Dhaka ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

মরা নদীতে জোয়ার আসে না: কাদের

  • Update Time : ০৪:১১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ০ Time View

সারাদেশ ডেস্ক :

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আন্দোলন-আন্দোলন করতে করতে গলা শুকিয়ে যায়। মরা নদীতে জোয়ার আসে না, জোয়ার কি আসবে কখনও? নেতাকর্মীরা ছাড়া আপনাদের সঙ্গে দেশের মানুষ যোগ দেয়নি। ফয়সালার কথা কোন মুখে বলেন? আমি বলেছি- হবে হবে, ফয়সালা হবে। ফয়সালা হবে আগামী নির্বাচনে, ফাইনাল খেলা। তখন দেখা যাবে, কে হারে কে জেতে।’

শনিবার ৩ সেপ্টেম্বর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে (কেআইবি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘টেমস নদীর ওপার থেকে দণ্ডিত অর্থপাচারকারী অপরাধী হাঁক-ডাক দিচ্ছে। সেই ডাকে টেমস নদীতে ঢেউ উঠেছে কিনা জানি না, তবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় ঢেউ নেই। বিএনপির শুকনো নদীতে জোয়ার আর আসবে না। চিৎকার যত পারেন করেন, ফয়সালা হবে নির্বাচনে। হুমকি দিয়ে লাশ ফেলতে চান? লাশ ফেলার দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হচ্ছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাদের হাতে অনেক রক্তের দাগ। ২১ হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী, আহসানুল্লাহ মাস্টার, এ এম এস কিবরিয়া; এদের রক্ত আপনাদের হাতে। আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি। হত্যার ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। হত্যাচেষ্টা হয়েছে আমাদের নেত্রীর ওপর, কিন্তু খালেদা জিয়াকে কেউ মারতে যায়নি।’

ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আইনের মধ্য দিয়ে অব্যাহতি দিলো, মির্জা ফখরুল আপনি যতই কথা বলেন, এই প্রশ্নের জবাব আজও দেননি। বারে বারে প্রশ্ন করতে চাই- কেন খুনিদের পুরস্কৃত করা হলো, নিরাপদে বিদেশ পাঠানো হলো, তাদের চাকরি দিলো আমাদেরই দূতাবাসে। আজকে এ প্রশ্নের জবাব তারা দেবে না। কারণ তারা সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়।’

এসময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে লাশ এনে চন্দ্রিমাতে জানাজা পড়লেন, কে লাশ দেখেছে? একটা ছবি দেখাতে পারবেন? একটা ছবি আপনার কাছে চাই, মৃত লাশের একটা ছবি দেখান।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার পতাকা পতপত করে ওড়ে বঙ্গবন্ধু তোমার নামে, আমি আন্দোলনে উজ্জীবিত হই, আমার জাতীয় সঙ্গীত- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি… এটিও পেয়েছি বঙ্গবন্ধু তোমার কারণে। আজ তুমি বাংলার মাটিতে আমাদের মাঝে নেই। পলাশী ষড়যন্ত্রে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল মীরজাফর আলী খান, সেনাপতি রায়দুর্লভ… ক্লাইভের সৈন্য সাড়ে ৩ হাজার আর নবাবের ৪৫ হাজার। সেনাপতি, প্রধান সেনাপতি বিশ্বাসঘাতকতা করলো, সৈন্যরা দুপুরের পর অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে রইলো, যুদ্ধ শেষ। বিশাল পতন ঘটলো বাংলার নবাবের। সেই ষড়যন্ত্র পচাত্তরেও হলো। সেই ষড়যন্ত্রে মীরজাফরের বেশে খন্দকার মোশতাক, সেই ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমান। সত্য মোছা যাবে না। সত্যের বন্যা অপ্রতিরোধ্য। এ বিশ্বাসঘাতককে ইতিহাস ক্ষমতা করবে না।

তিনি বলেন, ‘একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দিল। মাসুম শেখ রাসেল, মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল তাদের নবপরিণিতা বধু। সেদিনের সকালের সূর্যের রঙের সঙ্গে মিশে গেলো ওদের হাতের মেহেদি।’

ইতিহাস অনেক সত্যের জবাব দেবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ব্রিটিশ লেখক অ্যান্থনির বিবরণে পাওয়া যায়, তখন কারা কী করেছিল। কোথায় কোথায় বৈঠক করেছিল। সিআইএর ঢাকা স্টেশনের চিফ, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কী ভূমিকা ছিল; এসব নিয়ে অনেক কথা আছে।’

এসময় তরুণদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগ করবেন কোন আদর্শে? সেই আদর্শের বিবর্তনের ইতিহাস জানতে হবে। তা না হলে অসম্পূর্ণ হয়ে থাকবেন। কতজনকে বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে কী বলেছিলেন সম্পূর্ণ বিষয়টি জাতির জানা। তিনি কিছু বললেন, কিছু বলেননি। অনেক নির্মম সত্য সবসময় বলা যায় না। সে সত্যও বেরিয়ে আসবে। শুধু দেখলাম নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল ছযুটে এসেছেন বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে, আর কেউ আসেনি। সোবহানবাগ মসজিদের কাছে তাকে ঘাতকেরা হত্যা করে। এজন্য রাজনৈতিক নেতাও সেদিন ওই সঙ্কটের সময়ে সাড়া দেননি। ৩২ নম্বরে রক্তপাতের জবাব দিতে আসেননি। এটা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বে ব্যর্থতা।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মরা নদীতে জোয়ার আসে না: কাদের

Update Time : ০৪:১১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

সারাদেশ ডেস্ক :

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আন্দোলন-আন্দোলন করতে করতে গলা শুকিয়ে যায়। মরা নদীতে জোয়ার আসে না, জোয়ার কি আসবে কখনও? নেতাকর্মীরা ছাড়া আপনাদের সঙ্গে দেশের মানুষ যোগ দেয়নি। ফয়সালার কথা কোন মুখে বলেন? আমি বলেছি- হবে হবে, ফয়সালা হবে। ফয়সালা হবে আগামী নির্বাচনে, ফাইনাল খেলা। তখন দেখা যাবে, কে হারে কে জেতে।’

শনিবার ৩ সেপ্টেম্বর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে (কেআইবি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘টেমস নদীর ওপার থেকে দণ্ডিত অর্থপাচারকারী অপরাধী হাঁক-ডাক দিচ্ছে। সেই ডাকে টেমস নদীতে ঢেউ উঠেছে কিনা জানি না, তবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় ঢেউ নেই। বিএনপির শুকনো নদীতে জোয়ার আর আসবে না। চিৎকার যত পারেন করেন, ফয়সালা হবে নির্বাচনে। হুমকি দিয়ে লাশ ফেলতে চান? লাশ ফেলার দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হচ্ছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাদের হাতে অনেক রক্তের দাগ। ২১ হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী, আহসানুল্লাহ মাস্টার, এ এম এস কিবরিয়া; এদের রক্ত আপনাদের হাতে। আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি। হত্যার ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। হত্যাচেষ্টা হয়েছে আমাদের নেত্রীর ওপর, কিন্তু খালেদা জিয়াকে কেউ মারতে যায়নি।’

ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আইনের মধ্য দিয়ে অব্যাহতি দিলো, মির্জা ফখরুল আপনি যতই কথা বলেন, এই প্রশ্নের জবাব আজও দেননি। বারে বারে প্রশ্ন করতে চাই- কেন খুনিদের পুরস্কৃত করা হলো, নিরাপদে বিদেশ পাঠানো হলো, তাদের চাকরি দিলো আমাদেরই দূতাবাসে। আজকে এ প্রশ্নের জবাব তারা দেবে না। কারণ তারা সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়।’

এসময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে লাশ এনে চন্দ্রিমাতে জানাজা পড়লেন, কে লাশ দেখেছে? একটা ছবি দেখাতে পারবেন? একটা ছবি আপনার কাছে চাই, মৃত লাশের একটা ছবি দেখান।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার পতাকা পতপত করে ওড়ে বঙ্গবন্ধু তোমার নামে, আমি আন্দোলনে উজ্জীবিত হই, আমার জাতীয় সঙ্গীত- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি… এটিও পেয়েছি বঙ্গবন্ধু তোমার কারণে। আজ তুমি বাংলার মাটিতে আমাদের মাঝে নেই। পলাশী ষড়যন্ত্রে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল মীরজাফর আলী খান, সেনাপতি রায়দুর্লভ… ক্লাইভের সৈন্য সাড়ে ৩ হাজার আর নবাবের ৪৫ হাজার। সেনাপতি, প্রধান সেনাপতি বিশ্বাসঘাতকতা করলো, সৈন্যরা দুপুরের পর অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে রইলো, যুদ্ধ শেষ। বিশাল পতন ঘটলো বাংলার নবাবের। সেই ষড়যন্ত্র পচাত্তরেও হলো। সেই ষড়যন্ত্রে মীরজাফরের বেশে খন্দকার মোশতাক, সেই ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমান। সত্য মোছা যাবে না। সত্যের বন্যা অপ্রতিরোধ্য। এ বিশ্বাসঘাতককে ইতিহাস ক্ষমতা করবে না।

তিনি বলেন, ‘একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দিল। মাসুম শেখ রাসেল, মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল তাদের নবপরিণিতা বধু। সেদিনের সকালের সূর্যের রঙের সঙ্গে মিশে গেলো ওদের হাতের মেহেদি।’

ইতিহাস অনেক সত্যের জবাব দেবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ব্রিটিশ লেখক অ্যান্থনির বিবরণে পাওয়া যায়, তখন কারা কী করেছিল। কোথায় কোথায় বৈঠক করেছিল। সিআইএর ঢাকা স্টেশনের চিফ, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কী ভূমিকা ছিল; এসব নিয়ে অনেক কথা আছে।’

এসময় তরুণদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগ করবেন কোন আদর্শে? সেই আদর্শের বিবর্তনের ইতিহাস জানতে হবে। তা না হলে অসম্পূর্ণ হয়ে থাকবেন। কতজনকে বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে কী বলেছিলেন সম্পূর্ণ বিষয়টি জাতির জানা। তিনি কিছু বললেন, কিছু বলেননি। অনেক নির্মম সত্য সবসময় বলা যায় না। সে সত্যও বেরিয়ে আসবে। শুধু দেখলাম নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল ছযুটে এসেছেন বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে, আর কেউ আসেনি। সোবহানবাগ মসজিদের কাছে তাকে ঘাতকেরা হত্যা করে। এজন্য রাজনৈতিক নেতাও সেদিন ওই সঙ্কটের সময়ে সাড়া দেননি। ৩২ নম্বরে রক্তপাতের জবাব দিতে আসেননি। এটা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বে ব্যর্থতা।’