Dhaka ০২:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল

আদালত খুলে দিন : খন্দকার মাহবুব

  • Update Time : ০৫:০৫:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১
  • / ২ Time View

বিশেষ প্রতিনিধি :
করোনায় দীর্ঘ দিন আদালত বন্ধ থাকায় ভয়াবহ মামলার জট তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে দ্রুত দেশের সব আদালত খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

শনিবার ২৯ মে বসুন্ধরায় তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

দেশের বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, সুরক্ষা মেনে দ্রুত সব আদালত খুলে না দিলে বর্তমানে যে অবস্থা আছে তা যদি চলতে থাকে তাহলে বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়বে, ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়বে। আর বিচারের প্রতি যদি মানুষের অনীহা আসে তাহলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিশন গঠনেরও দাবি করেন খন্দকার মাহবুব।

তিনি বলেন, করোনার পূর্বেই আমাদের বিচার বিভাগে মামলার সংখ্যা নিয়ে একটা সংকটপূর্ণ অবস্থায় ছিল। করোনার পরে দীর্ঘ দিন নিম্ন আদালত উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারনে সেই সংকট একটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে গণপরিবহণসহ সব কিছু খুলে দেয়া হয়েছে। অথচ বিচার বিভাগ এমন একটা অবস্থায় রয়েছে যে, মানুষ বিচার না পেয়ে হতাশার মধ্যে রয়েছে। আমি মনে করি দীর্ঘ দিন যদি এ অবস্থা চলে আর বর্তমানে মামলার যে জট আছে তা দ্রুত যদি নিষ্পত্তি না করা হয়, তাহলে মানুষের বিচারের প্রতি অনীহা হবে।

তিনি বলেন, এই অবস্থায়ও মোটামোটি সুরক্ষা নিয়ে চলতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। পেশাগতকাজে যে আইনজীবীরা আদালতে যান তাদেরকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা করারও দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রচুর সংখ্যাক মামলা। এমনকি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও দীর্ঘ দিন ধরে কনডেম সেলে রয়েছে। এসব মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে একটা কমিশন করা উচিত। তারা সুচিন্তিত মতামত দেবেন কিভাবে মামলা নিষ্পত্তি করা যায়। নতুবা এখন যে অবস্থা আছে সেটি যদি চলতে থাকে তাহলে বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়বে, ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়বে। বিচারের প্রতি যদি মানুষের অনীহা আসে তাহলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বর্তমান অবস্থার মধ্যে সব আদালতগুলোকে সুরক্ষা নিয়ে চালু করতে হবে। যেহেতু গণপরিবহনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চলতেছে, বিচার বিভাগকে সংকুচিত করা উচিত নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, কোর্ট ম্যানেজমেন্ট যদি ঠিক করা হয়, তাহলে মানুষের ভীড় অনেকাংশে কমে যাবে। নিম্ন আদালতে এতো মানুষের ভীড়, এটার তো প্রয়োজন নেই। আইনজীবীর মাধ্যমে যারা কেবলমাত্র মামলার আসামি, তারাই হাজিরা দেবেন। বিচারক সংকট নিয়ে তিনি বলেন, আপিল বিভাগে তিনটা বেঞ্চ করতে পারে, বর্তমানে সেখানে দুইটা বেঞ্চ আছে।

দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই অনুপাতে বিচারক সংখ্যা অনেক কম বলেও তিনি বলেন।

খন্দকার মাহবুব বলেন, বিচার বিভাগের প্রতি যতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল, দুর্ভাগ্যবশত ততটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তারই ফলে বিচার বিভাগ এখন সংকটপূর্ণ অবস্থায় আছে। বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থায় আছে। মানুষ কিন্তু বিচার পাচ্ছেন না। এজন্যই মামলার জট কমাতে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিশন করা দরকার।

করোনার কারনে গত বছরের মার্চ থেকেই বন্ধ ঘোষণা করা হয় দেশের সব আদালত। এরপর গত বছরের মে মাস থেকে আইন সংশোধন করে সীমিত পরিসরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালত চালু হয়।

এরপর করোনা সংক্রমণের হার কমে আসলে আদালত পর্যায়ক্রমে খুলতে থাকে।

চলতি বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে আবারও আদালত বন্ধ করা হয়। তবে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়ালি আদালত পরিচালিত হয়ে আসছে।

এ অবস্থায় বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে আদালত খোলার দাবিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনও জানিয়েছেন।
আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি বুঝে আদালত খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ডিএএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আদালত খুলে দিন : খন্দকার মাহবুব

Update Time : ০৫:০৫:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি :
করোনায় দীর্ঘ দিন আদালত বন্ধ থাকায় ভয়াবহ মামলার জট তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে দ্রুত দেশের সব আদালত খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

শনিবার ২৯ মে বসুন্ধরায় তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

দেশের বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, সুরক্ষা মেনে দ্রুত সব আদালত খুলে না দিলে বর্তমানে যে অবস্থা আছে তা যদি চলতে থাকে তাহলে বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়বে, ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়বে। আর বিচারের প্রতি যদি মানুষের অনীহা আসে তাহলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিশন গঠনেরও দাবি করেন খন্দকার মাহবুব।

তিনি বলেন, করোনার পূর্বেই আমাদের বিচার বিভাগে মামলার সংখ্যা নিয়ে একটা সংকটপূর্ণ অবস্থায় ছিল। করোনার পরে দীর্ঘ দিন নিম্ন আদালত উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারনে সেই সংকট একটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে গণপরিবহণসহ সব কিছু খুলে দেয়া হয়েছে। অথচ বিচার বিভাগ এমন একটা অবস্থায় রয়েছে যে, মানুষ বিচার না পেয়ে হতাশার মধ্যে রয়েছে। আমি মনে করি দীর্ঘ দিন যদি এ অবস্থা চলে আর বর্তমানে মামলার যে জট আছে তা দ্রুত যদি নিষ্পত্তি না করা হয়, তাহলে মানুষের বিচারের প্রতি অনীহা হবে।

তিনি বলেন, এই অবস্থায়ও মোটামোটি সুরক্ষা নিয়ে চলতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। পেশাগতকাজে যে আইনজীবীরা আদালতে যান তাদেরকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা করারও দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রচুর সংখ্যাক মামলা। এমনকি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও দীর্ঘ দিন ধরে কনডেম সেলে রয়েছে। এসব মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে একটা কমিশন করা উচিত। তারা সুচিন্তিত মতামত দেবেন কিভাবে মামলা নিষ্পত্তি করা যায়। নতুবা এখন যে অবস্থা আছে সেটি যদি চলতে থাকে তাহলে বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়বে, ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়বে। বিচারের প্রতি যদি মানুষের অনীহা আসে তাহলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বর্তমান অবস্থার মধ্যে সব আদালতগুলোকে সুরক্ষা নিয়ে চালু করতে হবে। যেহেতু গণপরিবহনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চলতেছে, বিচার বিভাগকে সংকুচিত করা উচিত নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, কোর্ট ম্যানেজমেন্ট যদি ঠিক করা হয়, তাহলে মানুষের ভীড় অনেকাংশে কমে যাবে। নিম্ন আদালতে এতো মানুষের ভীড়, এটার তো প্রয়োজন নেই। আইনজীবীর মাধ্যমে যারা কেবলমাত্র মামলার আসামি, তারাই হাজিরা দেবেন। বিচারক সংকট নিয়ে তিনি বলেন, আপিল বিভাগে তিনটা বেঞ্চ করতে পারে, বর্তমানে সেখানে দুইটা বেঞ্চ আছে।

দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই অনুপাতে বিচারক সংখ্যা অনেক কম বলেও তিনি বলেন।

খন্দকার মাহবুব বলেন, বিচার বিভাগের প্রতি যতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল, দুর্ভাগ্যবশত ততটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তারই ফলে বিচার বিভাগ এখন সংকটপূর্ণ অবস্থায় আছে। বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থায় আছে। মানুষ কিন্তু বিচার পাচ্ছেন না। এজন্যই মামলার জট কমাতে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিশন করা দরকার।

করোনার কারনে গত বছরের মার্চ থেকেই বন্ধ ঘোষণা করা হয় দেশের সব আদালত। এরপর গত বছরের মে মাস থেকে আইন সংশোধন করে সীমিত পরিসরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালত চালু হয়।

এরপর করোনা সংক্রমণের হার কমে আসলে আদালত পর্যায়ক্রমে খুলতে থাকে।

চলতি বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে আবারও আদালত বন্ধ করা হয়। তবে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়ালি আদালত পরিচালিত হয়ে আসছে।

এ অবস্থায় বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে আদালত খোলার দাবিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনও জানিয়েছেন।
আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি বুঝে আদালত খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ডিএএম//