো বটেই, ২৪ ঘণ্টা হাঁটা পথ পেরিয়ে ঘোড়াশাল থেকেও বিরাট মিছিল এসেছিল গামছায় চিড়ে-গুড় বেঁধে। অন্ধ ছেলেদের মিছিল করে মিটিংয়ে যাওয়ার কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলাম। বহু মহিলা, ছাত্রী মিছিল করে মাঠে গিয়েছিল শেখের বক্তৃতা শুনতে।’


বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্বের স্মৃতি’ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে এবং বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণার অনির্বাণ শিখা হয়ে অফুরন্ত শক্তি ও সাহস জুগিয়ে আসছে। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এমন একটি ভাষণ যা যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেজে চলেছে। কিন্তু ভাষণটির আবেদন এতটুকু কমেনি। ৫০ বছর ধরে একই আবেদন নিয়ে টানা কোনো ভাষণ এভাবে শ্রবণের নজির বিশ্বের ইতিহাসে নেই। বরং যখনই প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ ঐতিহাসিক ভাষণটি শোনে তখনই তাদের মানসপটে ভেসে ওঠে স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা আন্দোলন-সংগ্রামের মুহূর্তগুলো, আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের আদর্শে।

দিনটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুধু বাঙালির নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, ৭ মার্চ বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বজ কণ্ঠে যে কালজয়ী ভাষণ দিয়েছিলেন, তার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তির ডাক।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে ৭ মার্চ এবার ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হবে। এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় দিবস হিসাবে ৭ মার্চ উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান এবং দেশব্যপী থানা ও জেলা উপজেলায় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিএ/

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *