প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্সের বিধানাবলী উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রতিপালন করতে হবে
- Update Time : ০৫:০০:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
- / ৩ Time View
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক : দি প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০ এর বিধানাবলী উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রতিপালন করতে হবে।
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ একটি মামলায় রায়ে ‘দি প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০’- এর বিধানাবলী প্রতিপালন বিষয়ে আজ পর্যবেক্ষণ দেন।
আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর আপিল বিভাগ বেঞ্চ ক্রিমিনাল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং-১২৭১/২০১৭ ‘নুর মোহাম্মদ বনাম সরকার এবং অন্যান্য’ এ মামলায় আজ এই পর্যবেক্ষণ দেন।
বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী রায়টি লিখেছেন। রায়ে বলা হয়, এ মামলায় আপিল বিভাগে দরখাস্তকারীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৫ ধারার অপরাধ প্রমান হয়েছে সাব্যস্ত করে বিচারিক আদালত এক বছর সশ্রম কারাদন্ড দেয় এবং আপিল আদালত তা বহাল রাখে।
আজ রায়ে বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, ‘আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি, বিচারিক আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ও আপিল আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সম্পূর্ণরূপে ভুলে গেছেন যে, আমাদের দেশে “প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স,১৯৬০” নামে একটি আইন আছে এবং বর্তমান মামলার প্রেক্ষাপটে সেই আইনের ৫ ধারা প্রয়োগযোগ্য।’
রায়ে বলা হয়েছে, বর্তমান মামলাটিতে যখনই বিচারক ৩২৫ ধারার অপরাধে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করলেন তখনই উচিৎ ছিল ‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০”- এর ৫ ধারা বিবেচনা করা। মামলার বিষয়বস্তু থেকে দেখা যায়, ঘটনা ঘটেছিল দুই প্রতিবেশীর মধ্যে তুচ্ছ একটা ঘটনার জের ধরে। এইসব ক্ষেত্রে আসামিকে এক বছরের জন্য জেলে না পাঠিয়ে প্রবেশনে রাখা সমীচীন ছিল। এমনকি, যেহেতু দন্ডবিধি ৩২৩ এবং ৩২৫ ধারা আপোষযোগ্য অপরাধ এবং যেহেতু দুই পক্ষ হচ্ছে পরস্পর পরস্পরের আত্মীয়/প্রতিবেশী কাজেই মামলাটি আপোষ মীমাংসা করা যুক্তিযুক্ত ছিল। রায়ে আরো বলা হয়েছে, ‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০’-এর বিধানাবলী বিচারিক আদালত, আপিল আদালত এবং হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রয়োগযোগ্য। বর্তমান মামলাটিতে দেখা যায় মামলায় বিচারিক আদালতসহ আদালত সমূহ তিনটি রায়েই এই প্রবেশন আইন বিষয়ে আদৌ অবগত আছেন কিনা। অবগত থাকলে প্রবেশন আইন প্রয়োগ সমীচীন কিনা তা উল্লেখ থাকতো। প্রবেশন আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে এই ধরনের মামলা আপিল বিভাগ পর্যন্ত আসতো না।
আদালত রায়ে বলেন, ‘আমরা আরো দুঃখের সাথে বলতে চাচ্ছি যে এ ধরণের মামলায় “প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০” প্রয়োগ না করা শুধু দুঃখজনকই নয় প্রচলিত আইনের পরিপন্থী।’
সুপ্রিমকোর্টের মুখপত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সারাদেশ’কে জানান, দি প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০ এর বিধানাবলী উপযুক্ত ক্ষেত্রে যথাযথ ভাবে প্রতিপালনে ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সার্কুলার জারি করে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। ওই সার্কুলারে প্রবেশন আইন প্রয়োগ নিয়ে বিদয়। বিদ্যমান বাস্তবতা এবং এ সংক্রান্ত বিধান তুলে ধরা হয়। সার্কুলারের কোনো নির্দেশনাবলী অনুসরণে কোন সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে বা কোনো বিচারক বা ম্যাজিষ্ট্রেটের উক্ত আইন প্রতিপালনে অনীহা বা গাফিলতি পরিলক্ষিত হলে বিষয়টি সুপ্রিমকোর্টের নজরে আনার জন্য স্থানীয় নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়।
দি প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০ এর আওতায় ক্ষমতা প্রাপ্ত আদালত প্রথম ও লঘু অপরাধে জড়িত শিশু কিশোর বা প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন মঞ্জুর করতে পারে।
ডিএ/এসএস//