বাদীর পরিচয় নিশ্চিতে হাইকোর্টের পাঁচ নির্দেশনা
- Update Time : ০৩:১৪:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১
- / ১ Time View
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক :
ভুয়া পরোয়ানা, মামলায় হয়রানি বন্ধে থানা, আদালত বা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের সময় অভিযোগকারীর পরিচয় যথাযথভাবে নিশ্চিত হতে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
অস্তিত্বহীন বাদীর মামলা চ্যালেঞ্জ করে আনা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গত ১৪ জুন রুলসহ এসব নির্দেশনা দেয়।
পূর্ণাঙ্গ আদেশটি সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
হাই কোর্টের পাঁচ নির্দেশনা হচ্ছে-
১. অভিযোগ/এজাহারে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, ক্ষেত্রমতে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
২. এজাহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে সে ক্ষেত্রে এজাহারকারীকে শনাক্তকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
৩. বিশেষ বাস্তব পরিস্থিতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নম্বর লভ্য (অ্যাভেইলেবল) না হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা এজাহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্বীয় বিবেচনায় অন্যান্য যথাযথ পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।
৪. আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট না থাকলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অভিযোগকারীকে শনাক্ত করবেন।
৫. অভিযোগকারী প্রবাসী কিংবা বিদেশি নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট দেশের পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় অবগতি ও ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য এই আদেশের কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শক, সিআইডিকে প্রেরণে আদেশ দেয়া হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি অরবিন্দ কুমার রায় ও জেনারেল বিপুল বাগমার।
রিট আবেদনটি করেছিলেন ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, চুরি-ডাকাতি, মানবপাচার, এসিড নিক্ষেপসহ নানা অভিযোগের ৪৯টি মামলার আসামি রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চন।
মারামারির এক মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ অগাস্ট সূত্রাপুর থানা পুলিশ কাঞ্চনকে প্রথম গ্রেফতার করে। এরপর দুই বছর তিন মাস তিনি কারাগারে ছিলেন। এর মধ্যে ১৭টি মামলা হয়।
২০১৫ সালের ২১ মে জামিনে বেরিয়ে আসেন কাঞ্চন। পরে আরও বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তিনি জামিনে মুক্ত হন। গত বছর অক্টোবরে নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এক কারখানার মালিক পরিচয় দিয়ে তার বিরুদ্ধে ৪৯তম মামলাটি করা হয়। কিন্তু সেই মামলার বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ অবস্থায় ‘অস্তিত্বহীন’ বাদীর এসব মামলা চ্যালেঞ্জ করে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন ৫৫ বছর বয়সী কাঞ্চন। মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করতে তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে। গত ১৪ জুন এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়।
আবেদনকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারী মামলা দায়েরে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না-রুলে সংশ্লিষ্টদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়। ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এছাড়া আদেশে একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এসএম/ডিএএম//