দিদারুল আলম দিদার:
সাবেক অতিরিক্ত বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনকে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির বেঞ্চ ১৫৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দেন। মঙ্গলবার ১৫৬ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, এ বি এম আলতাফ হোসেনকে কেন বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী করো হলো না, তার রেকর্ডে এর যথাযথ কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও তাকে স্থায়ী করার বিষয়ে সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সুপারিশ করেছিলেন।
৭ জন বিচারপতির মধ্যে ৬ জন বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ বিবেচনা করতে পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান (বর্তমান প্রধান বিচারপতি) ভিন্নমত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই রিট গ্রহণযোগ্য নয়।
রায়ে আরেক সাবেক অতিরিক্ত বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলীর ৬৭ বছর পার হয়ে যাওয়ার তার আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সাবেক অতিরিক্ত বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনকে হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে করা দুটি রিট আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আলতাফ হোসেন নিজে ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান রিট দুটি করেন। রিট দুটির শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আদালত।
২০১২ সালের ১৩ জুন এ বি এম আলতাফ হোসেনসহ ছয়জনকে দুই বছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। শপথ নেয়ার দিন থেকে ওই নিয়োগ কার্যকর হবে জানানো হয়। পরদিন তারা শপথ নেন। ওই বছরের ৯ জুন তাদের মধ্যে পাঁচজনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বাদ পড়েন এ বি এম আলতাফ হোসেন। পরে আলতাফ হোসেনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান ২০১২ সালের জুলাই মাসে একটি রিট করেন। আলতাফ হোসেন নিজে আরেকটি রিট করেন। বিচারপতি পদ থেকে বাদ পড়া ফরিদ আহমেদ শিবলী আরেকটি রিট করেন।
বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীসহ ১০ জনকে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুই বছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তারা ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন। এদের মধ্যে বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরী মারা যান। এ অবস্থায় অপর ৯ জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পাঠান তখনকার প্রধান বিচারপতি। এদের মধ্যে বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীকে বাদ দিয়ে বাকি আটজনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এরপর ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ৮ জন শপথ নেন। এ অবস্থায় বাদপড়া বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলী
স্থায়ী নিয়োগ পেতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আদালত আবেদনটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন।
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে আবেদন করেন বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলী।
এসএম/ডিএএম//
Leave a Reply