নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৪০ লাখ খুদে শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা পাঠাচ্ছে সরকার।
গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ছয় মাসের বকেয়া টাকা ১৫ দিনের মধ্যে মায়েদের কাছে পৌঁছে যাবে।
প্রাথমিকে উপবৃত্তির প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব ইউসুফ আলী বলেন, ‘১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের মায়েদের নগদ অ্যাকাউন্টে বকেয়া ৬ মাসের টাকা যাবে। অর্থাৎ ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর, এই ছয় মাসের টাকা এই কিস্তিতে দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ৫টি উপজেলায় পাইলটিং করা হবে। এতে যদি সব রিপোর্ট পজেটিভ থাকে, তাহলে পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে সারাদেশে উপবৃত্তির টাকা পাঠিয়ে দেয়া হবে। মূলত প্রতারক চক্রের প্রতারণা এড়াতে এই কৌশল। আমরা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের সঙ্গেও আলাপ করেছি। সবার সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।’
ইউসুফ আলী বলেন, ‘এ বকেয়া ছয় মাসের অর্থ নিরাপদভাবে পাঠানোর পর পরবর্তী তিন মাসের অর্থ পাঠানো হবে। অর্থাৎ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের অর্থ পাঠানো হবে। এটি কার্যকর করা হবে আগামী মে থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে।’
করোনার মধ্যে প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণের এই প্রকল্প বন্ধ ছিল প্রায় এক বছর। পরে গত ডিসেম্বরে ‘নগদ’-এর সঙ্গে চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। চুক্তির তিন মাসের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের তথ্যসহ ডেটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে আরেক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘শিওর ক্যাশ’-এর মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করতো সরকার। এতে প্রতি হাজার টাকার উপবৃত্তি বিতরণে সাড়ে ২১ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ক্যাশ-আউট চার্জ লাগতো। এখন সব মিলিয়ে নগদে প্রতি হাজারে সরকারের লাগবে ৭ টাকা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নগদের মাধ্যমে প্রথম ডিজিটিাল পদ্ধতিতে উপবৃত্তির টাকা মোবাইলে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই দেশের প্রতারকচক্র দেশের বিভিন্ন স্কুলে অভিভাবকদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন দেয়া শুরু করে। কখনো নগদের এজেন্ট, কখনো শিক্ষা কর্মকর্তা বা প্রধান শিক্ষক পরিচয় দিয়ে পিন নম্বর, ওটিপি বা উপবৃত্তির টাকা কম গেছে বলে তাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য চায়। আরও টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে বলে ওটিপি চায় তারা। অনেক অভিভাবক না বুঝে সব তথ্য প্রতারকদের দিয়ে দেন। এরপর অভিভাবকদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
প্রতারণার বিষয়টি উপবৃত্তি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানায়। এছাড়া সবাইকে সর্তক থাকতে কিছু নির্দেশনা দিয়ে দুই দফা চিঠিও দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, যেখানেই প্রতারণার খবর পাওয়া যাবে, সেখানে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে এবং ‘নগদ’কে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সচেতনামূলক প্রচারণা আরও বেশি করে চালাতে বলা হয়।
এমএম//
Leave a Reply