নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর কবরস্থানে গিয়ে নড়েচড়ে ওঠা সেই নবজাতক শিশুটি শেষ পর্যন্ত মারা গেছে।
বুধবার ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া সারাদেশ ডট নেট’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শিশুটিকে রাত ১১টা ২৫ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা শিশুটিকে দাফনের জন্য রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে নিয়ে যান।
গত শুক্রবার ১৬ অক্টোবর ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ইয়াসিনের স্ত্রী শাহিনুর বেগম (২৭) একটি মেয়েশিশুর জন্ম দেন। জন্মের পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে মৃত্যুসনদ নিয়ে ইয়াসিন শিশুটিকে দাফনের জন্য রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে দাফনের খরচ পোষাতে না পেরে শিশুটিকে রায়েরবাজার কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কবর খোঁড়ার সময় শিশুটি নড়ে উঠে কাঁদতে থাকে। তখন ইয়াসিন তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটিকে নবজাতক ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
শিশুটিকে মৃত ঘোষণার ঘটনায় সমালোচনার মুখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। শিশুটির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে গত মঙ্গলবার হাসপাতালের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন কর্তৃপক্ষ।
ওই সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালটির পরিচালক এ কে এম নাসিরউদ্দিন বলেন, জন্মের পর ওই নবজাতককে পৌনে এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন চিকিৎসকেরা। এই সময়ের মধ্যে তার কোনো স্পন্দন পাওয়া যায়নি। তাকে মৃত ঘোষণায় চিকিৎসকদের কোনো অবহেলা ছিল না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাচ্চাটি কবরস্থানে গিয়ে নড়েচড়ে উঠেছে, তাই এর দায়ভার এড়ানো যায় না। এ ঘটনায় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কিছু সুপারিশ রেখেছে। হাসপাতালের গঠিত কমিটি ও নবজাতক ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক মনীষা ব্যানার্জি একই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নবজাতকের বেঁচে যাওয়া যেমন একটি ‘মিরাকল (অলৌকিক ঘটনা)’, তেমনি তাকে বাঁচিয়ে রাখাও ‘মিরাকল’। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২৮ সপ্তাহের নিচে কোনো শিশু ভূমিষ্ঠ হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। আর এই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে ২৬ সপ্তাহে।
ইয়াসিনের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালঙ্গা গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে তুরাগের নিসাতনগর এলাকায় থাকেন।
এসএস//
Leave a Reply