গ্রিসে বাংলা সংস্কৃতির ধারক ‘দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক টিটু’
- Update Time : ০২:১৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২
- / ৩ Time View
দিদারুল আলম :
হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম রাষ্ট্র গ্রিস।
গ্রিসে নানা কাজে নিয়োজিত রয়েছে লক্ষাধীক বাংলাদেশী। গ্রিসের সাথে রয়েছে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক। সেখানে কর্মরত বাংলাদেশীরা বাঙালী কৃষ্টি সংস্কৃতি চর্চা ও বিশ্ব পরিসরে তুলে ধরছেন। বাঙালী সংস্কৃতি চর্চা ও নানা আয়োজনের জন্য সেখানে প্রতিষ্ঠা পায় ‘দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন’। সংগঠনটি দীর্ঘদিন গ্রিসে বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে অবদান রেখে চলেছে।
গ্রিসের একমাত্র বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহকও ‘দোয়েল সংস্কৃতিক সংগঠন’। ঐতিহ্যবাহি এ সংগঠনের নতুন কমিটি নির্বাচন করা হয়েছে। যার প্রধান বা আহ্বায়ক নির্বাচিত হয়েছেন সংগঠনটির দীর্ঘ যাত্রায় যিনি অকৃত্রিম অবদান রেখে চলেছেন সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংগঠক আবদুর রাজ্জাক টিটু (টিটু মৈশান)।
এই সংগঠনটি গ্রিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাঙালী এবং তাদের সন্তানদের জন্য বাংলা সংস্কৃতির ‘বাতিঘর’ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
প্রতি দুই বছর অন্তর তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে সংগঠনটিকে আরো এগিয়ে নিতে কমিটি নির্বাচন করা হয়। এই কমিটি বা পরিষদের নেতৃত্বেই গ্রিসে বিভিন্ন জায়গায় নানা আয়োজন ও অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী গান নৃত্যসহ বাঙালী সংস্কৃতিকে সেখানে তুলে ধরে হয়। সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশী ও বাঙালীরা তখন যেন স্বদেশকেই খুঁজে পান।
আব্দুর রাজ্জাক টিটু: টিটু একজন দক্ষ ও জনপ্রিয় সংগঠক। প্রবাসে আসার পূর্বে ছাত্রাবস্থায় তিনি একজন সৃজনশীল জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ছিলেন। দেশে জনপ্রিয় একটি ছাত্র সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউনিটের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন টিটু। তার জন্ম বাংলাদেশের সমৃদ্ধ জনপদ কুমিল্লার ময়নামতির শাহদৌলতপুর গ্রামের সম্ভান্ত্র মৈশান পরিবারে। টিটুর পিতা হাজী আলী আহাম্মদ মৈশান ও মাতা আছিয়া খাতুন স্বনামধন্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ এর ৯ জুলাই এক বৈরী পরিস্থিতিতে টিটুর মমতাময়ী মা আছিয়া খাতুনের গর্ভে টিটুর জন্ম। ছোটবেলা থেকেই টিটু শান্ত অমায়িক ও সংস্কৃতিমনা।
স্ত্রী নুরজাহান বেগম শিউলি এবং একমাত্র সন্তান নুসরাত জাহান স্নেহাকে নিয়ে দীর্ঘদিন গ্রিসে বসবাস করছেন টিটু। তার স্ত্রী শিউলিও গ্রিসে সংস্কৃতিমনা ও দক্ষ সংগঠক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। বাঙালি সংস্কৃতি চর্চায় কন্যা নুসরাত জাহান স্নেহাও গ্রিসে অবদান রেখে চলেছেন। স্নেহা গান নৃত্য আবৃত্তি ও উপস্থাপনায় পারদর্শী। সেখানে বাঙালী কমিউনিটিতে স্নেহা একজন জনপ্রিয় শিল্পী।
দোয়েল সাংস্কৃতি সংগঠনের ইতিহাস :
‘দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন’ ২০০৩ সালে গ্রিসে বসবাসরত কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশী সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে যাত্রা শুরু করে। সেই কয়েকজন প্রতিষ্ঠাতার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক টিটু অন্যতম।
টিটু এ সংগঠনের সাধারণ সদস্য থেকে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এর আগে এ সংগঠনের তিনবার সাধারণ সম্পাদক ও একবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক টিটু সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বৈরী পরিবেশের মধ্য দিয়ে দুই দশক পূর্বে সীমিত পরিসরে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। বহু বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বাংলাদেশী তরুণ প্রজন্মের সংস্কৃতির একমাত্র ‘বাতিঘর’ এখন এই ‘দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন’। যারা বিভিন্ন সময় মেধা, বুদ্ধি, শ্রম, অর্থের বিনিময় এই সংগঠনটিকে আজ এই পর্যন্ত এনেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানান টিটু।
টিটু আশা প্রকাশ করে বলেন, স্বজনদের দেশে রেখে পরিবার ও দেশকে সমৃদ্ধ করতে এক পৃথিবী কষ্ট নিয়ে প্রবাসে বাংলাদেশীরা কষ্ট করে চলেছেন। গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাঙালীদের তাদের স্বদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির আয়োজনে আনন্দ ও আবেগ-আশাকে উজ্জীবিত রাখতে ‘দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের’ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে বাঙালী সংস্কৃতিকে তুলে ধরার প্রয়াস চলবে।
ডিএএম/কেকে//