রহস্যময় মরুভূমি নামিব

- Update Time : ০৫:২৩:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১
- / ১৭ Time View
ফিচার ডেস্ক : পৃথিবীর সবচেয়ে শুকনো অঞ্চলগুলোর মধ্যে আটলান্টিক উপকূলে অবস্থিত “নামিব মরুভূমি” । স্থানীয় ভাষায় নামিব অর্থ “একটি জায়গা যেখানে কিছুই নেই”। নুড়ি পাথর ছড়ানো মঙ্গল গ্রহের সাথে সাদৃশ্যময় এই মরুভূমি তিনটি দেশের প্রায় ৮১,০০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। প্রায় ৫৫ মিলিয়ন বছর বয়সী এই মরুভূমিকে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো মরুভূমি বলে মনে করা হয়। অপরদিকে, সাহারা মরুভূমির বয়স মাত্র ২-৭ মিলিয়ন বছর। গ্রীষ্মকালে, দিনের বেলা নামিবের তাপমাত্রা প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে, যা রাতে শুন্যেরও নিচে নেমে যায়। তাপমাত্রার এই ওঠানামা নামিবকে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রতিকূল জায়গার একটি করে তুলেছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কিছু বিস্ময়কর প্রজাতি এই শুষ্ক অঞ্চলকে নিজের ঘর বানিয়ে নিয়েছে, ফলে এখানে একটি অদ্ভুত ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যা অভিজ্ঞদেরও কিংকর্তব্যবিমুঢ় করে দিয়েছে।
নামিব মরুভূমির সবচেয়ে শুষ্ক অংশে বছরে গড়ে মাত্র ২ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়। কখনো কখনো কিছু অংশে বছরে একবারো বৃষ্টি হয় না। কিন্তু এই রুক্ষ পরিবেশেও অনেক প্রাণী যেমন অরিক্স, স্প্রিংবক, চিতা, হায়েনা, উটপাখি এবং জেব্রা বাস করছে। একেক প্রাণী একেক উপায়ে উচ্চ তাপমাত্রায় টিকে থাকার জন্য নিজের শরীরকে তৈরি করেছে। উটপাখি নিজের গায়ের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় যাতে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের না হয়ে যায়। দক্ষ পর্বতারোহী হার্টম্যান মাউন্টেইন জেব্রা রুক্ষ পরিবেশের সাথে নিজেকে অভিযোজিত করে নিয়েছে। অরিক্স কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত পানি না খেয়ে থাকতে পারে। এইরকম নানা উপায়ে প্রাণীকূল এই পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
নামিবের সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ অঞ্চলের একটি হচ্ছে, আটলান্টিকের উপকূলে ৫০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের উচু বালির পাহাড় যেখানে পরিত্যক্ত মরিচা ধরা জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকে। দক্ষিণে এঙ্গোলা থেকে মধ্য নামিবিয়া পর্যন্ত এই উপকূলে অসংখ্য তিমির মৃতদেহও দেখা যায়। তাই একে কঙ্কাল উপকূল বলা হয়। এই উপকূল প্রায়ই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে। আটলান্টিকের ঠান্ডা বেঙ্গুয়েলা স্রোত থেকে উৎপন্ন বাতাসের সাথে মরুভূমির গরম বাতাসের সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয় এই ঘন কুয়াশা, যা জাহাজের নাবিকদের জন্য ভয়ংকর এক বিভীষিকা। এই কুয়াশায় পথ হারিয়ে অসংখ্য জাহাজ উপকূলে আছড়ে পরে যা অভিযাত্রীদের মৃত্যু ডেকে আনে। স্থানীয় স্যান অধিবাসীরা বলে- ঈশ্বর অনেক রাগান্বিত অবস্থায় এই জায়গা তৈরি করেছেন।
এসএস//