সারাদেশ ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারির করোনার আতঙ্ককে পুঁজি করে নকল টিকা সরবরাহকারী চক্রের অন্তত ৮৪ জনকে আটকের তথ্য প্রকাশ করে ভয়াবহ এই দিকটি সামনে নিয়ে এলো ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন-ইন্টারপোল।
ইন্টারপোল জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের নকল টিকা উৎপাদনে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। একাধিক অভিযানে কয়েক হাজার ডোজ নকল করোনা টিকা জব্দের তথ্যও জানিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার ইন্টারপোলের বিবৃতিতে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, চীন থেকে এ পর্যন্ত ৮০ জনকে গ্রেফতার এবং করোনা ভ্যাকসিনের প্রায় তিন হাজার নকল ডোজ জব্দ করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গুদাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চীন ও জিম্বাবুয়ের নাগরিককে। সেখান থেকেও জব্দ করা হয় দুই হাজার চারশ’ নকল ভ্যাকসিন। তবে, গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত প্রকাশ করেনি ইন্টারপোল।
তবে কবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় সে বিষয়ে কিছু জানায়নি ইন্টারপোল। সম্প্রতি অবৈধ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নকল টিকা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন ইন্টারপোল প্রধান। তার কয়েকদিন পরই এমন ঘটনা ঘটলো।
চীনে আরেক অভিযানে গ্রেফতার হয় নকল টিকা তৈরির চক্রে জড়িত কং। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, স্যালাইন ও পানি দিয়ে বানানো নকল টিকা লাখ লাখ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। আসল টিকার নকশা হুবহু নকল করে করোনা প্রতিষেধকের প্রায় ৫৮ হাজার নকল ডোজ তৈরির কথা স্বীকার করেছে সে।
চীনের আদালতে শুনানি চলাকালে কং জানিয়েছে, নকল টিকাগুলো বেশি দামে বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্রি করা হয়। এছাড়া, গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নকল টিকা সরবরাহ করে প্রতারক চক্র। গত বছরের আগস্ট থেকে নকল টিকা উৎপাদন ও সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। নকল টিকা বিভিন্ন দেশে পাচারের ক্ষেত্রে আসল প্রস্তুতকারকদের অভ্যন্তরীণ চ্যানেলগুলো ব্যবহার করছে এই প্রতারক চক্র।
বিভিন্ন দেশের বেসরকারি নার্সিংহোমগুলোকে লক্ষ্য করে নকল টিকা উৎপাদন ও বিতরণ করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্র। তবে এখনো টিকা অনলাইনে ও খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে সতর্ক করেছে ইন্টারপোল।
ইন্টারপোলের সেক্রেটারি জেনারেল জুরগেন স্টক বলেন, ‘অপরাধীদের ধরতে এই ফলাফলকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে কোভিড-১৯ টিকা সম্পর্কিত অপরাধের কথা যখন আসে তখন এটি কেবল বিশাল আইসবার্গের সামান্য অংশ।’
তিনি জানান, অপরাধীরা অনলাইনে এবং অফলাইনে করোনা টিকার বিতরণে লক্ষ্য রাখবে। এই কারণে নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিতে জাতীয় কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রেখেছে ইন্টারপোল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এজেন্টরা সম্প্রতি পাঁচটি রাজ্যের হাসপাতাল ও অন্যান্য মেডিকেল সেন্টার থেকে ১০ মিলিয়ন (এক কোটি) থ্রিএম ব্র্যান্ডের নকল মাস্ক জব্দ করেছে। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩৩ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের করোনার সুরক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন নকল পণ্য জব্দ করা হয়েছে। সূত্র : স্কাই নিউজ।
Leave a Reply