Dhaka ১২:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ বলা বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি

  • Update Time : ০৩:৫০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১ Time View

মু: কাইয়ুম, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি:

সুপ্রিমকোর্টে ১৫ আগস্টের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেদেরকে ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ায় উচ্চ আদালতের দুই বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সভাপতি ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিমকোর্ট শাখার সভাপতি এডভোকেট আবদুল জব্বার ভূইয়া, সাধারণ সম্পদক এডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, আইনজীবী আবেদ রাজা, জগলুল হায়দার আফ্রিক, শাহ আহমেদ বাদল, মামুন মাহবুব, মোহাম্মদ আলীসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী।

লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, গত ১৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আয়োজিত এক শোক সভায় মাননীয় প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্য বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং ১৬ আগষ্ট জাতীয় পত্রিকা সমূহে সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে আজকে আমাদের সংবাদ সম্মেলন।

তিনি বলেন, দেশের আপামর জনগণের আশা ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল হলো বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিগণ সংবিধানের ৩য় তফসিলে বর্ণিত শপথের মাধ্যমে দেশের সংবিধান ও আইনের রক্ষন, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের অঙ্গিকার করে থাকেন। একই সঙ্গে ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহীত আচরন করার অঙ্গিকার করে থাকেন।

তিনি বলেন, গত ১৫ আগষ্টের আলোচনা সভার প্রদত্ত কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্যের কিছু কিছু অংশ বিচারপতি হিসেবে নেয়া শপথের সুস্পষ্ট লংঘন কিনা তা প্রশ্ন রাখার দাবী রাখে। সাধারণত কোন রাজনৈতিক কর্মী তার দলীয় সভায় যে ধরনের বক্তব্য প্রদান করে থাকেন, অনেক মাননীয় বিচারপতির বক্তব্যে তেমনই একজন রাজনীতিবীদের বক্তব্যের প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়।

আলোচনা সভায় মাননীয় বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবীদ” হিসেবে বিচারপতিগনকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি স্পষ্টতই দেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে শাসক দলের নেতাদের মত রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, “ইদানীং সুষ্ঠু নির্বাচন, বিদেশি প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এসব নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে ..শুধু ভোট দেওয়াই একমাত্র গনতন্ত্র নয়।’ বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে মৌলিক অধিকার জনগণের রয়েছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন ‘সারা পৃথিবীতে নির্বাচন হয় কেউ তাকিয়েও দেখেনা, নির্বাচন ঘিরে সব নজর বাংলাদেশের দিকে কেন?’

বিচারকগনের এহেন বক্তব্য কতটুকু বিচারক সুলভ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক তা সহজেই অনুমেয়। তাঁরা বিচারপতির মহত্ব ধারণ করতে পারেন কি না তা জনমনে অনেক সংশয় ও প্রশ্ন রাখছে। বস্তুত পক্ষে একজন রাজনীতিকের বক্তব্যই প্রতিধ্বনিত হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।

এদেশের জনগণের ভোটাধিকার ক্রমাগতভাবে অস্বীকার করে ২০১৪ ও ২০১৮’র মত তথাকথিত নির্বাচনের। মত করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরনী পার করার যে স্বপ্ন এই অনির্বাচিত সরকার দেখছে, গত ১৫ আগষ্টের অনুষ্ঠনে কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্যের মাধ্যমে তা উস্কে দেয়া হয়েছে বলে দেশের অনেক সচেতন মহল মনে করছেন। এর মাধ্যমে বিচারপতিগণ শাসক দলের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন বলে সচেতন অনেক নাগরিকই মনে করেন; যা শুধুমাত্র বিচার বিভাগ নয় আমাদের জাতির জন্য এক অশনি সংকেত এবং যাহা দেশের গনতন্ত্র, ন্যায় বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পরিপন্থি।

উল্লেখিত বক্তব্যের মাধ্যমে বিচারপতিগন তাদের শপথ ভংগ করেছেন বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন এবং এজন্য আইনগত ও নৈতিকভাবে তারা বিচারকার্য পরিচালনার অধিকার হারিয়েছেন বলে লিখিত বক্তৃতার বলা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই সকল স্বঘোষিত “শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ ” বিচারপতিগণকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানায় জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

সভাশেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরাম। আগামী সোমবার সুপ্রিমকোর্ট বার, ঢাকা বারসহ দেশের সকল বারে বিক্ষোভ-সমাবেশ।

এমকে/এসকে//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ বলা বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি

Update Time : ০৩:৫০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩

মু: কাইয়ুম, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি:

সুপ্রিমকোর্টে ১৫ আগস্টের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেদেরকে ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ায় উচ্চ আদালতের দুই বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সভাপতি ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিমকোর্ট শাখার সভাপতি এডভোকেট আবদুল জব্বার ভূইয়া, সাধারণ সম্পদক এডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, আইনজীবী আবেদ রাজা, জগলুল হায়দার আফ্রিক, শাহ আহমেদ বাদল, মামুন মাহবুব, মোহাম্মদ আলীসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী।

লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, গত ১৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আয়োজিত এক শোক সভায় মাননীয় প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্য বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং ১৬ আগষ্ট জাতীয় পত্রিকা সমূহে সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে আজকে আমাদের সংবাদ সম্মেলন।

তিনি বলেন, দেশের আপামর জনগণের আশা ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল হলো বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিগণ সংবিধানের ৩য় তফসিলে বর্ণিত শপথের মাধ্যমে দেশের সংবিধান ও আইনের রক্ষন, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের অঙ্গিকার করে থাকেন। একই সঙ্গে ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহীত আচরন করার অঙ্গিকার করে থাকেন।

তিনি বলেন, গত ১৫ আগষ্টের আলোচনা সভার প্রদত্ত কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্যের কিছু কিছু অংশ বিচারপতি হিসেবে নেয়া শপথের সুস্পষ্ট লংঘন কিনা তা প্রশ্ন রাখার দাবী রাখে। সাধারণত কোন রাজনৈতিক কর্মী তার দলীয় সভায় যে ধরনের বক্তব্য প্রদান করে থাকেন, অনেক মাননীয় বিচারপতির বক্তব্যে তেমনই একজন রাজনীতিবীদের বক্তব্যের প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়।

আলোচনা সভায় মাননীয় বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবীদ” হিসেবে বিচারপতিগনকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি স্পষ্টতই দেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে শাসক দলের নেতাদের মত রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, “ইদানীং সুষ্ঠু নির্বাচন, বিদেশি প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এসব নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে ..শুধু ভোট দেওয়াই একমাত্র গনতন্ত্র নয়।’ বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে মৌলিক অধিকার জনগণের রয়েছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন ‘সারা পৃথিবীতে নির্বাচন হয় কেউ তাকিয়েও দেখেনা, নির্বাচন ঘিরে সব নজর বাংলাদেশের দিকে কেন?’

বিচারকগনের এহেন বক্তব্য কতটুকু বিচারক সুলভ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক তা সহজেই অনুমেয়। তাঁরা বিচারপতির মহত্ব ধারণ করতে পারেন কি না তা জনমনে অনেক সংশয় ও প্রশ্ন রাখছে। বস্তুত পক্ষে একজন রাজনীতিকের বক্তব্যই প্রতিধ্বনিত হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।

এদেশের জনগণের ভোটাধিকার ক্রমাগতভাবে অস্বীকার করে ২০১৪ ও ২০১৮’র মত তথাকথিত নির্বাচনের। মত করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরনী পার করার যে স্বপ্ন এই অনির্বাচিত সরকার দেখছে, গত ১৫ আগষ্টের অনুষ্ঠনে কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্যের মাধ্যমে তা উস্কে দেয়া হয়েছে বলে দেশের অনেক সচেতন মহল মনে করছেন। এর মাধ্যমে বিচারপতিগণ শাসক দলের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন বলে সচেতন অনেক নাগরিকই মনে করেন; যা শুধুমাত্র বিচার বিভাগ নয় আমাদের জাতির জন্য এক অশনি সংকেত এবং যাহা দেশের গনতন্ত্র, ন্যায় বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পরিপন্থি।

উল্লেখিত বক্তব্যের মাধ্যমে বিচারপতিগন তাদের শপথ ভংগ করেছেন বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন এবং এজন্য আইনগত ও নৈতিকভাবে তারা বিচারকার্য পরিচালনার অধিকার হারিয়েছেন বলে লিখিত বক্তৃতার বলা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই সকল স্বঘোষিত “শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ ” বিচারপতিগণকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানায় জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

সভাশেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরাম। আগামী সোমবার সুপ্রিমকোর্ট বার, ঢাকা বারসহ দেশের সকল বারে বিক্ষোভ-সমাবেশ।

এমকে/এসকে//