দিদারুল আলম : কুমিল্লা-৫ সংসদীয় আসনের (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) চার বারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোঃ ইউনুস মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহ..রাজেউন)।
শনিবার ২৭ মার্চ রাত সাড়ে আটটায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি পাঁচ পূত্র, দুই কন্যা, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন, গুণগ্রাহী শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন।
অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের মৃত্যুর সংবাদে তার নির্বাচনী এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে শোক প্রকাশ করেছেন তার স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
তিনি পেশায় অধ্যাপক ছিলেন। বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা ক্ষেত্রে তার উন্নয়নের ছোঁয়া রয়েছে।
২৯ মার্চ সোমবার সকাল ৯ টায় কুমিল্লা শহরে, ১২ টায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরে, বেলা ২ টায় বুড়িচং উপজেলা সদরে, বিকাল ৪ টায় তার নিজ গ্রামেসহ মোট চার দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে তার পরিবার সূত্র জানায়।
তার হাজার হাজার ছাত্র দেশ বিদেশে সাফল্যের সঙ্গে রয়েছেন। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি গ্রাম পাড়া মহল্লা ছিল তার নখদর্পনে। হাজার হাজার মানুষের নাম ও বৃত্তান্ত তিনি জানতেন। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে অমায়িক এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন অধ্যাপক মোঃ ইউনুস। তার সব পূত্রগন সুপ্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যে দুজন বিবিএস (প্রশাসন) কর্মকর্তা। একজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাফল্যের সঙ্গে বিচারণ করছেন। একজন অধ্যাপক ও অন্যজন চিকিৎসক।
মাত্র ৩০ বছর বয়সে ১৯৭৩ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬, ১৯৮৮ ও ২০০১ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন অধ্যাপক মোঃ ইউনুস।
তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একজন পরিচ্ছন্ন সহজ সরল মানুষ হিসেবে আজীবন নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ সম্মানিত ছিলেন অধ্যাপক মোঃ ইউনুস।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠন।
জীবদ্দশায় মানুষের বিপদে সবসময় পাশে থেকেছেন তিনি। কুমিল্লা-৫ নির্বাচনী এলাকায় দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর তিনি রাজনীতি, শিক্ষকতা ও জনসেবায় সম্পৃক্ত থেকেছেন। তার অভাব এই জনপদে কখনোই পূরণ হবার নয় বলে জানান এলাকার মানুষ।
শিক্ষকতা পেশার কারণে দল মত নির্বিশেষে সব শ্রেনীর মানুষ তাকে সম্মান করে ‘স্যার’ ডাকত। কুমিল্লা-৫ এর সেই ‘স্যার’ এখন না ফেরার দেশে।
এমডিএ//
Leave a Reply