নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতিকে আজ সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
আপিল বিভাগের এক নম্বর এজলাসে এটর্নি জেনারেল অফিস ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে তাদের এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সংবর্ধনায় নতুন তিন বিচারপতির জীবন তুলে ধরে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিমকোর্ট বার) সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
সংবর্ধনার জবাবে বক্তব্য দেন আপিল বিভাগে নতুন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।
আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে নিজের আগামীর পথচলা আনন্দময় হবে এ আশা প্রকাশ করে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম বলেন, আপনাদের সবার প্রত্যাশা পূরণে শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, হাইকোর্ট বিভাগে দীর্ঘ ১৯ বছর বিচারকার্য পরিচালনাকালে সব আইনজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যক্তিগত স্টাফসহ সবার যে সহযোগিতা পেয়েছি আশা করি ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস মৃক্তিযুদ্ধ ও মহান স্বাধীনতাসহ এ রাষ্ট্রের যা কিছু অর্জন তার পেছনে দৃশ্যমান ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুদৃঢ় ও আদর্শিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব। রাষ্ট্রের সব স্তরে নেতৃত্বের জায়গাটি আদর্শিক ও নৈতিকভাবে সঠিক ও সুদৃঢ় হলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। অনুরাগ ও বিরাগের ঊর্ধ্বে উঠে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক ধারায় সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের আর্থ-সামাজিক ও মানবসম্পদের উন্নয়ন, রাষ্ট্রের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠমোগত উন্নয়ন, জাতিগতভবে আমাদের জন্মের ইতিহাস, ‘জাতির পিতা ও বাংলাদেশে’ এসব জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্থায়িত্বকরণ অপরিহার্য। তিনি বলেন, পরিবার থেকে রাষ্ট্রের তিনটি অংশেই সাহসী, বিচক্ষণ, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নির্লোভ, ত্যাগী, আদর্শিক, সৎ নেতৃত্ব আজ ভীষণ প্রয়োজন। একটি জনকল্যাণকর সুখী-সমৃদ্ধশালী গণতান্ত্রিক উন্নত সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপকে স্থায়ী করতে স্বাধীন-স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেন, বিশ্বাস করি ঐক্যবদ্ধ কাজ যে কোনো ধরনের সংকট দূরীভূত করে সমাজকে পরিচ্ছন্ন করে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর এজন্য প্রয়োজন মানবিক ভ্রাতৃত্ববোধ। সেই সঙ্গে হতে হবে নির্লোভ ও ত্যাগী। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সেই আদর্শের পথেই আমাদের উজ্জ্বীবিত করে গেছেন। আমরা প্রত্যেকেই তার আদর্শ ধারণ এবং লালন করে নিজেকে স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারি। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কর্মজীবনের আগামী সময়টুকু দেশ ও জাতির সেবায় বিলিয়ে দিতে চাই। সততা, কর্তব্য-নিষ্ঠা আর পরিশ্রম দিয়ে পূর্বের মতোই নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই এই মহান পেশায়। আল্লাহ্ পাক সহায় হোন।
এসময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিগণ ও সিনিয়র এডভোকেটসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতিকে গত ৮ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে ওইদিনই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নিয়োগের দিন বিকেলে সুপ্রিমকোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে তাদের শপথগ্রহণ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি ছিলেন। নতুন তিন বিচারপতি নিয়োগের মাধ্যমে আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াল এখন নয় জনে।
ডিএএম/এসএম//
Leave a Reply