মু:কাইয়ুম, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক:
বিএনপির মহিলা নেত্রীদের সম্পর্কে অবমাননাকর, অসম্মানজনক ও মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদের স্পিকার বরাবর চিঠি দিয়েছেন বিএনপিপন্থী সুপ্রিমকোর্টের ৫৫ জন নারী আইনজীবী।
চিঠিতে জনস্বার্থে এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় সংসদে ড. হাছান মাহমুদের সদস্যপদ বাতিল ঘোষণা করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয় সংসদের স্পিকার প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ৩১ আগস্ট সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, আরিফা জেসমিন নাহিন, নাসরিন আক্তার, শামীমা সুলতানা দিপ্তী, সরকার তাহমিনা সন্ধ্যাসহ ৫৫ জন নারী আইনজীবীর স্বাক্ষর করা চিঠি জাতীয় সংসদের স্পিকার বরাবরে রেজিস্ট্রর ডাক যোগে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ফাহিমা নাসরিন মুন্নী বলেন, আমরা প্রথমে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সাথে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সাক্ষ্যৎ না পেয়ে আজ রেজিস্টার ডাকযোগে ৫৫ জন নারী আইনজীবীর স্বাক্ষর করা চিঠি স্পিকারের বরাবরে পাঠিয়েছি। বিষয়টি আমরা বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অবহিত করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সংসদের স্পিকার সবাই নারী। যখন সারা বিশ্ব নারীর ক্ষমতায়নের দিকে তাকিয়ে আছে, তখন হাছান মাহমুদের এমন অসভ্য ও নির্মম আচরণ সমাজ উন্নয়নের স্বাভাবিক স্রোতের বিপরীত।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১১ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট’ আয়োজিত এক সভায় বিএনপির উদ্দেশে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশীদের পেছনে ছুটে কোনো লাভ নেই। … রাত বিরাতে আপনাদের (বিএনপি) মহিলা নেত্রীদের সাজগোজ করিয়ে নিয়ে বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দেয়া, এটা দয়া করে বন্ধ করুন। এতে কোনো লাভ হয় নাই। ওরা সহ আপনারা যান, আমরা জানি। মানুষে নানা কথা বলে। আমি এগুলো বলতে পারবো না।’
চিঠিতে বলা হয়েছে, ড. হাছান মাহমুদের এ ধরনের বক্তব্য ভিত্তিহীন, অনৈতিক, অশোভন, লিঙ্গ সংবেদনশীল এবং দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক বলে মনে করেন ৫৫ নারী আইনজীবী।
ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্য সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। এছাড়া সংবিধানের ২৭, ২৮, ২৯ ও ৪০ অনুচ্ছেদ অনুসারে নারীরা পুরুষের সমান অধিকার ভোগ করার অধিকারী। সংবিধানের মর্যাদা রক্ষার শপথ নেয়ার পরও নারীদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক, অশোভন ও মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার মাধ্যমে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবিধান লঙ্ঘণ করেছেন। সে জন্য তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হওয়া প্রয়োজন।
বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এবং দেশের সচেতন নারী হিসেবে দেশের বৃহত্তর নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আপনার (স্পিকার) কাছে ড. হাছান মাহমুদের সংসদ সদস্যপদ বাতিলের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করছি।
এমকে/কেকে//
Leave a Reply