Dhaka ১২:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন বিষয়ে হাইকোর্টের রায়

  • Update Time : ০২:২৬:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩
  • / ০ Time View

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি :
কর্মস্থল, বিমানবন্দর , বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিংমলের মতো পাবলিক প্লেস এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ (এ্যাবসিলিউট) ঘোষণা করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন এডভোকেট তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

রায়ের পর এডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, মা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোপূর্বে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর আজ হাইকোর্ট এ যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করলেন। আমাদের সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদে স্বীকৃত অন্যতম মৌলিক অধিকার জীবনের অধিকার বিষয়ে এ রায় নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক রায়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ব্রেস্টফিডিং রুম ইতোমধ্যেই স্থাপিত হয়েছে। এই যুগান্তকারী রায়ের পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে কর্মজীবী নারীরা শিশুদের কর্মক্ষেত্রে রেখেই স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন। রিট পিটিশনার এ আইনজীবী বলেন, কর্মস্থল, বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, শপিংমলসহ সব জনবহুল স্থানে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর নিরাপদ পরিবেশ সম্বলিত ব্রেস্ট ফিডিং রুম ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপন সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ সৃষ্টি করবে, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয় হবে।

কর্মস্থল, এয়ারপোর্ট, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিংমলের মতো জনসমাগমস্থলে এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর কর্মক্ষেত্র, শপিংমল, এয়ারপোর্ট, বাসস্টপ, রেলওয়ে স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি দায়ের করা হয়।
রিট আবেদনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনও সংযুক্ত করা হয়।

জনস্বার্থে ৯ মাস বয়সী শিশু উমাইর বিন সাদী ও তার মা অ্যা এডভোকেট ইশরাত হাসানের দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে এ রুল জারি করেন আদালত।

ইশরাত হাসান বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে ৯ মাস বয়সী কোনো শিশু এই প্রথম পিটিশনার হয়েছে। ছোট্ট শিশুর রিট পিটিশনার হতে আদালতের অনুমতিও নিতে হয়েছিল ওই সময়ে। পরে ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট সারা দেশের কলকারখানা ও মিলগুলোতে দুই মাসের মধ্যে ব্রেস্ট ফিডিং রুম স্থাপনে নির্দেশ দেন।

রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব, বিমান ও পর্যটন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।

রিটে বলা হয়, এমন পরিবেশে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করতে হবে যেখানে কোনো মা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে কোনো অস্বস্তি বোধ করবে না বা যৌন হয়রানির শিকার হবে না। সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

অনেক কর্মস্থলে বা বাস, ট্রেন স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার না থাকায় মায়েদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিরাপদ পরিবেশের অভাবে ও যৌন হয়রানির ভয়ে মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ পান করাতে পারেন না। অথচ একজন শিশুর মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মায়ের বুকের দুধ। আমার মতো হাজার হাজার মা এ সমস্যার সম্মুখীন হন।

উমাইর মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল কক্সবাজারে। সমুদ্র সৈকতে বেড়ানো শেষে ঢাকায় ফেরার পথে কক্সবাজার বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। সেখানে অনিবার্য কারণে ফ্লাইটে কয়েক ঘণ্টার বিলম্ব হয়। কিন্তু সেখানেই বিপদে পড়ে সে। প্রচুর ক্ষুধায় কান্নাজুড়ে দেয়। শিশুটির কান্না থামাতে মা বুকের দুধ খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। কিন্তু তার মা শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর কোনো পরিবেশই পাচ্ছিলেন না। পরে ঢাকায় এসে শিশু উমাইরকে নিয়ে তার মা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।

ডিএএম/এসএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন বিষয়ে হাইকোর্টের রায়

Update Time : ০২:২৬:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি :
কর্মস্থল, বিমানবন্দর , বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিংমলের মতো পাবলিক প্লেস এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ (এ্যাবসিলিউট) ঘোষণা করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন এডভোকেট তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

রায়ের পর এডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, মা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোপূর্বে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর আজ হাইকোর্ট এ যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করলেন। আমাদের সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদে স্বীকৃত অন্যতম মৌলিক অধিকার জীবনের অধিকার বিষয়ে এ রায় নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক রায়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ব্রেস্টফিডিং রুম ইতোমধ্যেই স্থাপিত হয়েছে। এই যুগান্তকারী রায়ের পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে কর্মজীবী নারীরা শিশুদের কর্মক্ষেত্রে রেখেই স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন। রিট পিটিশনার এ আইনজীবী বলেন, কর্মস্থল, বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, শপিংমলসহ সব জনবহুল স্থানে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর নিরাপদ পরিবেশ সম্বলিত ব্রেস্ট ফিডিং রুম ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপন সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ সৃষ্টি করবে, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয় হবে।

কর্মস্থল, এয়ারপোর্ট, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিংমলের মতো জনসমাগমস্থলে এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর কর্মক্ষেত্র, শপিংমল, এয়ারপোর্ট, বাসস্টপ, রেলওয়ে স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি দায়ের করা হয়।
রিট আবেদনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনও সংযুক্ত করা হয়।

জনস্বার্থে ৯ মাস বয়সী শিশু উমাইর বিন সাদী ও তার মা অ্যা এডভোকেট ইশরাত হাসানের দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে এ রুল জারি করেন আদালত।

ইশরাত হাসান বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে ৯ মাস বয়সী কোনো শিশু এই প্রথম পিটিশনার হয়েছে। ছোট্ট শিশুর রিট পিটিশনার হতে আদালতের অনুমতিও নিতে হয়েছিল ওই সময়ে। পরে ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট সারা দেশের কলকারখানা ও মিলগুলোতে দুই মাসের মধ্যে ব্রেস্ট ফিডিং রুম স্থাপনে নির্দেশ দেন।

রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব, বিমান ও পর্যটন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।

রিটে বলা হয়, এমন পরিবেশে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করতে হবে যেখানে কোনো মা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে কোনো অস্বস্তি বোধ করবে না বা যৌন হয়রানির শিকার হবে না। সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

অনেক কর্মস্থলে বা বাস, ট্রেন স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার না থাকায় মায়েদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিরাপদ পরিবেশের অভাবে ও যৌন হয়রানির ভয়ে মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ পান করাতে পারেন না। অথচ একজন শিশুর মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মায়ের বুকের দুধ। আমার মতো হাজার হাজার মা এ সমস্যার সম্মুখীন হন।

উমাইর মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল কক্সবাজারে। সমুদ্র সৈকতে বেড়ানো শেষে ঢাকায় ফেরার পথে কক্সবাজার বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। সেখানে অনিবার্য কারণে ফ্লাইটে কয়েক ঘণ্টার বিলম্ব হয়। কিন্তু সেখানেই বিপদে পড়ে সে। প্রচুর ক্ষুধায় কান্নাজুড়ে দেয়। শিশুটির কান্না থামাতে মা বুকের দুধ খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। কিন্তু তার মা শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর কোনো পরিবেশই পাচ্ছিলেন না। পরে ঢাকায় এসে শিশু উমাইরকে নিয়ে তার মা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।

ডিএএম/এসএম//