বিশেষ প্রতিনিধি :
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।
সর্বশেষ জারি করা প্রজ্ঞাপনে ঈদ উপলক্ষে একাধিক নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে সংক্রমণ আবারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কাও রয়েছে। এমন পরিস্থিতি হলে আবারও কঠোর বিধিনিষেধের আরোপ করবে সরকার।
বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে ৫ মে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে ছয়টি অতিরিক্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- ক. সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন, খ.সব দোকানপাট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে গ. মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে, জনসমাগম হয় এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।
সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ এবং নিয়ন্ত্রণহীন। এ অবস্থায় নির্দেশনা না মানলে আমাদের দেশেও খারাপ অবস্থা হতে পারে। তবে সে ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। ঈদের মধ্যে অবস্থা বেগতিক হলে আবারও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গনমাধ্যমকে বলেন, ঈদের সময় যদি মানুষ নিয়মগুলো না মানে, তাহলে ভয়াবহ অবস্থা হবে। সেক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ধরে রাখতে হবে। এটি আরও কঠোর হতে পারে। তিনি বলেন, ভারতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সেখানে প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদেরও শঙ্কা আছে। ভয়টা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এটা (করোনার সংক্রমণ) আরও বেড়ে যাবে। বাংলাদেশে যাতে এ অবস্থা না হয়, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাতে না যায়, সেজন্য যে যেখানে আছেন, সেখানেই এবার ঈদ করবেন।
মানুষ যাতে ঈদে কর্মস্থল ছাড়তে না পারে সেজন্য নজরদারি থাকবে বলেও জানান সরকারের এ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে, যাতে করে কর্মস্থল বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে মানুষ বাইরে না যেতে পারে।
শহরগুলোতে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা তো এখন বারুদের মতো। তাই মাস্ক পরতেই হবে। না হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। এই করোনা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চলবে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধিও শতভাগ মেনে চলতে হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই, কেউ কখনোই অপ্রয়োজনে বাইরে আসবেন না। যতদিন স্থায়ী সমাধান না আসে মানুষের অপ্রয়োজনে বাইরে আসার দরকার নেই। কেউ যখন প্রয়োজনে বাইরে আসবেন, তখন নিজের সুরক্ষা নিজেকেই করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব মানতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে। না হলে তার আর্থিকসহ বিভিন্ন ক্ষতি হবে। সেজন্য মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে। সহযোগিতা করলে, শতভাগ মাস্ক পরলে এবং সংক্রমণ কমে এলে আমরা সবকিছু স্বাভাবিক করে দিতে পারব।
ভারতের বেসামাল করোনা পরিস্থিতিও ভাবাচ্ছে সরকারকে। দেশটির সঙ্গে ইতোমধ্যে দুই সপ্তাহের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ার কারণে অনেকাংশেই শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
চলতি বছর মার্চের শেষের দিকে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত বছরের পর এটি এ বছর দ্বিতীয় ঢেউ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের বিধিনিষেধ জারি করা হয়। পরে তা কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। ১৪ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৬ মে থেকে জেলার ভেতরে গণপরিবহন চালু করা হয়। যদিও ঈদকে সামনে রেখে গত ২৬ এপ্রিল থেকে শপিংমল খুলে দেয়া হয়।
ডিএএম//
Leave a Reply