মু: কাইয়ুম, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি:
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিমকোর্ট বার) একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী ঘোষিত সমিতির নতুন কমিটির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল ইফতার পার্টির আহ্বানের প্রতিবাদে আদালত অঙ্গনে কালো পতাকা মিছিল করেছে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা।
আইনজীবীদের এ প্রতিবাদী কর্মসূচীতে জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরাম নেতৃবৃন্দ কালো পতাকা মিছিলে নেতৃত্ব দেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনের সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ করেছেন।
এদিকে সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনের সামনে একটি প্রাইভেট কারে সরকার সমর্থকরা লাঠি বা ক্রিকেট স্টাম্প রাখার অভিযোগে দুপুর আড়াইটার দিকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হয়।
এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সরকার সমর্থক এক আইনজীবীর গাড়িতে লাঠিসোটা রয়েছে। আমাদের আইনজীবীরা দেখতে পেয়ের ছবি তুলতে গেলে তারা বাধা দেয়।
তবে আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা দাবি করেন ওই প্রাইভেট কারে কিছু নেই। এ নিয়ে তারা ঝমেলা পাকানোর চেষ্টা করছে। এ নিয়ে প্রায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলার পর একপর্যায়ে আইনজীবীরা ওই স্থান ত্যাগ করেন।
এ দিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় কয়েকশো আইনজীবী সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি এবং হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করেন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত কালো পতাকা মিছিলে কয়েকশো আইনজীবী অংশ নিয়ে সুপ্রিমেকোর্ট অঙ্গনে ‘ভোট চোর’ ‘ভোট চোর’ বলে স্লোগান দেন। তারা সমিতির অনির্বাচিত কমিটির ইফতার পার্টিতে অংশ না নিতে প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানান।
জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সাবেক সাত বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধান বিচারপতির প্রতি আনুরোধ জানাতে চাই। পুলিশ যখন গত ১৫ মার্চ আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করলে তখন আপনারা বলেছন, এখানে আমাদের কিছু করণীয় নেই। তিনি বলেন, আজ যদি চোরদের স্বীকৃতি দিতে আসেন তাহলে আমাদের ও কিছু করার থাকবে না। তিনি আরো বলেন, আপনারা তাদের স্বীকৃতি দেবেন না। তা হলে জাতীর কাছে ভিন্ন বার্তা যাবে। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টে গুন্ডামী চলবে না, ভোট চুরি চলবে না। তিনি এটর্নি জেনারেলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনার ডিএজি-এএজিদের গুন্ডামী থামান। তা না হলে অপনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে বাধ্য হব।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ধারাবাহিকতায় আজকে ফকির-দুলাল ভোট ডাকাতি করে সুপ্রিমকোর্টকে কলঙ্কিত করেছে। সুপ্রিমকোর্টকে কলঙ্কিত করতে দেয়া হবে না। তাদের চেয়ার থেকে সরতে হবে। আমরা ভোট চোরদের প্রতিহত করব।
সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্ট অঙ্গনে কালো পতাকা মিছিলে অংশ নেন আইনজীবী শওকাতুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, মো: আক্তারুজ্জামান, রাগীব রউফ চৌধুরী, মোরশেদ আল মামুন লিটন, সুপ্রিমকোর্ট বারের বর্তমান ট্রেজারার মো: কামাল হোসেন, সহ-সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, মো: মাহবুবুর রহমান খান, জিয়া উদ্দিন জিয়া, রেজাউল করিমসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী।
সুপ্রিমকোর্ট বারে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী ঘোষিত সমিতির নতুন কমিটির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল বৃহস্পতিবার ৬ এপ্রিল ইফতার পার্টির আহ্বান করেছেন।
অপর দিকে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলামের সভাপতিত্বে সমিতির সাধারণ সদস্যদের এক তলবি সভায় গত ৩০ মার্চ গঠিত সমিতির অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির (এডহক কমিটি) আহবায়ক মহসিন রশিদের ও সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদলও সুপ্রিমকোর্ট বারের সদস্যদের জন্য একই সময়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে একই স্থানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করেছে।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা অনির্বাচিতদের ইফতার পার্টি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ডিএএম/এসএম//
Leave a Reply