Dhaka ১০:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
মামলা হলেই গ্রেফতার নয়, তদন্তে দায় পাওয়া গেলে ব্যবস্থা: আইজিপি `অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্রকাঠামোই জাতীয়তাবাদের উপহার’-অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বিপুল আনন্দ উৎসাহ উদ্দীপনায় দেশব্যাপী বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপিত ‘জুলাই আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সহস্রাধিক লোকের সাক্ষ্য’ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের অঙ্গীকার : প্রধান উপদেষ্টা সোয়াই নদীর পুনঃখনন কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে : ৫’শ মিটার কাজে বাঁধা দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ডিইউজে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতীকি ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত: সর্বোচ্চ আদালতে ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ডুমুরের ভেষজ গুন

  • Update Time : ০৭:১৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মার্চ ২০২১
  • / ১৫ Time View

লাইফস্টাইল ডেস্ক : ডুমুর আমাদের দেশের অতিপরিচিত একটি ফল। শহরে-গ্রামে সব জায়গায় রাস্তার পাশে ডুমুরের গাছ জন্মে। ডুমুরের গাছের নিচে ডুমুর ফল পড়ে থাকে। তবে খুবই অবাক করা বিষয় হলো যে গাছের নিচে পড়ে থাকা একদম বিনে পয়সার এই ফলটি কিন্তু ভীষণ উপকারী। পাকা কিংবা শুকনো, দুই অবস্থাতেই এই ফল খাওয়া যায়। হালকা মিষ্টি স্বাদের এই ফলের উপরিভাগ অনেক পাতলা এবং ভেতরে ছোট ছোট বীজ আছে।

সাধারণত দুই ধরনের ডুমুর দেখা যায়- গোল ডুমুর এবং যজ্ঞ ডুমুর। দুটোই খাওয়া যায়। পাকা ডুমুর বেশ রসালো এবং হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত। গরমে পাকা ডুমুরের জুস বেশ আরামদায়ক একটি পানীয়। পাকা ডুমুর দিয়ে জেলি এবং চাটনি তৈরি করা যায়। কাঁচা ডুমুর তরকারি হিসেবে রান্না করলে খেতে বেশ উপাদেয় এবং সুস্বাদু হয়। ডুমুর শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। আমাদের দেশে শুকনো ডুমুরের প্রচলন নেই। শুকনো ডুমুরও বেশ পুষ্টি সমৃদ্ধ। শুকনো ডুমুরের প্রায় ৬০ ভাগই চিনি।

ধারণা করা হতো যে, গ্রিক পণ্ডিত প্লেটো অ্যাথলেটদের এ কারণেই বেশি করে ডুমুর খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। ডুমুরে চিনির পরিমাণ এবং বিভিন্ন ভিটামিন এর আধিক্যের জন্য বলা হয়ে থাকে যে, মানুষ শুধু ডুমুর খেয়েই সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে। আসুন জেনে নিই খুবই সহজলভ্য এই ডুমুর ফলের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা।

পাকা ডুমুর

পুষ্টিগুণ

ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। বিশেষ করে এনার্জি, ক্যালসিয়াম এবং আঁশে ভরপুর। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন বা এফডিএ-এর তথ্য মতে প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরে কার্বোহাইড্রেট ৬৩.৮৭ গ্রাম, শর্করা ৪৭.৯২ গ্রা্ম, আঁশ ৯.৮ গ্রাম, ফ্যাট ০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬২ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থায়োমিন, প্যান্টোথেনিক এসিড, ফোলেট, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়ামের মত উপকারী সব খনিজ উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ প্রয়োজন।

উপকারিতা

১. ডুমুর ভাঙলে বা কাটলে একরকমের সাদা রস বের হয়। একে বলা হয় ল্যাটেক্স । এটাকেই ডুমুরের সকল শক্তি এবং উপকারিতার মূল উৎস বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। আগে এই রস বা ল্যাটেক্স বন্ধ্যাত্বের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তা ছাড়া মায়েদের বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানোর জন্য উদ্দীপক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো।

২. ডুমুর আমাদের উচ্চ কিংবা নিম্ন উভয় ধরনের রক্ত চাপকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সহায়তা করে। ডুমুর খেলে এতে থাকা বেশ কিছু উপকারী খনিজ উপাদান আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৩. ডুমুর খেলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে থাকে। এছাড়াও ত্বকে ব্রণের দাগ কিংবা যেকোনো দাগ মেশাতে ডুমুর বেশ কার্যকর। তাই যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি কিংবা ত্বকের দাগ নিয়ে চিন্তিত তারা কিন্তু ডুমুর খেতে পারেন।

৪. ডুমুর বিভিন্ন চর্মরোগের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য ডুমুরের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের বিবর্ণতা এবং ক্ষত খুব দ্রুত সেরে যায়।এছাড়াও ত্বকের ফাঙ্গাশ জনিত যেকোনো সমস্যয় ডুমুরের সিদ্ধ পানি অনেক উপকারী।

৫. ডূমুরের ছাল থেঁতো করে পানিতে সিদ্ধ করে এর সাথে যদি পুদিনার রস মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে আমাদের হজমশক্তি অনেক বেড়ে যায় এবং একই সাথে আমাদের পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়।

ডুমুর অনেক উপকারী হলেও এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে আমাদের যকৃত, পাকস্থলী এবং দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। তাই বেশি মাত্রায় না খেয়ে অল্প করে খেলে সহজলভ্য এই ফলটি আমাদের অনেক উপকার করতে পারে। তাই আর এখন থেকে ডুমুরকে মোটেও অবহেলা করবেন না।

এসএস//

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ডুমুরের ভেষজ গুন

Update Time : ০৭:১৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মার্চ ২০২১

লাইফস্টাইল ডেস্ক : ডুমুর আমাদের দেশের অতিপরিচিত একটি ফল। শহরে-গ্রামে সব জায়গায় রাস্তার পাশে ডুমুরের গাছ জন্মে। ডুমুরের গাছের নিচে ডুমুর ফল পড়ে থাকে। তবে খুবই অবাক করা বিষয় হলো যে গাছের নিচে পড়ে থাকা একদম বিনে পয়সার এই ফলটি কিন্তু ভীষণ উপকারী। পাকা কিংবা শুকনো, দুই অবস্থাতেই এই ফল খাওয়া যায়। হালকা মিষ্টি স্বাদের এই ফলের উপরিভাগ অনেক পাতলা এবং ভেতরে ছোট ছোট বীজ আছে।

সাধারণত দুই ধরনের ডুমুর দেখা যায়- গোল ডুমুর এবং যজ্ঞ ডুমুর। দুটোই খাওয়া যায়। পাকা ডুমুর বেশ রসালো এবং হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত। গরমে পাকা ডুমুরের জুস বেশ আরামদায়ক একটি পানীয়। পাকা ডুমুর দিয়ে জেলি এবং চাটনি তৈরি করা যায়। কাঁচা ডুমুর তরকারি হিসেবে রান্না করলে খেতে বেশ উপাদেয় এবং সুস্বাদু হয়। ডুমুর শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। আমাদের দেশে শুকনো ডুমুরের প্রচলন নেই। শুকনো ডুমুরও বেশ পুষ্টি সমৃদ্ধ। শুকনো ডুমুরের প্রায় ৬০ ভাগই চিনি।

ধারণা করা হতো যে, গ্রিক পণ্ডিত প্লেটো অ্যাথলেটদের এ কারণেই বেশি করে ডুমুর খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। ডুমুরে চিনির পরিমাণ এবং বিভিন্ন ভিটামিন এর আধিক্যের জন্য বলা হয়ে থাকে যে, মানুষ শুধু ডুমুর খেয়েই সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে। আসুন জেনে নিই খুবই সহজলভ্য এই ডুমুর ফলের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা।

পাকা ডুমুর

পুষ্টিগুণ

ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। বিশেষ করে এনার্জি, ক্যালসিয়াম এবং আঁশে ভরপুর। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন বা এফডিএ-এর তথ্য মতে প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরে কার্বোহাইড্রেট ৬৩.৮৭ গ্রাম, শর্করা ৪৭.৯২ গ্রা্ম, আঁশ ৯.৮ গ্রাম, ফ্যাট ০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬২ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থায়োমিন, প্যান্টোথেনিক এসিড, ফোলেট, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়ামের মত উপকারী সব খনিজ উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ প্রয়োজন।

উপকারিতা

১. ডুমুর ভাঙলে বা কাটলে একরকমের সাদা রস বের হয়। একে বলা হয় ল্যাটেক্স । এটাকেই ডুমুরের সকল শক্তি এবং উপকারিতার মূল উৎস বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। আগে এই রস বা ল্যাটেক্স বন্ধ্যাত্বের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তা ছাড়া মায়েদের বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানোর জন্য উদ্দীপক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো।

২. ডুমুর আমাদের উচ্চ কিংবা নিম্ন উভয় ধরনের রক্ত চাপকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সহায়তা করে। ডুমুর খেলে এতে থাকা বেশ কিছু উপকারী খনিজ উপাদান আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৩. ডুমুর খেলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে থাকে। এছাড়াও ত্বকে ব্রণের দাগ কিংবা যেকোনো দাগ মেশাতে ডুমুর বেশ কার্যকর। তাই যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি কিংবা ত্বকের দাগ নিয়ে চিন্তিত তারা কিন্তু ডুমুর খেতে পারেন।

৪. ডুমুর বিভিন্ন চর্মরোগের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য ডুমুরের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের বিবর্ণতা এবং ক্ষত খুব দ্রুত সেরে যায়।এছাড়াও ত্বকের ফাঙ্গাশ জনিত যেকোনো সমস্যয় ডুমুরের সিদ্ধ পানি অনেক উপকারী।

৫. ডূমুরের ছাল থেঁতো করে পানিতে সিদ্ধ করে এর সাথে যদি পুদিনার রস মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে আমাদের হজমশক্তি অনেক বেড়ে যায় এবং একই সাথে আমাদের পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়।

ডুমুর অনেক উপকারী হলেও এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে আমাদের যকৃত, পাকস্থলী এবং দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। তাই বেশি মাত্রায় না খেয়ে অল্প করে খেলে সহজলভ্য এই ফলটি আমাদের অনেক উপকার করতে পারে। তাই আর এখন থেকে ডুমুরকে মোটেও অবহেলা করবেন না।

এসএস//