Dhaka ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

বায়ুদূষণে গড়ে ৭ বছর আয়ু হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা

  • Update Time : ০১:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২
  • / ১ Time View

সারাদেশ ডেস্ক: 

বায়ুদূষণের কারণে গড়ে ৭ বছর করে আয়ু হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। সম্প্রতি বৈশ্বিক বায়ুদূষণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (ইপিআইসি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ইপিআইসির গবেষকরা বলছেন, ইপিআইসি প্রবর্তিত এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স বা একিউএলআই নির্ণয়ে গবেষকরা বাতাসে পিএম২.৫ (ক্ষতিকর ভাসমান কণা যা ফুসফুসের ক্ষতি করে) এর মাত্রা হিসাব করতে স্যাটেলাইট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেন। এরই ভিত্তিতে বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শিকার দেশগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, বায়ুদূষণের এই সূচকের হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার পাঁচ দেশের চারটিই দক্ষিণ এশিয়ায়। বায়ুর মানের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী হচ্ছে ভারতের নয়াদিল্লি। ভারতের পরই রয়েছে বাংলাদেশ।

গবেষকদের মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী দূষণের মাত্রা কমানো গেলে পুরো বাংলাদেশের মানুষ ৫ দশমিক ৪ বছর বেশি বাঁচতেন। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ না করার কারণে ঢাকায় বসবাসকারীদের গড় আয়ু ৭ দশমিক ৭ বছর কমেছে। বায়ুদূষণ না থাকলে গড়ে ঢাকাবাসী প্রায় ৮ বছর বেশি বাঁচতেন।

এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, বায়ুদূষণের যে প্রভাব এটি নিঃসন্দেহে একটি মারাত্মক পরিণতি। প্রাইভেটকারকেন্দ্রিক যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, সেখান থেকে কিন্তু দূষণ বেশি হচ্ছে। ইটভাটা মারাত্মক দূষণ করছে, অধিকাংশ ভাটার প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো উন্নয়ন করা হয়নি। অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক বর্জ্য সম্পদে রূপান্তরের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে। এগুলো খুব দূষণ করছে। উৎস বন্ধ করতে না পারলে আমরা কিন্তু মারাত্মক পরিণতির দিকে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, বায়ুদূষণের কারণে শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে। এছাড়া বয়স্ক যারা আছেন, গর্ভবতী মায়েরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন। শিশুরা পৃথকভাবে যে ভালো থাকতে পারবে সেটি তো নয়। বায়ুদূষণ হলে সবাই প্রভাবিত হবে। তবে মাস্ক পরলে কিছুটা রক্ষা পেতে পারে, কিন্তু কতক্ষণ তাদের মাস্ক পরিয়ে রাখা সম্ভব। সেই জায়গাগুলো থেকে আমাদের ভাবতে হবে বায়ুদূষণের উৎস যদি বন্ধ করতে না পারি তাহলে আমাদের বাচ্চারাও ভালো থাকবে না, আমরাও ভালো থাকব না।

ঢাকায় বায়ু ও শব্দমানের পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম’র করা এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার বাতাসে অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম২.৫ এর উপস্থিতি আদর্শ মানের (১৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। পিএম১০ বস্তুকণার উপস্থিতি আদর্শ মানের চেয়ে দুইগুণ বেশি। শাহবাগ এলাকায় বাতাসে পিএম২.৫ এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৮৫ মাইক্রোগ্রাম। পিএম২.৫ এর উপস্থিতি সবচেয়ে কম জাতীয় সংসদ এলাকায়, যার পরিমাণ ৭০ মাইক্রোগ্রাম।

জরিপে আরো দেখা গেছে, ঢাকার ১০টি স্থানের মধ্যে গুলশান-২ এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মান পাওয়া যায়। সেখানে শব্দের মান ছিল ৯৫ দশমিক ৪০ ডেসিবেল, যা আদর্শ মান (৫৫ ডেসিবেল) থেকে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। গুলশান-২ এলাকায় ১৩২ ডেসিবেল পর্যন্ত উচ্চশব্দের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এছাড়া তেজগাঁও এলাকায় ৮৯ ডেসিবেল, আবদুল্লাহপুর এলাকায় ৯৫ ডেসিবেল ও জাতীয় সংসদ এলাকায় ৩১ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ পাওয়া গেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বায়ুদূষণে গড়ে ৭ বছর আয়ু হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা

Update Time : ০১:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২

সারাদেশ ডেস্ক: 

বায়ুদূষণের কারণে গড়ে ৭ বছর করে আয়ু হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। সম্প্রতি বৈশ্বিক বায়ুদূষণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (ইপিআইসি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ইপিআইসির গবেষকরা বলছেন, ইপিআইসি প্রবর্তিত এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স বা একিউএলআই নির্ণয়ে গবেষকরা বাতাসে পিএম২.৫ (ক্ষতিকর ভাসমান কণা যা ফুসফুসের ক্ষতি করে) এর মাত্রা হিসাব করতে স্যাটেলাইট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেন। এরই ভিত্তিতে বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শিকার দেশগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, বায়ুদূষণের এই সূচকের হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার পাঁচ দেশের চারটিই দক্ষিণ এশিয়ায়। বায়ুর মানের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী হচ্ছে ভারতের নয়াদিল্লি। ভারতের পরই রয়েছে বাংলাদেশ।

গবেষকদের মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী দূষণের মাত্রা কমানো গেলে পুরো বাংলাদেশের মানুষ ৫ দশমিক ৪ বছর বেশি বাঁচতেন। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ না করার কারণে ঢাকায় বসবাসকারীদের গড় আয়ু ৭ দশমিক ৭ বছর কমেছে। বায়ুদূষণ না থাকলে গড়ে ঢাকাবাসী প্রায় ৮ বছর বেশি বাঁচতেন।

এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, বায়ুদূষণের যে প্রভাব এটি নিঃসন্দেহে একটি মারাত্মক পরিণতি। প্রাইভেটকারকেন্দ্রিক যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, সেখান থেকে কিন্তু দূষণ বেশি হচ্ছে। ইটভাটা মারাত্মক দূষণ করছে, অধিকাংশ ভাটার প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো উন্নয়ন করা হয়নি। অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক বর্জ্য সম্পদে রূপান্তরের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে। এগুলো খুব দূষণ করছে। উৎস বন্ধ করতে না পারলে আমরা কিন্তু মারাত্মক পরিণতির দিকে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, বায়ুদূষণের কারণে শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে। এছাড়া বয়স্ক যারা আছেন, গর্ভবতী মায়েরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন। শিশুরা পৃথকভাবে যে ভালো থাকতে পারবে সেটি তো নয়। বায়ুদূষণ হলে সবাই প্রভাবিত হবে। তবে মাস্ক পরলে কিছুটা রক্ষা পেতে পারে, কিন্তু কতক্ষণ তাদের মাস্ক পরিয়ে রাখা সম্ভব। সেই জায়গাগুলো থেকে আমাদের ভাবতে হবে বায়ুদূষণের উৎস যদি বন্ধ করতে না পারি তাহলে আমাদের বাচ্চারাও ভালো থাকবে না, আমরাও ভালো থাকব না।

ঢাকায় বায়ু ও শব্দমানের পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম’র করা এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার বাতাসে অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম২.৫ এর উপস্থিতি আদর্শ মানের (১৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। পিএম১০ বস্তুকণার উপস্থিতি আদর্শ মানের চেয়ে দুইগুণ বেশি। শাহবাগ এলাকায় বাতাসে পিএম২.৫ এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৮৫ মাইক্রোগ্রাম। পিএম২.৫ এর উপস্থিতি সবচেয়ে কম জাতীয় সংসদ এলাকায়, যার পরিমাণ ৭০ মাইক্রোগ্রাম।

জরিপে আরো দেখা গেছে, ঢাকার ১০টি স্থানের মধ্যে গুলশান-২ এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মান পাওয়া যায়। সেখানে শব্দের মান ছিল ৯৫ দশমিক ৪০ ডেসিবেল, যা আদর্শ মান (৫৫ ডেসিবেল) থেকে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। গুলশান-২ এলাকায় ১৩২ ডেসিবেল পর্যন্ত উচ্চশব্দের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এছাড়া তেজগাঁও এলাকায় ৮৯ ডেসিবেল, আবদুল্লাহপুর এলাকায় ৯৫ ডেসিবেল ও জাতীয় সংসদ এলাকায় ৩১ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ পাওয়া গেছে।