Dhaka ০৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল

প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট : আইনজীবী আশরাফকে আপিল বিভাগে তলব

  • Update Time : ০৫:২৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১
  • / ৩ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের পদত্যাগ চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফকে তলব করেছেন আপিল বিভাগ।

এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজ আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেইসবুক পোস্টটি সর্বোচ্চ আদালতের নজরে আনেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী আদেশে বলেন, “আইনজীবী মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেইসবুক স্টেটমেন্ট মারাত্মক অবমাননাকর। তার এই স্টেটমেন্ট সরাসরি প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিমকোর্টকে আঘাত করেছে।”

এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গনমাধ্যমকে বলেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ ও উনার সমালোচনা করে গতকাল পোস্ট দিয়েছিলেন আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ। কয়েকজন আইনজীবী সেটা আমাকে দেখিয়েছেন। আজ আমি এটা আদালতের নজরে আনলে বিচারপতি মহোদয়রা খুব উষ্মা প্রকাশ করেছেন এই ধরনের কার্যকলাপে।

এটর্নি জেনারেল বলেন, পোষ্ট দেয়া ওই আইনজীবীকে তলব করা হয়েছে। আগামী ৮ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে, কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমানার অভিযোগ এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। তাকে আইন পেশা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আপাতত কোনো কোর্টে সে কোনো মামলা করতে পারবে না। আর বিটিআরসিকে আদালত বলেছেন, তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করতে।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনার সময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল, আরো আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে আদালতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

এটর্নি জেনারেল পোস্টটি পড়ে শোনান। এসময় প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ওই আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে তালিকাভূক্ত কীনা। এসময় আপিল বিভাগে যুক্ত থাকা অপরাপর আইনজীবীরা বলেন, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম একসময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভূক্ত।

এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনা। একা সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হতে পারে। এজন্য সিনিয়র সব বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, গতবছর আপনাদের অনুরোধে আদালত খোলা রাখা হলো। এতে কিছু আইনজীবী আমাকে অকথ্য ভাষায় কোট বন্ধ রাখতে বললেন। আবার এক গ্রুপ খোলা রাখার জন্য বলতে লাগলেন। বাধ্য হয়ে ভার্চুয়ালি আদালত খোলা হলো।
তিনি বলেন, বার (সমিতি) নেতৃবৃন্দ যখন যেটা বলেছেন, আমরা আইনজীবীদের সুবিধার জন্য সেটা করার চেস্টা করেছি। তিনি বলেন, সরকার চেয়েছিল কোর্ট বন্ধ রাখতে। কিন্তু আমরা বলেছি, কোর্ট বন্ধ বা খোলার বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। এখন মনে হচ্ছে, সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেই হতো।

এসময় বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেস্টা করছি। সেখানে এ ধরণের পোস্ট অপ্রত্যাশিত। গতবছর আইনজীবীদের চাপে কোর্ট খুলে দিলাম। আবার আপনাদের কথায় বন্ধ করা হলো। আমরা পুতুল হয়ে গেছি।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, করোনায় এটর্নি জেনারেল, বার সভাপতিসহ অনেক আইনজীবী মারা গেছেন। এরপরও কোর্ট বন্ধ রাখা হয়নি। শুধুমাত্র আপনাদের সুবিধার জন্য। যেভাবে বিচার ব্যবস্থা চালু রাখা দরকার সেভাবেই রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় এ ধরণের পোস্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনাস্থা। কারণ প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। এসময় বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানও মন্তব্য করেন। এরপর আদেশ পড়ে শোনানো হয়।

ডিএএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট : আইনজীবী আশরাফকে আপিল বিভাগে তলব

Update Time : ০৫:২৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের পদত্যাগ চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফকে তলব করেছেন আপিল বিভাগ।

এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজ আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেইসবুক পোস্টটি সর্বোচ্চ আদালতের নজরে আনেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী আদেশে বলেন, “আইনজীবী মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেইসবুক স্টেটমেন্ট মারাত্মক অবমাননাকর। তার এই স্টেটমেন্ট সরাসরি প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিমকোর্টকে আঘাত করেছে।”

এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গনমাধ্যমকে বলেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ ও উনার সমালোচনা করে গতকাল পোস্ট দিয়েছিলেন আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ। কয়েকজন আইনজীবী সেটা আমাকে দেখিয়েছেন। আজ আমি এটা আদালতের নজরে আনলে বিচারপতি মহোদয়রা খুব উষ্মা প্রকাশ করেছেন এই ধরনের কার্যকলাপে।

এটর্নি জেনারেল বলেন, পোষ্ট দেয়া ওই আইনজীবীকে তলব করা হয়েছে। আগামী ৮ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে, কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমানার অভিযোগ এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। তাকে আইন পেশা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আপাতত কোনো কোর্টে সে কোনো মামলা করতে পারবে না। আর বিটিআরসিকে আদালত বলেছেন, তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করতে।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনার সময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল, আরো আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে আদালতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

এটর্নি জেনারেল পোস্টটি পড়ে শোনান। এসময় প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ওই আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে তালিকাভূক্ত কীনা। এসময় আপিল বিভাগে যুক্ত থাকা অপরাপর আইনজীবীরা বলেন, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম একসময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভূক্ত।

এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনা। একা সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হতে পারে। এজন্য সিনিয়র সব বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, গতবছর আপনাদের অনুরোধে আদালত খোলা রাখা হলো। এতে কিছু আইনজীবী আমাকে অকথ্য ভাষায় কোট বন্ধ রাখতে বললেন। আবার এক গ্রুপ খোলা রাখার জন্য বলতে লাগলেন। বাধ্য হয়ে ভার্চুয়ালি আদালত খোলা হলো।
তিনি বলেন, বার (সমিতি) নেতৃবৃন্দ যখন যেটা বলেছেন, আমরা আইনজীবীদের সুবিধার জন্য সেটা করার চেস্টা করেছি। তিনি বলেন, সরকার চেয়েছিল কোর্ট বন্ধ রাখতে। কিন্তু আমরা বলেছি, কোর্ট বন্ধ বা খোলার বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। এখন মনে হচ্ছে, সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেই হতো।

এসময় বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেস্টা করছি। সেখানে এ ধরণের পোস্ট অপ্রত্যাশিত। গতবছর আইনজীবীদের চাপে কোর্ট খুলে দিলাম। আবার আপনাদের কথায় বন্ধ করা হলো। আমরা পুতুল হয়ে গেছি।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, করোনায় এটর্নি জেনারেল, বার সভাপতিসহ অনেক আইনজীবী মারা গেছেন। এরপরও কোর্ট বন্ধ রাখা হয়নি। শুধুমাত্র আপনাদের সুবিধার জন্য। যেভাবে বিচার ব্যবস্থা চালু রাখা দরকার সেভাবেই রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় এ ধরণের পোস্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনাস্থা। কারণ প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। এসময় বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানও মন্তব্য করেন। এরপর আদেশ পড়ে শোনানো হয়।

ডিএএম//