সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি-রায়-আদেশে বাংলা ভাষার চর্চা বাড়ছে
- Update Time : ০৫:৩১:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / ১ Time View
দিদারুল আলম : দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টর হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে মামলায় শুনানি রায় ও আদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার চর্চা বাড়ছে।
আগে বাংলায় রায় ও আদেশের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলা ভাষায় আদেশ ও রায় দেয়ার চর্চা বাড়ছে। দিনে দিনে এ চর্চা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উচ্চ আদালতে বাংলায় রায় দেয়া হয় একটি বেঞ্চে নব্বইয়ে দশকে। প্রয়াত বিচারপতি এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী নব্বইয়ের দশকে হাইকোর্টে বাংলায় আদেশ দেয়া শুরু করেন। এরপর সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিচারপতি হামিদুল হক, বিচারপতি আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েকটি রায় বাংলায় দেন। বিচারপতি খায়রুল হক সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল, স্বাধীনতার ঘোষণা, স্বাধীনতাযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ, চার নদী সংরক্ষণসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় বাংলায় দেন।
বর্তমানে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগে) রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালে বাংলায় রায় লিখেছেন। হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি থাকাকালে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম বাংলায় অসংখ্য রায় ও আদেশ দিয়েছেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথেরও (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) হাইকোর্টে থাকাকালে মামলায় বাংলা রায় দেয়ার নজির রয়েছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিষ্টার আনোয়ারুল ইসলাম শাহীন বলেন, আমাদের মাতৃভাষা বাংলার রয়েছে সমৃদ্ধ ও গৌরবের ইতিহাস। দেশের প্রচলিত আইনগুলো বাংলা ভাষায় নিশ্চিত করতে হবে। আদালতের রায় ও আদেশ বাংলায় হলে সাধারণ মানুষেরও বুঝতে সুবিধা হয়। উচ্চ আদালতে এখন বাংলায় রায় দেয়া বাড়ছে। ফলে বিচারপ্রার্থীরা স্বাচ্ছন্দ অনুভব করছেন। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতসহ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাকে আরো সমৃদ্ধ করতে এর চর্চা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ইংরেজী, স্প্যানিস, চাইনিজ, জাপানিজ, জার্মানি, আরবি, হিন্দি ভাষা যেমনি বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে তেমনি আমরাও পারি বাংলাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো সমৃদ্ধ করতে। শিল্প-ব্যবসা-বানিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশীরা বিশ্বমন্ডলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এবং দিনে দিনে আরো এগিয়ে যাচ্ছেন। এদেশে যেমন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়ছে তেমনি বাংলাদেশীরাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করছেন। এ সূযোগে বাংলাকেও পৌছেঁ দিতে হবে বিশ্বমন্ডলে। আফ্রিকার সিয়েরা লিওনে বিশ্ব শান্তি মিশনে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশেী সেনারা সেখানে বাংলাকেও পৌছেঁ দিয়েছেন। এ উদাহরণ তুলে ধরে ব্যারিস্টার শাহিন বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি সাফল্যেরে উদহারণ। এটি আমাদের অনুসরণ করতে হবে। ইংরেজীসহ বিভিন্ন বিদেশী ভাষা রপ্ত করার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে প্রবণতা রয়েছে। বিশ্বায়নের যুগে এটিও প্রয়োজন। পাশাপশি মাতৃভাষা বাংলার চর্চা ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুদৃঢ় করতে মনোযোগী হতে হবে আমাদের সকলকে। এতে করে বিশ্বমন্ডলে আমাদের ঐতিয্য ও সংস্কৃতি আরো সমৃদ্ধ হবে।