মু: কাইয়ুম, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কালে আদালত কক্ষে আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কয়েকশ’আইনজীবী অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ওপর হামলা এবং তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের প্রহসনের বিচারের প্রতিবাদ জানান।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় সুপ্রিমকোর্ট বার ভবন থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে কয়েকশ’ আইনজীবী বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড ও ব্যানার হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বেলা সোয়া ১টার দিকে সুপ্রিমকোর্ট থেকে মিছিলটি হাইকোর্ট মাজারগেট দিয়ে রাজপথে প্রবেশ করে। বিক্ষোভ মিছিলটি মাজার গেট, কদম ফোয়ারা, জাতীয় ঈদগাহ মায়দান হয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান গেটের সামনে আসার সেখানে সমাবেশ করা নিয়ে পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। কিছু সময় পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে তর্ক এবং ঠেলাঠেলি হওয়া। বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল অভিযোগ করেন রমনা জোনের এডিসি হারুনে নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা সুপ্রিমকোর্টের প্রধান গেটে আইনজীবীদের সমাবেশ করতে বাধা দেন। তিনি বলেন, আমাদের সেখানে দাঁড়াতে বাধা দেয়া হয়। পুলিশের বাধা ও প্রচন্ড গরম ও তপ্ত রোদ উপক্ষে করে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান গেটে আইনজীবীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী। সমাবেশ পরিচালনা করেন আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মোহাম্মদ আলী প্রমূখ।

আইজীবী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। আজ দেশের সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। সেই জায়গা থেকে আদালতও রক্ষা পায়নি। আদালতের এজলাসের ভিতরে ডুকে আওয়ামী লীগ পন্থী আইনজীবীরা পুলিশ নিয়ে আমাদের আইনজীবীদের নির্বিচারে আহত করেছে। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। আর তার একমাত্র পথ হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।

সমাবেশে সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আদালতে মারামারি হচ্ছে এবং বিচারও চলছে। প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আমরা স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই। লেজুড়বৃত্তি চাই না।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রীম কোর্ট ইউনিট এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলের সাথে পুলিশের বাগবিতণ্ডাতা হয়। পুলিশের এডিসি হারুন বলে এখানে সমাবেশ করা যাবেনা সজল বলেন এখানেই সমাবেশ করবো। পুলিশকে তোয়াক্কা না করে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সরকার নির্বাচনের আগে প্রহসনের বিচার করে তড়িঘড়ি করে একটা রায় দিয়ে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে দেশের মানুষের কাছে ও বিশ্ববাসীর কাছে হেয় করার একটা পাঁয়তারা করছে। আদালতের শত শত মামলা রেখে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের মামলায় প্রতিদিন সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছ। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসে এ ধরণের নজির নেই। আমরা তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই প্রহসনের বিচার বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আইনজীবীদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সভাপতিত্বে ও এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ হয়।

এমকে/এসএম//