সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদক:
আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর অনুমতি না দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট হয়েছে।
এ বিষয়ে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা দেয়ার আরজি পেশ করা হয়েছে রিটে।
রিটে নির্বিচারে মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।
১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে দলগুলোকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।
আওয়ামী লীগ ছাড়াও অপর যে ১০টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর অনুমতি না দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), গণতন্ত্রী দল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, তরিকত ফেডারেশন, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, লেবারের ডেমক্রেটিক পার্টি, মার্ক্সিস্ট-লেলিনিস্ট (বড়ুয়া) ও সোসিওলিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ তিনজন আবেদনকারী আজ রিটটি করেছেন। অপর দুজন হলেন মো. আবুল হাসনাত ও মো. হাসিবুল ইসলাম।
এছাড়া এই তিন রিটকারির করা অপর একটি রিটে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে অপর একটি রিট করা হয়েছে। সেখানে তিন নির্বাচনের গেজেট বাতিল চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ঐসব নির্বাচনে এমপিদের সকল সুযোগ সুবিধা বাতিল করে তা প্রত্যাহারের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একই সাথে ওই সব নির্বাচনের এমপিদের বিরুদ্ধে কেন রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।
এদিকে এই দুটি রিট করার কথা জানিয়ে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।
এদিকে ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সেহেতু সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং এই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি ২৩ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল্। এরপরপরই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণী পেশার মানুষ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে ১৫ বছরের অধিক সময় টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়।
ডিএম/কেকে//
Leave a Reply