Dhaka ০৬:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

মুখের দূর্গন্ধ: করণীয় সম্পর্কে জানালেন ডা: সৈয়দা ফারজানা আফরিন

  • Update Time : ০৯:০৪:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩
  • / ০ Time View

মুখের দূর্গন্ধের জন্য কথা বলতে ভয় পান ! করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন-ডা: সৈয়দা ফারজানা আফরিন, বিডিএস(ঢাকা), পিজিটি (ডেন্টিস্ট্রি), শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। চীফ কনসালটেন্ট, আফরিন ডেন্টাল কেয়ার, বাড়ি নং-৩৮, রোড-৫, ব্লক-বি, বনশ্রী, রামপুরা সিরিয়াল- 01716810551,02224405586

সৈয়দা আইরিন আফরিন জেসি, সারাদেশ প্রতিবেদক:

কিভাবে মুখের অন্দরে খেয়াল রাখবেন?

# ভালো করে দিনে দুইবার ব্রাশ করতে হবে। ভালো পেস্ট ব্যবহার করতে হবে। ডেন্টাল ফ্লক্স ব্যবহার করতে হবে। জিভ ভালোকরে পরিষ্কার করতে হবে। ভালোকরে কুলকুচি করতে হবে। ৩ থেকে ৬ মাস পরপর মাউথওয়াশ ব্যবহার করু।

দাতেঁর যে কোনো সমস্যা অনুভূত হলেই চিকিৎসকের (ডেন্টাল সার্জন) শরণাপন্ন হোন।

ডা: আফরিন বলেন, মুখের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল ও যত্নশীল না হলেই দূর্গন্ধ (Bad Breath) সূত্রপাত হয়। তাছাড়াও আরো সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। মূ্খের দূর্গন্ধের জন্য নানা বিব্রতকর পরিস্থিতির মূখে পড়তে হয়।

মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়, কী করবেন?

> মুখে বাজে গন্ধ অনেকেরই হয়ে থাকে। এমন সমস্যায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বন্ধু-সঙ্গীরা মুখ ফিরিয়ে নেয় অনেক সময়। এমন জটিল সমস্যার সহজ সমাধান আছে।

মুখে দুর্গন্ধ কেন হয় :

১. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন
২. শারীরিক কিছু রোগ এবং মুখ ও দন্ত রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা
৩. সঠিক পদ্ধতিতে দন্ত পরিচর্যা।
৪. দীর্ঘসময় ধরে না খেয়ে থাকা।
৫. মুখের থুথু কমে যাওয়া- থুথু মুখের ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন বন্ধ করে কিন্তু রমজানে থুথুর পরিমাণ কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়াগুলোর দ্রুত প্রজনন হয়ে থাকে, যা দুর্গন্ধের কারণ হয়।
৬. যেসব খাবার মুখের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে, তা বেশি খাওয়া।
৭.কম পানি পান করা ৮.যেসব খাবার মুখের দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে, সেহরি বা ইফতারের সময় সেগুলো খাওয়া।
৯. নিয়মিত নিয়মমতো মুখ ও দাঁতের পরিচর্যা না করা।
১০. কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা থাকা যেমন- নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস, পেটের পীড়া, লিভারের সমস্যা, টনসিলজনিত সমস্যা ইত্যাদি।
১১. মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাসগত সমস্যা।
১২. দীর্ঘ সময় কিছু না খাবারের কারণে ও জিহ্বা পরিষ্কার না করার কারণে জিহ্বার উপর সালফারের প্রলেপ পড়ে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।

আরো যা করতে হবে :

মুখের এ দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে আমরা যেসব ব্যবস্থা নেব- দৈনিক কম করে হলেও ৩ থেকে ৪ লিটার গ্লাস পানি খেতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি, দইজাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত। লেবু, জাম্বুরা, কমলা, কামরাংগা, মাল্টা ও আনারসের শরবত পান করা। গাজর, শসা, টমেটো, আমড়া ও আমলকি ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখা।

# খাবারের পর ৩০-৬০ মিনিট আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, ব্রাশ করার জন্য যেন প্রাকৃতিক উপায়ে থুথুর মাধ্যমে খাদ্য পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে ও মুখের নরমাল PH বহাল থাকে। খাবারের পরপরই মুখের PH এসিডিক থাকে, খাবার পর থুথু প্রথম মুখের PH নরমাল করে। তাই খাবারের পরপরই দাঁত ব্রাশ করার ফলে এনামেলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে এসিডিক PH -এ ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন হার বেশি।

# অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ যেমন- ০.২ শতাংশ ক্লোরহেক্সিডিন অথবা ০.৫ শতাংশ পভিডোন আয়োডিন প্রতিদিন ৩ বার, ২ চামচ ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রতিবার কুলকুচি করতে হবে। গোলাপ জল দিয়ে গার্গল করা যেতে পারে।

# প্রতি রাতে ১ বার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে। মেনথল গাম ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে খাওয়া যেতে পারে। নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করা। মুখ ও দাঁতের অসম্পূর্ণ চিকিৎসা সম্পন্ন করে নেয়া, যাতে খাবার না জমতে পারে।

# কোভিড জনিত কারণে মাস্ক পরলে, এজন্য মুখ দিয়ে সবাইকে শ্বাস নেয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তাই সিডিসি গাইডলাইন অনুযায়ী, রোজাকালীন ৪ ঘণ্টা পরপর মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। পুনরায় ব্যবহারকৃত মাস্কগুলো ৪ ঘণ্টা পর প্লাস্টিকের ডাস্টবিনে রাখতে হবে পরে ধুয়ে পরতে হবে। রুমে একা থাকার সময় মাস্কবিহীন থাকতেহবে।

বর্জনীয়:

# পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ ইত্যাদি খাদ্যের মধ্যে যে কেমিক্যাল থাকে তাহা রক্তবাহিত হয়ে প্রথমে ফুসফুসে আক্রমণ করে পরে তা প্রশ্বাসের মাধ্যমে বেরিয়ে এসে গন্ধের সৃষ্টি করে। ধূমপান পরিহার করতে হবে। খাবার সোডা ও কার্বোনেটেড ফলের রসে উচ্চমাত্রায় চিনি থাকে তাই এগুলো পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে। মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়ার অভ্যাস বর্জন করতে হবে।

আইআই/ডিএএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মুখের দূর্গন্ধ: করণীয় সম্পর্কে জানালেন ডা: সৈয়দা ফারজানা আফরিন

Update Time : ০৯:০৪:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩

মুখের দূর্গন্ধের জন্য কথা বলতে ভয় পান ! করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন-ডা: সৈয়দা ফারজানা আফরিন, বিডিএস(ঢাকা), পিজিটি (ডেন্টিস্ট্রি), শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। চীফ কনসালটেন্ট, আফরিন ডেন্টাল কেয়ার, বাড়ি নং-৩৮, রোড-৫, ব্লক-বি, বনশ্রী, রামপুরা সিরিয়াল- 01716810551,02224405586

সৈয়দা আইরিন আফরিন জেসি, সারাদেশ প্রতিবেদক:

কিভাবে মুখের অন্দরে খেয়াল রাখবেন?

# ভালো করে দিনে দুইবার ব্রাশ করতে হবে। ভালো পেস্ট ব্যবহার করতে হবে। ডেন্টাল ফ্লক্স ব্যবহার করতে হবে। জিভ ভালোকরে পরিষ্কার করতে হবে। ভালোকরে কুলকুচি করতে হবে। ৩ থেকে ৬ মাস পরপর মাউথওয়াশ ব্যবহার করু।

দাতেঁর যে কোনো সমস্যা অনুভূত হলেই চিকিৎসকের (ডেন্টাল সার্জন) শরণাপন্ন হোন।

ডা: আফরিন বলেন, মুখের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল ও যত্নশীল না হলেই দূর্গন্ধ (Bad Breath) সূত্রপাত হয়। তাছাড়াও আরো সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। মূ্খের দূর্গন্ধের জন্য নানা বিব্রতকর পরিস্থিতির মূখে পড়তে হয়।

মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়, কী করবেন?

> মুখে বাজে গন্ধ অনেকেরই হয়ে থাকে। এমন সমস্যায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বন্ধু-সঙ্গীরা মুখ ফিরিয়ে নেয় অনেক সময়। এমন জটিল সমস্যার সহজ সমাধান আছে।

মুখে দুর্গন্ধ কেন হয় :

১. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন
২. শারীরিক কিছু রোগ এবং মুখ ও দন্ত রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা
৩. সঠিক পদ্ধতিতে দন্ত পরিচর্যা।
৪. দীর্ঘসময় ধরে না খেয়ে থাকা।
৫. মুখের থুথু কমে যাওয়া- থুথু মুখের ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন বন্ধ করে কিন্তু রমজানে থুথুর পরিমাণ কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়াগুলোর দ্রুত প্রজনন হয়ে থাকে, যা দুর্গন্ধের কারণ হয়।
৬. যেসব খাবার মুখের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে, তা বেশি খাওয়া।
৭.কম পানি পান করা ৮.যেসব খাবার মুখের দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে, সেহরি বা ইফতারের সময় সেগুলো খাওয়া।
৯. নিয়মিত নিয়মমতো মুখ ও দাঁতের পরিচর্যা না করা।
১০. কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা থাকা যেমন- নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস, পেটের পীড়া, লিভারের সমস্যা, টনসিলজনিত সমস্যা ইত্যাদি।
১১. মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাসগত সমস্যা।
১২. দীর্ঘ সময় কিছু না খাবারের কারণে ও জিহ্বা পরিষ্কার না করার কারণে জিহ্বার উপর সালফারের প্রলেপ পড়ে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।

আরো যা করতে হবে :

মুখের এ দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে আমরা যেসব ব্যবস্থা নেব- দৈনিক কম করে হলেও ৩ থেকে ৪ লিটার গ্লাস পানি খেতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি, দইজাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত। লেবু, জাম্বুরা, কমলা, কামরাংগা, মাল্টা ও আনারসের শরবত পান করা। গাজর, শসা, টমেটো, আমড়া ও আমলকি ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখা।

# খাবারের পর ৩০-৬০ মিনিট আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, ব্রাশ করার জন্য যেন প্রাকৃতিক উপায়ে থুথুর মাধ্যমে খাদ্য পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে ও মুখের নরমাল PH বহাল থাকে। খাবারের পরপরই মুখের PH এসিডিক থাকে, খাবার পর থুথু প্রথম মুখের PH নরমাল করে। তাই খাবারের পরপরই দাঁত ব্রাশ করার ফলে এনামেলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে এসিডিক PH -এ ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন হার বেশি।

# অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ যেমন- ০.২ শতাংশ ক্লোরহেক্সিডিন অথবা ০.৫ শতাংশ পভিডোন আয়োডিন প্রতিদিন ৩ বার, ২ চামচ ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রতিবার কুলকুচি করতে হবে। গোলাপ জল দিয়ে গার্গল করা যেতে পারে।

# প্রতি রাতে ১ বার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে। মেনথল গাম ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে খাওয়া যেতে পারে। নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করা। মুখ ও দাঁতের অসম্পূর্ণ চিকিৎসা সম্পন্ন করে নেয়া, যাতে খাবার না জমতে পারে।

# কোভিড জনিত কারণে মাস্ক পরলে, এজন্য মুখ দিয়ে সবাইকে শ্বাস নেয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তাই সিডিসি গাইডলাইন অনুযায়ী, রোজাকালীন ৪ ঘণ্টা পরপর মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। পুনরায় ব্যবহারকৃত মাস্কগুলো ৪ ঘণ্টা পর প্লাস্টিকের ডাস্টবিনে রাখতে হবে পরে ধুয়ে পরতে হবে। রুমে একা থাকার সময় মাস্কবিহীন থাকতেহবে।

বর্জনীয়:

# পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ ইত্যাদি খাদ্যের মধ্যে যে কেমিক্যাল থাকে তাহা রক্তবাহিত হয়ে প্রথমে ফুসফুসে আক্রমণ করে পরে তা প্রশ্বাসের মাধ্যমে বেরিয়ে এসে গন্ধের সৃষ্টি করে। ধূমপান পরিহার করতে হবে। খাবার সোডা ও কার্বোনেটেড ফলের রসে উচ্চমাত্রায় চিনি থাকে তাই এগুলো পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে। মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়ার অভ্যাস বর্জন করতে হবে।

আইআই/ডিএএস//