মু: কাইয়ুম, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি :
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিমকোর্ট বার) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনজীবীরা আজও বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে।
নজিরবিহীন ভোট ডাকাতি এবং আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচন ২০২৩-২০২৪ এ পুলিশ দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামীপন্থী একক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ আইনজীবীদের।
বিভিন্ন আইনজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিক্ষোভ-সমাবেশে বিপুল সংখ্যক সাধারণ আইনজীবী অংশ নেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সুপ্রিমকোর্ট বার এর সাত বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, এডভোকেট আবেদ রাজা, সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট মামুন মাহবুব, এডহক কমিটির আহ্বায়ক শাহ্ আহমদ বাদল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিট এর সভাপতি এডভোকেট আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সুপ্রিমকোর্ট বার এর সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মো.রুহুল কুদ্দুস কাজল, এডভোকেট মোহাম্মদ আলী, এডভোকেট রফিকুল ইসলাম মন্টু, এডভোকেট আবদুল্লাহ আল মাহবুব, এডভোকেট গাজী তৌহিদুল ইসলাম, এডভোকেট মোর্শেদ আল মামুন লিটনসহ কয়েকশ’আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সভাপতি এডভোকেট আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া, সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
এক পর্যায়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে দুই পক্ষের আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে পরস্পবিরোধী স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে একজন আইনজীবী অহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আইনজীবীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা ভোট চোর, ভোট চোর স্লোগান দেন। অপর দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও পাল্টা স্লোগান দেন। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগানের একপর্যায়ে ঠেলাঠেলি ধাক্কাধাক্কি, হট্টগোল শুরু হয়। এতে আদালত অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুর পোনে ২টার দিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা স্লোগান দিয়ে সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে থেকে চলে যান। তারা আদালত সুপ্রিমকোর্ট বার ভবন থেকে অঙ্গনে বিক্ষোভ করেন। অপর দিকে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন।
জাতীয়তবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি, প্রতিবাদ সমাবেশ করছি।
সজল বলেন, আমরা যখন মিছিল নিয়ে দোতলা দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আওয়ামীপন্থীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখুক হামরা কারা করেছে, তা হলেই হবে।
এডহক কমিটির বিক্ষোভ, সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির মানববন্ধন: ‘ভোট ডাকাতি ও আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে’ বুধবার আদালত অঙ্গনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও সাধারণ সদস্যদের তলবি সভায় গঠিত এডহক কমিটির নেতারা একত্রে সম্মিলিতভাবে বিক্ষোভ করেছেন। অপরদিকে ১৫ ও ১৬ মর্চ সুপ্রিমকোর্ট বারের প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে এবং সমিতির অফিস দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এসসিবিএ সংবিধান সংরক্ষণ কমিটি। বেলা ১টায় সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও এডহক কমিটির নেতাদের সাথে তারা বিক্ষোভে অংশ নেন।
অপর দিকে এডহক কমিটি ও সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির নেতা শাহ আহমেদ বাদল, সৈয়দ মামুন মাহবুব, এবিএম রফিকুল হক তালকুদার রাজা, মির্জা আল মাহমুদ, জুলফিকার আলী জুনুসহ আইনজীবীরা সম্মিলতভাবে বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিক্ষোভ শেষে সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা আইনজীবীরা একই মোহনায়। আমরা সবাই আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। আমরা সবাই ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে। ঐক্যবদ্ধভাবে এই চোর ডাকাতদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ১৫ ও ১৬ মর্চ সুপ্রিম কোর্ট বারে কোনো নির্বাচন হয়নি। তারা সুপ্রিম কোর্টকে, আইনজীবীদেরকে এবং আদালত অঙ্গনকে কলঙ্কিত করেছে। আজ আমরা স্বাধীন বারের জন্য ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। ভোট ডাকাতদের থেকে সুপ্রিম কোর্ট বারকে মুক্ত করতে হবে।
এসসিবিএ সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, আগামী কিছু দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক বিবেকবান আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বারকে বাঁচানোর জন্য চলে আসবে। আগামীতে আরো অন্যান্য সংগঠন মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার হবে। তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, সুপ্রিমকোর্ট বারের নির্বাচনসহ কোনো নির্বাচনই নিরাপদ নয়।
এমকে/ডিএএম//
Leave a Reply