আদালত প্রতিবেদক:
জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আইন সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নুরে আলম সিদ্দিকী সোহাগের কারাদণ্ড বাতিল করে খালাস দিয়েছেন আপিল আদালত।
বুধবার ঢাকার ১০ নম্বর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক লুতফুল মজিদ নয়ন এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর আইনজীবী সোহাগসহ বিএনপির ৯ নেতাকর্মীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আইনজীবী নুরে আলম সিদ্দিকী সোহাগসহ ৯ জনকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত যে কারাদণ্ড দিয়েছিল, সেটা ছিল বেআইনি। এর কারণ অত্র মামলার কোনো সাক্ষী আপিলকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো সাক্ষ্য দেন নাই। ঘটনার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো সাক্ষী রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে হাজির করেন নাই। এ ছাড়া সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষী দিয়ে বলেছে, শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করেছে আসামিরা। আদালত আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে আপিল মঞ্জুর করে আসামিদের দণ্ড মওকুফ করে খালাস দিয়েছেন।
এ ছাড়া আপিল শুনানিতে আইনজীবী মামুন চৌধরী, ফরিদ উদ্দিন, নিহার হোসেন ফারুক, তানভীর সোহেল, জুয়েল, আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে বিএনপির ডাকা হরতালে পুলিশের কাজে বাধা প্রদানের ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযোগে করা হয়, তারা ২০১০ সালের ২৭ জুন বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালীন সূত্রাপুরের কাপ্তানবাজার এলাকায় জোর করে দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছিলেন। তাদের এ কাজে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়েন। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় নুরে আলমসহ অন্যদের গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে ২০১১ সালের ১৫ মে যুবদল নেতা নুরে আলমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। সেই মামলায় ১৩ বছর পর রায় দেন সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন দমনে বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান করা হয়। দেশের নিম্ন আদালতকে ব্যবহার করে বিগত সরকার এ কার্যক্রম পরিচালনা করে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করেছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে কত ৫ আগস্ট পতন হয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের। পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগ করেন। নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে শপথ নেন বিচারপতি ড. রেফাত আহমেদ। গত ২১ সেপ্টেম্বর সারাদেশের বিচারকদের উদ্দেশ্যে অভিবাসন দেন তিনি।
বিচারকদের স্বাধীনভাবে ও বিচারিক মন নিয়ে সার্বভৌম মানুষিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন নতুন প্রধান বিচারপতি। ফলে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা সুগম হয়।
ডিএএম/এসএম//
Leave a Reply