সুপ্রিমকোর্টে প্রতিনিধি :
বিভিন্ন এলাকা থেকে কুমিল্লা সদর উপজেলায় বদলি হওয়া স্বামীর ঠিকানায় ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।
১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের আনা রিটের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া আজ এ কথা জানান। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বদলীর আদেশ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করেছে। এডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, আইনে স্বামীর ঠিকানায় চাকরির সূযোগ থাকার পরও মামলা করে তাদের সে সূযোগ লাভ করতে হয়েছে। ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জন ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এখন কর্মক্ষেত্রে তারা কোনরূপ হয়রানির শিকার হবেননা বলে আশা প্রকাশ করেন এ আইনজীবী।
এডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন,আদালত ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হাইকোর্টের আদেশ গত ২৫ সেপ্টেম্বর বহাল রেখে আদেশ দেয় আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট। শিক্ষিকাদের যোগদান বন্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বিষয়টি নিয়ে ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন।
আদালত আবেদনকারীর আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলির সুযোগ আইনে দেয়া হয়েছে। তাই ঘরের বউকে সসম্মানে ঘরে তুলুন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার আবেদনটি দাখিল করেন।
শিক্ষকদের আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট আদালতের আদেশ পাওয়ার ৫ দিনের মধ্যে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা ১০ নারী শিক্ষিকাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়। বদলি করা ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জন শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা ১১ শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ করার নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে উচ্চ আদালত।
দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা ১০ নারীসহ ১১ শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে এবং কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা ১১ শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা চেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন মশিউর রহমান, ফজিলত পারভিন, উম্মে কুলছুম, দিল আফরোজ, আমিনাতুর রহমানসহ মোট ১১ জন শিক্ষক।
রিটে সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ মোট ৬ জনকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, রিটকারীরা দেশের বিভিন্ন বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা এবং উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রিটকারীদের মধ্যে একজন পুরুষ শিক্ষক এবং বাকি ১০ জনই নারী। রিটকারী মশিউর রহমানের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায়, কিন্তু নিয়োগের সময় তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলায় নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
অন্য ১০ জনই নারী শিক্ষক। তারা বিভিন্ন বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা এবং উপজেলায় নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন বদলি বন্ধ থাকায় তারা বদলি হতে পারেননি। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি করার উদ্দেশ্যে “সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা (সংশোধিত) ২০২২” নামে বদলি নির্দেশিকা জারি করেন। ওই নির্দেশিকার নির্দেশনা শিক্ষকদের তাদের স্থায়ী ঠিকানায় এবং নারী শিক্ষকদের তাদের স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলির সুযোগ প্রদান করেছে।
ডিএএম/এসএম//
Leave a Reply