Dhaka ১২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

যুদ্ধাপরাধে ময়মনসিংহের তিন আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

  • Update Time : ০২:০১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ১ Time View

বিশেষ প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা যুদ্ধাপরাধের আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ময়মনসিংহের তিন আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫ আসামিকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি আমির হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার।

এ মামলার নয় আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ৪২টি মামলার ১১৪ জন আসামির মধ্যে এই প্রথম কেউ বেকসুর খালাস পেলেন বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়।

আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার ৫ আসামি রায়ের সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আর বাকি চার আসামিকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে।

রায়ে আসামি মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, এ এফ এম ফয়জুল্লাহ (পলাতক), আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলকে (পলাতক) আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০ বছর করে সাজা দেয়া হয় আসামি মো. খলিলুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, আলিম উদ্দিন খান (পলাতক) ও সিরাজুল ইসলাম তোতাকে।

এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে ময়মনসিংহের বিভিন্ন গ্রামে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার মত অপরাধ করেন বলে এ মামলায় অভিযোগ করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্ট চারটি ঘটনায় ২০১৮ সালে ৪ মার্চ তাদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল ।

উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত বছরের ২৬ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে
রায় দিতে বিলম্ব হয়। গত মঙ্গলবার মামলার রায়ের জন্য আজ দিন ঠিক করে দেয়া হয় ।

ময়মনসিংহের নয়জনের এ মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, জাহিদ ইমাম ও তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার ছিলেন মো. খলিলুর রহমান মীর, মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, মো. আব্দুল্লাহ, মো. আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী ও আব্দুল লতিফ। পলাতক ছিলেন এ এফ এম ফয়জুল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, সিরাজুল ইসলাম তোতা, আলিম উদ্দিন খান ও নুরুল আমিন শাহজাহান। বিচার চলাকালে মো. আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার ও পলাতক থাকা অবস্থায় নুরুল আমিন শাজাহান মারা যান।

২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

মামলার নয় আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ৫ জনকে সকালে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের এজলাসে উপস্থিত করা হয়। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে তারা একে একে নিজেদের নাম বলেন।
রায় ঘোষণার শুরুতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম প্রারম্ভিক বক্তৃতা দেন। এরপর ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ২২২ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু করেন। রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়েন বিচারপতি আমির হোসেন।

সবশেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম মামলায় আসামিদের বিষয়ে সাজার অংশ ঘোষণা করেন।

এসএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যুদ্ধাপরাধে ময়মনসিংহের তিন আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

Update Time : ০২:০১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা যুদ্ধাপরাধের আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ময়মনসিংহের তিন আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫ আসামিকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি আমির হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার।

এ মামলার নয় আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ৪২টি মামলার ১১৪ জন আসামির মধ্যে এই প্রথম কেউ বেকসুর খালাস পেলেন বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়।

আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার ৫ আসামি রায়ের সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আর বাকি চার আসামিকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে।

রায়ে আসামি মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, এ এফ এম ফয়জুল্লাহ (পলাতক), আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলকে (পলাতক) আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০ বছর করে সাজা দেয়া হয় আসামি মো. খলিলুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, আলিম উদ্দিন খান (পলাতক) ও সিরাজুল ইসলাম তোতাকে।

এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে ময়মনসিংহের বিভিন্ন গ্রামে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার মত অপরাধ করেন বলে এ মামলায় অভিযোগ করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্ট চারটি ঘটনায় ২০১৮ সালে ৪ মার্চ তাদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল ।

উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত বছরের ২৬ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে
রায় দিতে বিলম্ব হয়। গত মঙ্গলবার মামলার রায়ের জন্য আজ দিন ঠিক করে দেয়া হয় ।

ময়মনসিংহের নয়জনের এ মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, জাহিদ ইমাম ও তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার ছিলেন মো. খলিলুর রহমান মীর, মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, মো. আব্দুল্লাহ, মো. আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী ও আব্দুল লতিফ। পলাতক ছিলেন এ এফ এম ফয়জুল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, সিরাজুল ইসলাম তোতা, আলিম উদ্দিন খান ও নুরুল আমিন শাহজাহান। বিচার চলাকালে মো. আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার ও পলাতক থাকা অবস্থায় নুরুল আমিন শাজাহান মারা যান।

২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

মামলার নয় আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ৫ জনকে সকালে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের এজলাসে উপস্থিত করা হয়। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে তারা একে একে নিজেদের নাম বলেন।
রায় ঘোষণার শুরুতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম প্রারম্ভিক বক্তৃতা দেন। এরপর ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ২২২ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু করেন। রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়েন বিচারপতি আমির হোসেন।

সবশেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম মামলায় আসামিদের বিষয়ে সাজার অংশ ঘোষণা করেন।

এসএস//