সারাদেশ ডেস্ক:
নেত্রকোণার পূর্বধলায় ১৫০০ টাকায় বাবাকে খুনের চুক্তি করে হয় বলে জবানবন্দিতে ঘটনার বিবরণ দিয়েছে ছেলে বিপ্লব।
১৫০০ টাকায় বাবাকে খুনের চুক্তি করে ছেলে। ঘটনার আগের দিন বন্ধুদের প্রথমে ১ হাজার এবং পরে আরও ৫০০ টাকা দেয় ছেলে বিপ্লব। যা দিয়ে তার বন্ধুরা পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজার থেকে দুটি চাইনিজ কুড়াল কেনে। আবদুল আজিজকে ওই কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতের ছেলে বিপ্লবসহ তিনজনকে আদালতে হাজির করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিপ্লব ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনার বিবরণ দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পূর্বধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে ব্যবসায়ী আবদুল আজিজকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বন্ধুদের সহযোগিতায় বাবাকে খুনের অভিযোগে ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ছেলে বিপ্লবকে (১৯) গ্রেফতার করে পুলিশ।
নেত্রকোণা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজারে ‘আবদুল আজিজ ট্রেডার্স’ নামে পোলট্রি ফিডের দোকানে প্রতিদিন ছেলে বিপ্লবকে নিয়ে আবদুল অজিজ দোকানে যান এবং রাত আনুমানিক ৯টার সময় ছেলেসহ বাড়িতে ফিরতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিনও সারা দিন মালামাল বিক্রি শেষে রাত ৯টার সময় ছেলেসহ বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে এসে আবদুল আজিজ বাথরুমে যান এবং বাথরুম থেকে বের হয়ে ছেলে বিপ্লবকে আর খুঁজে পাননি।
এরপর বিপ্লবের মোবাইলে কল দিলে তিনি জানতে পারেন শ্যামগঞ্জ বাজারের কাছে কুতুবপুর শ্মশানঘাট নামক স্থানে বিপ্লব আছে। এ কথা শোনে আবদুল আজিজ সেখানে যান। তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই পরিকল্পনা মতো ছেলে বিপ্লব এবং তার বন্ধুরা মিলে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। কিছুক্ষণ পর বিপ্লব তার ভগ্নিপতি সোহেল মিয়াকে ফোন করে জানায়, কে বা কারা তার বাবাকে কুপিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেছে।
এরপর বিপ্লবসহ পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আবদুল আজিজের মাথা ও কানের পাশে কোপানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর চিকিৎসক আবদুল আজিজকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে দাফন শেষে আজিজের স্ত্রী বকুল বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পূর্বধলা থানায় অভিযোগ দেন।
এ ব্যাপারে পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদের দিক-নির্দেশনায় মামলাটির তদন্তে পুলিশ মৃতের ছেলে বিপ্লবের আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করে। যা সন্দেহের সৃষ্টি করে। পরে অধিকতর তদন্ত করে জানা যায় বিপ্লব তার পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান। নিয়মিত মাদক গ্রহণ করে। তাই পিতা তাকে তিরস্কার ও গালমন্দ করতেন এবং সব সময় দোকানে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতেন। কিন্তু এই বন্দিজীবন তার ভালো লাগত না। তাই সে খুনের পরিকল্পনা করে।
Leave a Reply