Dhaka ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

শ্রম আইন প্র্যাকটিস এবং প্রাসঙ্গিক কথা : ড. উত্তম কুমার দাস, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

  • Update Time : ০২:০০:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪
  • / ০ Time View

শ্রম আইন প্র্যাকটিস এবং প্রাসঙ্গিক কথা, ড. উত্তম কুমার দাস, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট:

শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন এক আন্তর্জাতিক সংস্থা আয়োজিত এক কর্মশালায় অংশ নিলাম গত ২ এপ্রিল ২০২৪।

যেহেতু আইনজীবী হিসাবে আমার কাজের প্রধানতম ক্ষেত্র শ্রম আইন, তাই আগ্রহ নিয়ে তাতে যোগ দিলাম। আরেকটি বড় কারণ, প্রতিষ্ঠানটি আমার সাবেক কর্মস্থল।

ওই অনুষ্ঠানে দৃশ্যতঃ তিন ধরণের কাজের লোকজন অংশ নিয়েছেন। প্রথমতঃ যারা মূলতঃ শ্রম আদালতে প্র্যাকটিচরত কিংবা চাকুরী-সংক্রান্ত বিষয়ের আইনজীবী। দ্বিতীয়তঃ বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষক, যারা শ্রম আইন বিষয়ে পাঠদান করেন কিংবা করতে ইচ্ছুক। এবং তৃতীয়তঃ শ্রমিকদের বিষয় নিয়ে কাজ করে এমন ক’টি এনজিওতে চাকুরীরত ব্যক্তিরা।

শ্রম আইন প্র্যাকটিচের ক্ষেত্রে প্রধানতম সমস্যাসমূহ কি তা নিয়ে যে দল-ভিত্তিক চর্চা হয় সেই গ্রুপে আমি ছিলাম।

তাতে বেশ কিছু বিষয় চিহ্নিত হয়; তা হ’ল- বিদ্যমান শ্রম আইনে কতিপয় বিষয়ে অস্পষ্টতা, অসম্পূর্ণতা কিংবা পারস্পরিক বিরোধী বিধান। যেমন-শ্রমিকের সংজ্ঞা [ধারা ২(৬৫) ও ১৭৫], অসৎ শ্রম আইনের প্রতিকারের ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ শ্রমিকের সরাসরি শ্রম আদালতে না যাওয়ার মতো বিধান (ধারা ৩১৩), শিল্প-বিরোধ নিস্পত্তির ক্ষেত্রে আইনের বিধানের অস্পষ্টতা (বিশেষতঃ সময়সীমা) ইত্যাদি।

আরেকটি বিষয় আলোচনায় আসে। শ্রম আদালতে যে সকল বিচারকগণ আসেন তাঁরা বিচার বিভাগে চাকুরীর ক্ষেত্রে সিনিয়র পর্যায়ের-আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন নিযুক্ত জেলা জজ কিংবা অতিরিক্ত জেলা জজ পর্যায়ের বিচারক। কেউ কেউ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদ মর্যাদার।

অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের শ্রম আইনের মতো বিশেষ আইনের জন্য যেইরকম স্পষ্ট ধারণা, জ্ঞান-গরিমা ও সংবেদনশীলতা দরকার তা অনেক সময় থাকেনা। তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেই। একই অবস্থা নবাগত আইনজীবীদের ক্ষেত্রে। যার জন্য দরকার বিশেষ প্রশিক্ষণ।

আবার এমনটি দেখা যায় যে, শ্রম আদালতের কোন বিচারক হয়ত শ্রম আইনের ক্ষেত্রে দক্ষ ও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, এমন সময় সরকারী নিয়মে তাঁর বদলীর আদেশ এসে যায়। তখন তাঁকে হয়ত এমন স্থানে বদলী করা হয়, যার সঙ্গে শ্রম আইনের আর কোন সম্পর্ক নেই।

এইক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার উদাহরণ বিবেচনা করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট বিচারকের আগ্রহ ও পারদর্শিতার বিবেচনায় তাঁকে শ্রম আদালতেই রাখা হবে। সরকারী নিয়মমতো দেশের বিভিন্ন শ্রম আদালতে তাঁকে পর্যায়ক্রমে বদলী করা হবে। এমন বিচারকের জন্য দেশে-বিদেশে প্রয়োজনমত প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করবে সরকার কিংবা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতো প্রতিষ্ঠান।

আর দেশের অর্থনীতি ও শ্রম বাজারের বিস্তার, শ্রম অধিকার নিয়ে কূটনীতি ও ভু-রাজনীতির কারণে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সস্টিটিউট এবং লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শ্রম আইন নিয়ে উপযুক্ত পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করা দরকার।

ডিএএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

শ্রম আইন প্র্যাকটিস এবং প্রাসঙ্গিক কথা : ড. উত্তম কুমার দাস, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

Update Time : ০২:০০:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

শ্রম আইন প্র্যাকটিস এবং প্রাসঙ্গিক কথা, ড. উত্তম কুমার দাস, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট:

শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন এক আন্তর্জাতিক সংস্থা আয়োজিত এক কর্মশালায় অংশ নিলাম গত ২ এপ্রিল ২০২৪।

যেহেতু আইনজীবী হিসাবে আমার কাজের প্রধানতম ক্ষেত্র শ্রম আইন, তাই আগ্রহ নিয়ে তাতে যোগ দিলাম। আরেকটি বড় কারণ, প্রতিষ্ঠানটি আমার সাবেক কর্মস্থল।

ওই অনুষ্ঠানে দৃশ্যতঃ তিন ধরণের কাজের লোকজন অংশ নিয়েছেন। প্রথমতঃ যারা মূলতঃ শ্রম আদালতে প্র্যাকটিচরত কিংবা চাকুরী-সংক্রান্ত বিষয়ের আইনজীবী। দ্বিতীয়তঃ বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষক, যারা শ্রম আইন বিষয়ে পাঠদান করেন কিংবা করতে ইচ্ছুক। এবং তৃতীয়তঃ শ্রমিকদের বিষয় নিয়ে কাজ করে এমন ক’টি এনজিওতে চাকুরীরত ব্যক্তিরা।

শ্রম আইন প্র্যাকটিচের ক্ষেত্রে প্রধানতম সমস্যাসমূহ কি তা নিয়ে যে দল-ভিত্তিক চর্চা হয় সেই গ্রুপে আমি ছিলাম।

তাতে বেশ কিছু বিষয় চিহ্নিত হয়; তা হ’ল- বিদ্যমান শ্রম আইনে কতিপয় বিষয়ে অস্পষ্টতা, অসম্পূর্ণতা কিংবা পারস্পরিক বিরোধী বিধান। যেমন-শ্রমিকের সংজ্ঞা [ধারা ২(৬৫) ও ১৭৫], অসৎ শ্রম আইনের প্রতিকারের ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ শ্রমিকের সরাসরি শ্রম আদালতে না যাওয়ার মতো বিধান (ধারা ৩১৩), শিল্প-বিরোধ নিস্পত্তির ক্ষেত্রে আইনের বিধানের অস্পষ্টতা (বিশেষতঃ সময়সীমা) ইত্যাদি।

আরেকটি বিষয় আলোচনায় আসে। শ্রম আদালতে যে সকল বিচারকগণ আসেন তাঁরা বিচার বিভাগে চাকুরীর ক্ষেত্রে সিনিয়র পর্যায়ের-আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন নিযুক্ত জেলা জজ কিংবা অতিরিক্ত জেলা জজ পর্যায়ের বিচারক। কেউ কেউ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদ মর্যাদার।

অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের শ্রম আইনের মতো বিশেষ আইনের জন্য যেইরকম স্পষ্ট ধারণা, জ্ঞান-গরিমা ও সংবেদনশীলতা দরকার তা অনেক সময় থাকেনা। তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেই। একই অবস্থা নবাগত আইনজীবীদের ক্ষেত্রে। যার জন্য দরকার বিশেষ প্রশিক্ষণ।

আবার এমনটি দেখা যায় যে, শ্রম আদালতের কোন বিচারক হয়ত শ্রম আইনের ক্ষেত্রে দক্ষ ও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, এমন সময় সরকারী নিয়মে তাঁর বদলীর আদেশ এসে যায়। তখন তাঁকে হয়ত এমন স্থানে বদলী করা হয়, যার সঙ্গে শ্রম আইনের আর কোন সম্পর্ক নেই।

এইক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার উদাহরণ বিবেচনা করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট বিচারকের আগ্রহ ও পারদর্শিতার বিবেচনায় তাঁকে শ্রম আদালতেই রাখা হবে। সরকারী নিয়মমতো দেশের বিভিন্ন শ্রম আদালতে তাঁকে পর্যায়ক্রমে বদলী করা হবে। এমন বিচারকের জন্য দেশে-বিদেশে প্রয়োজনমত প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করবে সরকার কিংবা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতো প্রতিষ্ঠান।

আর দেশের অর্থনীতি ও শ্রম বাজারের বিস্তার, শ্রম অধিকার নিয়ে কূটনীতি ও ভু-রাজনীতির কারণে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সস্টিটিউট এবং লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শ্রম আইন নিয়ে উপযুক্ত পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করা দরকার।

ডিএএম//