নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের স্মরণে শোকবহি উন্মোচন করেছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি।
সোমবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির শোকবহি উন্মোচন করে তিনি প্রথম আইনাজ্ঞনের এই প্রিয় মানুষ সম্পার্কে তার মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।
শোক বইতে তিনি লেখেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন স্যার ছিলেন আইন জগতের দিকপাল। এই উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ আইনজীবীদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনবিদ ছিলেন তিনি। তার আইনীপেশায় এই দেশের রাষ্ট্র, আইনজীবীসহ বহু সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছে। তার অবদান এই দেশের মানুষ কখনো ভেুলতে পারবে না। আমি তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। আল্লাহ তাকে যেন বেহস্তবাসী করেন।
সভাপতির পর শোক বইতে প্রিয় আইনজীবী সম্পর্কে লেখেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নুর দুলাল। এরপর সাধারণ আইনজীবীরা শোক বইতে তাদের প্রিয় মানুষ খন্দকার মাহবুব হোসেন সম্পার্কে তাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও স্মৃতির কথা তুলে ধরেন।
শোক বই উন্মোচনের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির।
তিনি বলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন আমাদের অভিভাবক ছিলেন, আইন জগতের দিকপাল ছিলেন। তিনি আমাদের অনুস্মরণীয়, আমরা তাকে অনুস্মরণ করি। ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে তার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন, সেজন্য আজকে আমরা এই শোক বই উন্মোচন করেছি।
আইনজীবীদের প্রিয় মানুষ খন্দকার মাহবুব হোসেন সম্পার্কে বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘তিনি ছিলেন একজন গণতন্ত্র পুজারী মানুষ। মৃত্যু প্রাক্কালে বৃদ্ধ বয়েসেও তিনি গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশ নিয়ে জেলে গেছেন। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন কায়েমের জন্য তিনি আমৃত্যু চেষ্টা করেছেন।’
এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেনের রুহের মাগফেরাত কামনা করে আইনজীবীরা দেয়া করেন। আইনজীবী আবেদ রাজা দোয়া পরিচালনা করেন। এসময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মো. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, শাহ মনজুরুল হক, মো. শিশির মনির, মাসুদ রানাসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। খন্দকার মাহবুব হোসেন এন্ড অ্যাসোসিয়েটন শোকবহি উন্মোচনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ৩১ ডিসেম্বর রাত পোনে ১১টা রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন ১৯৩৮ সালের ২০ মার্চ বরগুনার বামনায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা খন্দকার আবুল হাসান ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। ১৯৫৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে আইন পাস করে তিনি আইন পেশায় যুক্ত হন। ১৯৮৮ সালের ১৭ জুলাই তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে চারবার নির্বাচিত হন।
এছাড়াও খন্দকার মাহবুব হোসেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইবার দায়িত্ব পালন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে করেছেন অধ্যাপিকা ফারহাত হোসেনকে। দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক তিনি। আইনজীবী হিসেবে তিনি অসংখ্য যুগান্তকারী মামলা পরিচালনা করেছেন।
ডিএএম/কেকে//
Leave a Reply