Dhaka ০৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল

জুলহাজ–তনয় হত্যা মামলায় ছয় জঙ্গির ফাঁসির রায়

  • Update Time : ০২:৩৩:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অগাস্ট ২০২১
  • / ২ Time View

আদালত প্রতিবেদক :
পাঁচ বছর আগে রাজধানীর কলাবাগানে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় ছয় জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসির রায়) দিয়েছেন আদালত।

রায়ে দুজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ৩১ আগস্ট সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ছয় আসামি হলেন চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান, মো. শেখ আবদুল্লাহ জোবায়ের ও আসাদুল্লাহ। আর খালাস পাওয়া দুজন হলেন সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মো. জুনাইদ আহমদ। তাঁরা দুজনই পলাতক। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে পলাতক চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন।

খুন হওয়া জুলহাজ সমকামীদের অধিকারবিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাট্যকর্মী মাহবুব পিটিএ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বিকেলে কলাবাগানে কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী সেজে জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। নৃশংস এই জোড়া খুনের ঘটনা তিন বছর ধরে তদন্তের পর ২০১৯ সালের ১২ মে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়ে জানায়, এ ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আট সদস্য।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে চার জঙ্গি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দিতে উঠে আসে, জোড়া খুনের কারণ কী, কারা কীভাবে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন এবং কারা খুনে সরাসরি অংশ নেন।

কারা অভিযোগপত্রে বলা হয়, এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হলেন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। আদালত পুলিশের অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ নভেম্বর বিচার শুরু করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জোড়া খুনের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ২৪ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম সারোয়ার খান। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন আইনজীবী এ বি এম খায়রুল ইসলাম লিটন ও নজরুল ইসলাম।

জুলহাস-তনয় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা ফাঁসির আসামি চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া। তবে জিয়ার পরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন। মোজাম্মেলও ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। কলাবাগানে জুলহাজের বাসা রেকি করেন আসেন আরাফাত রহমান। তিনিও অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি।

খুনের পরিকল্পনায় জিয়া জড়িত, তা আদালতে সবিস্তার বলেছিলেন আসামি মোজাম্মেল হোসেন। মোজাম্মেলের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে মেজর জিয়া মোজাম্মেলকে জানিয়েছিলেন, সমকামীরা এ দেশে তাঁদের সংগঠনকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। পয়লা বৈশাখের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে তাঁরা মিছিল বের করতে পারেন। তাঁদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরে জায়েদ ওরফে জুবায়ের নিজেকে সমকামী পরিচয় দিয়ে ‘জায়েদ বিন ইরফান’ নামে একটি ফেসবুক আইডি খোলেন। নিয়মিত সমকামীদের সঙ্গে চ্যাট করে জানতে পারেন, পয়লা বৈশাখে সমকামীরা মিছিল বের করবেন। এই সংগঠনের দায়িত্বে আছেন জুলহাজ মান্নান। জুবায়েরই জুলহাজ মান্নান সম্পর্ক সব তথ্য জিয়াকে জানান। জিয়াই তখন জুলহাজকে কীভাবে খুন করতে হবে, তার নীলনকশা তৈরি করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রধান সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করা মোজাম্মেলকে জিয়া জানিয়ে দেন, কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী সেজে জুলহাজের বাসায় লোক পাঠাতে।

জিয়ার নির্দেশনা পেয়ে মোজাম্মেল নিজের কম্পিউটারে কুরিয়ার সার্ভিসের তিনটি ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করেন। জুলহাজ ও তনয়কে খুন করার দুই দিন আগে জিয়া অন্যদের নির্দেশনা দেন, জুলহাজকে তাঁর বাসায় ফেলে খুন করার। মোট পাঁচ জঙ্গি সেদিন জুলহাজ মান্নানের বাসায় গিয়ে জুলহাজ ও তাঁর বন্ধু তনয়কে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

কলাবাগানে একটি ভবনের দোতলায় বসবাস করতেন জুলহাজ মান্নান। বাসার নিচতলায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী ছিল। ঘটনার দিনও বাসার নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্বে ছিলেন। তবে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকা আসামি মোজাম্মেল, শেখ আবদুল্লাহ ও আকরাম ঘটনার দিন জুলহাজের বাসার সামনে অবস্থান নেন। সেদিন বিকেল পাঁচটার সময় জুলহাজ বাসায় ফেরেন। আর এর ১৫ মিনিট পর জুলহাজের বাসায় ঢোকেন তনয়।

আগে থেকে বাসার কাছে অবস্থান নিয়েছিল হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ জঙ্গি। সেখানে থাকা জঙ্গিনেতা আকরাম পাঁচজনকে নির্দেশনা দেন, জুলহাজ ও তনয়কে খুন করতে হবে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আসামি আকিল, আফনান ও কামরুল জুলহাজের বাসার গেটের সামনে যান। তাঁরা নিজেদের কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা পরিচয় দেন। ওই তিনজন পরে জুলহাজের বাসার সামনে গিয়ে কলিং বেলে চাপ দেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে জুলহাজ ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করেন। আর নিচতলার গেটের কাছে ছিলেন অপর দুই সহযোগী আসাদুল্লাহ ও হায়দার।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, জোড়া খুনে সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচ জঙ্গি সেদিন বাসার দুই নিরাপত্তারক্ষীকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। খুন করার পর বাসার সামনে গেলে জঙ্গিদের ধাওয়া করেন স্থানীয় মানুষ। আকিল ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আর পুলিশের এক কর্মকর্তা জঙ্গি হায়দারকে জাপটে ধরেন। তখন আকিল পুলিশকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।

এসকে/এমএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জুলহাজ–তনয় হত্যা মামলায় ছয় জঙ্গির ফাঁসির রায়

Update Time : ০২:৩৩:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অগাস্ট ২০২১

আদালত প্রতিবেদক :
পাঁচ বছর আগে রাজধানীর কলাবাগানে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় ছয় জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসির রায়) দিয়েছেন আদালত।

রায়ে দুজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ৩১ আগস্ট সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ছয় আসামি হলেন চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান, মো. শেখ আবদুল্লাহ জোবায়ের ও আসাদুল্লাহ। আর খালাস পাওয়া দুজন হলেন সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মো. জুনাইদ আহমদ। তাঁরা দুজনই পলাতক। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে পলাতক চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন।

খুন হওয়া জুলহাজ সমকামীদের অধিকারবিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাট্যকর্মী মাহবুব পিটিএ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বিকেলে কলাবাগানে কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী সেজে জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। নৃশংস এই জোড়া খুনের ঘটনা তিন বছর ধরে তদন্তের পর ২০১৯ সালের ১২ মে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়ে জানায়, এ ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আট সদস্য।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে চার জঙ্গি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দিতে উঠে আসে, জোড়া খুনের কারণ কী, কারা কীভাবে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন এবং কারা খুনে সরাসরি অংশ নেন।

কারা অভিযোগপত্রে বলা হয়, এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হলেন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। আদালত পুলিশের অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ নভেম্বর বিচার শুরু করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জোড়া খুনের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ২৪ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম সারোয়ার খান। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন আইনজীবী এ বি এম খায়রুল ইসলাম লিটন ও নজরুল ইসলাম।

জুলহাস-তনয় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা ফাঁসির আসামি চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া। তবে জিয়ার পরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন। মোজাম্মেলও ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। কলাবাগানে জুলহাজের বাসা রেকি করেন আসেন আরাফাত রহমান। তিনিও অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি।

খুনের পরিকল্পনায় জিয়া জড়িত, তা আদালতে সবিস্তার বলেছিলেন আসামি মোজাম্মেল হোসেন। মোজাম্মেলের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে মেজর জিয়া মোজাম্মেলকে জানিয়েছিলেন, সমকামীরা এ দেশে তাঁদের সংগঠনকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। পয়লা বৈশাখের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে তাঁরা মিছিল বের করতে পারেন। তাঁদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরে জায়েদ ওরফে জুবায়ের নিজেকে সমকামী পরিচয় দিয়ে ‘জায়েদ বিন ইরফান’ নামে একটি ফেসবুক আইডি খোলেন। নিয়মিত সমকামীদের সঙ্গে চ্যাট করে জানতে পারেন, পয়লা বৈশাখে সমকামীরা মিছিল বের করবেন। এই সংগঠনের দায়িত্বে আছেন জুলহাজ মান্নান। জুবায়েরই জুলহাজ মান্নান সম্পর্ক সব তথ্য জিয়াকে জানান। জিয়াই তখন জুলহাজকে কীভাবে খুন করতে হবে, তার নীলনকশা তৈরি করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রধান সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করা মোজাম্মেলকে জিয়া জানিয়ে দেন, কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী সেজে জুলহাজের বাসায় লোক পাঠাতে।

জিয়ার নির্দেশনা পেয়ে মোজাম্মেল নিজের কম্পিউটারে কুরিয়ার সার্ভিসের তিনটি ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করেন। জুলহাজ ও তনয়কে খুন করার দুই দিন আগে জিয়া অন্যদের নির্দেশনা দেন, জুলহাজকে তাঁর বাসায় ফেলে খুন করার। মোট পাঁচ জঙ্গি সেদিন জুলহাজ মান্নানের বাসায় গিয়ে জুলহাজ ও তাঁর বন্ধু তনয়কে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

কলাবাগানে একটি ভবনের দোতলায় বসবাস করতেন জুলহাজ মান্নান। বাসার নিচতলায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী ছিল। ঘটনার দিনও বাসার নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্বে ছিলেন। তবে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকা আসামি মোজাম্মেল, শেখ আবদুল্লাহ ও আকরাম ঘটনার দিন জুলহাজের বাসার সামনে অবস্থান নেন। সেদিন বিকেল পাঁচটার সময় জুলহাজ বাসায় ফেরেন। আর এর ১৫ মিনিট পর জুলহাজের বাসায় ঢোকেন তনয়।

আগে থেকে বাসার কাছে অবস্থান নিয়েছিল হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ জঙ্গি। সেখানে থাকা জঙ্গিনেতা আকরাম পাঁচজনকে নির্দেশনা দেন, জুলহাজ ও তনয়কে খুন করতে হবে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আসামি আকিল, আফনান ও কামরুল জুলহাজের বাসার গেটের সামনে যান। তাঁরা নিজেদের কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা পরিচয় দেন। ওই তিনজন পরে জুলহাজের বাসার সামনে গিয়ে কলিং বেলে চাপ দেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে জুলহাজ ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করেন। আর নিচতলার গেটের কাছে ছিলেন অপর দুই সহযোগী আসাদুল্লাহ ও হায়দার।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, জোড়া খুনে সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচ জঙ্গি সেদিন বাসার দুই নিরাপত্তারক্ষীকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। খুন করার পর বাসার সামনে গেলে জঙ্গিদের ধাওয়া করেন স্থানীয় মানুষ। আকিল ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আর পুলিশের এক কর্মকর্তা জঙ্গি হায়দারকে জাপটে ধরেন। তখন আকিল পুলিশকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।

এসকে/এমএস//