মু: কাইয়ুম, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি:
হাজতিদের ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে আনা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী সমুন্নতে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশের আইজি, কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং শরীয়তপুরের পালং থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি দায়ের করেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক, জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাতকড়া আর ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়লেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন তিনি।
১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীয়তপুরে হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন সেলিম রেজা নামে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি খোলা হয়নি।
গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের ছিলেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এই দুটি ঘটনা সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ পরিবর্তন দরকার। এ কারণে জনস্বার্থে রিটটি দাখিল করি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।
রুলে প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ ও জেল কোডের স্বেচ্ছাচারী এবং অযৌক্তিক ব্যবহার করে সাধারণ কয়েদিদের ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাযায় গাজীপুর ও শরীয়তপুরের দুই ব্যক্তিকে অমানবিকভাবে ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরানোয় কেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
মা ও স্বজনদের জানাজায় বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মী-রাজবন্দীদের প্যারোলে মুক্তির পর ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরিয়ে জানাজায় অংশ নেয়ার ঘটনায় বিভিন্ন মহল প্রতিবাদ ও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে।
এমকে/ডিএ//
Leave a Reply