সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক:
২০১৩ সালের এপ্রিলে চট্রগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে বিএনপি-জামায়াতের হরতালের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলায় ট্রিপল মার্ডার মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে নিয়মিত আদালতের স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে আনা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই মামলার কয়েকজন আসামিদের আনা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এবং বিচারপতি খোন্দকার খোন্দকার দিলীরুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। তিনি আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল চট্রগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে বিএনপি জামায়াতের হরতালের ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আয়োজিত আওয়ামী লীগের মিছিলে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। সেদিন দেড় শতাধিক মোটরসাইকেল, ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি, পাঁচটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার, তিনটি পিকআপ ও চারটি চাঁদের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলায় আহত হন আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী। হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের তিন নেতাকর্মীকে। তারা হলেন- ফারুক ইকবাল বিপুল (৩৯), মো. রুবেল (২২) ও ফোরকান উদ্দিনকে (২৭)। ওই ঘটনায় ভুজপুর থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় ১৬ হাজার ৪৭১ জনকে। এর মধ্যে ৪৭১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকিরা অজ্ঞাতপরিচয় আসামি। মামলায় আসামিদের মধ্যে ছিলেন ভুজপুর থানা জামায়াতের সাবেক আমির শফিউল আলম নুরী ও ফটিকছড়ি উপজেলা জামায়াতের আমির হাবিব আহমেদ। এ পাঁচ মামলার মধ্যে এক মামলায় ২০১৫ সালের ৩০ জুন জামায়াতের সাবেক আমির শফিউল আলম নুরীকে প্রধান আসামি করে ২৭৮ জনের চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে চট্রগ্রামের দায়রা জজ আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর বিচারের জন্য মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠায়। দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী ওই ট্রাইব্যুনাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামি শফিউল আলম নুরী সহ আরও কয়েকজন আসামি মামলাটি পুনরায় দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর আবেদন করেন। সে আবেদন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করেন। দ্রুত বিচার আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে শফিউল আলম নুরীসহ কয়েক আসামি হাইকোর্টে রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানান, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১৩৫ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে নাই বলে মামলাটি আগের আদালতে ফেরত পাঠাতে আবেদন করা হয়েছিল। সে আবেদন খারিজের পর আসামিরা হাইকোর্টে রিভিশন করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আসামি পক্ষের আবেদন খারিজ করেন। এখন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার চলতে কোন বাধা নেই।
ডিএএম/এসএম//
Leave a Reply