নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঁচ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে কারাগারে প্রেরণ করার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-(বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
পাশাপাশি বিএফইউজের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজীসহ সকল কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানান তারা। আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএফইউজে ও ডিইউজে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ এসব দাবি করেন।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী, বিএফইউজের সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত ও রাশেদুল হক, সাংবাদিক নেতা আমীরুল ইসলাম কাগজী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাব এডিটর কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়, কারা নির্যাতিত ফটো সাংবদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, ডিইউজের দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, সাংবাদিক নেতা সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী।
মানবন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, দফতর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, একেএম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাজী আনোযারুল হক।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতনের ঘটনা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবহিত ছিল অভিযোগ করে শওকত মাহমুদ বলেন, এ সরকার মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে। এ সরকার দুর্নীতিবাজদের পক্ষে।
সুস্থ সাংবাদিকতা পুনরুদ্ধার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগে সাগর-রুনি হত্যা মামলা বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের আন্দোলন কারো কারো বেঈমানীর কারণে নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল।
রোজিনা ইসলাম দুর্নীতির বিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বংশীবাদক এমন মন্তব্য করে শওকত মাহমুদ বলেন, রোজিনা ইসলাম সরকারের অনেক দুর্নীতি উন্মোচন করেছে। এজন্য তার ওপর সরকারের ক্ষোভ ছিল। তার কন্ঠরোধ করার জন্যই তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে এবং জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসময় তিনি অবিলম্বে রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দিয়ে তাকে হেনস্থাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোজিনা ইসলাম ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী সহ কারাবন্দি সকল সাংবাদিকের মুক্তি দিন। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা তথ্য চুরি করে না। তথ্য উদ্ধার করে। তথ্য লুকিয়ে রাখে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরারা। মুক্তসাংবাদিকতা এখন জেলের খাঁচায় বন্দি। সাংবাদিকতায় এমন খারাপ সময় আর দেখিনি উল্লেখ করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, মিডনাইট সরকারকে বিদায় না জানালে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হবে না।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, এ সরকার বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও সংসদ ধ্বংস করেছে। গণমাধ্যম ভরসা ছিল। এখন সেটিও ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। এসময় তিনি সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্থা ও গ্রেফতারের পর নারীবাদীদের নিশ্চুপ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এসময় তিনি রোজিনা ইসলামসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানান।
বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, রোজিনা ইসলাম কে যেভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে কারাবন্দি করা হয়েছে তা অতীতের সকল নির্যাতনকে ম্লান করে দিয়েছে। এটা গোটা জাতির জন্য লজ্জার। তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিন। বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দিন। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিকের অবিলম্ব মুক্তি দিন।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে, এ সরকার স্বাধীন সাংবাদিকতাকে হত্যা করতে চায়। যা সাংবাদিক সমাজ কখনোই মেনে নিবে না। এসময় তিনি অবিলম্বে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানান।
এসএস//
Leave a Reply