1. newsroom@saradesh.net : News Room : News Room
  2. saradesh.net@gmail.com : saradesh :
সোহরাওয়ার্দী-পল্টন ঘিরে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ - সারাদেশ.নেট
শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সরকারি খরচায় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে ৩০৪৮ মামলায় আইনি সহায়তা শ্রম আইন প্র্যাকটিস এবং প্রাসঙ্গিক কথা : ড. উত্তম কুমার দাস, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করতে চায় রোমানিয়া কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকা’র ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম আপিল বিভাগে ভ্যাকেশন জাজ মনোনীত আপিল বিভাগের জেষ্ঠ্য বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কারামুক্ত হলেন আইনজীবীদের নেতা ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বেসিক প্রিন্সিপালস্ অফ ডেন্টাল ফার্ফাকোলজি এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ ‘ইতালিয়ান ভাষার’ ওপর পরীক্ষা উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত ইতালিয়ান ভাষা শিক্ষাকোর্স ও পরীক্ষা কেন্দ্র উদ্বোধন বুধবার

সোহরাওয়ার্দী-পল্টন ঘিরে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ

  • Update Time : বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২

সারাদেশ ডেস্ক:
১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আর এ সমাবেশ তারা করতে চায় নয়াপল্টনে।

তবে সরকার নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দিতে নারাজ। তবে..
• ১০ ডিসেম্বর কর্মসূচি রাখছে না আওয়ামী লীগ
• পল্টনের বিষয়ে অনড় বিএনপি
• বিএনপি বলছে সরকারের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে
• আওয়ামী লীগ বলছে দুরভিসন্ধি আছে বিএনপির
• দিন যতই এগোচ্ছে, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছেই

গত কয়েকদিন ধরেই রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে ‘১০ ডিসেম্বর।’ এ দিন ঢাকায় ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি। আর এ সমাবেশ তারা করতে চায় নয়াপল্টনে। এতে তারা ১০ লাখ লোকের জমায়েত করতে চায়। তবে সরকার নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দিতে নারাজ, সরকার চায় বিএনপি এ সমাবেশ করুক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বিএনপির এ সমাবেশের আগের দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তবে সোহরাওয়ার্দীতে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলনের যে তারিখ নির্ধারিত ছিল তা পরিবর্তন করে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে-বিএনপিকে সহযোগিতা করতেই ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

১০ ডিসেম্বর ঘিরে সব আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে বিএনপির এই দিনের সমাবেশের ভেন্যু। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে জনভোগান্তি এড়িয়ে বিএনপি যেন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে পারে, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ। বিএনপির সমাবেশের সুবিধা বিবেচনায় ৮ ও ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে সংগঠনটির সম্মেলন হবে ৬ ডিসেম্বর। সম্মেলনের পরপরই ভেঙে ফেলা হবে মঞ্চ। বিএনপির সমাবেশের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। তবে বিএনপির নেতারা বলছে, উদ্যানে সমাবেশ করতে দেয়ার পেছনে সরকারের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। তারা নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়। ফলে দিন যতই এগুচ্ছে, ততই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে অনড় দলটির শীর্ষ নেতারা।

এরই মধ্যে ২৬ শর্তে আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
সমাবেশ করার শর্তাবলী-

১। এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২। স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪। নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশগেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভেহিক্যাল স্ক্যানার/সার্চ মিররের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
৮। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।
১০। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১১। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
১২। আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১৩। ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য দেওয়া বা প্রচার করা যাবে না।
১৪। অনুমোদিত সময়ের মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৫। সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৬। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭। পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-সোটা, রড ব্যবহার করা যাবে না।
১৮। আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৯। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
২০। উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য দেওয়া বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২১। মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
২২। পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
২৩। সমাবেশস্থলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
২৪। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক সমাবেশ পরিচালনা করতে হবে।
২৫। উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৬। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

গত ২৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। সরকার কখনও অনুমতি দেয়, কখনও দেয় না-এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, অনেক সময় অনুমতি দিলেও আক্রমণ করছে। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বাধা-বিপত্তি দিলেও কর্মসূচি থাকবে। সমাবেশ ঘিরে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে সরকার, পরিবহন ধর্মঘট ডাকে। যেই বিএনপির সমাবেশ শেষ তাদের ধর্মঘটও শেষ।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বলছেন, বিএনপির সমাবেশের উদ্দেশ্যটাই খারাপ। উদ্দেশ্যটা হলো-স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করা, নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসন্ত্রাস, পেট্রল বোমা নিক্ষেপ, মানুষ পুড়িয়ে মারা। যে ঘটনাগুলো তারা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে ঘটিয়েছে। একইভাবে তারা আবার শুরু করার পাঁয়তারা করছে। তাদের লক্ষ্য তো দেশের মানুষের উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, দারিদ্র্য দূরীকরণের ব্যাপারে যে লড়াই সেটা তো এদের (বিএনপি) লক্ষ্য না। এদের লক্ষ্য হলো দেশের মানুষের শান্তি দূর করে আতঙ্কিত করা, ভয়-ভীতি দেখানো, উল্টো পথে ক্ষমতায় যাওয়া।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপিকে সহযোগিতা করা ও তাদের জনসমাবেশ ভালো জায়গায় করার জন্য ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ৮ ও ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৬ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ, আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) চান বিএনপি জনসমাবেশ ভালোভাবে করুক।

১০ ডিসেম্বর ঘিরে আওয়ামী লীগ নির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি না দিলেও রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতীম ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সক্রিয় থাকার নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। তবে বিএনপির গণসমাবেশের আশপাশে নেতাকর্মীদের অবস্থান না করতেও বলেছেন দলের হাইকমান্ড। গত ২৮ নভেম্বর দিনাজপুরে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশে বাধা দেয়া হবে না। গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা উসকানি দেবেন না। উসকানি দিলে কিন্তু খবর আছে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা মাঠ ছেড়ে দিয়ে সতর্ক পাহারায় থাকবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি বলে আমরা তাদের সমাবেশে বাধা দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের সমাবেশ দিয়েছি ৮ ডিসেম্বর। নেত্রী বললেন দরকার নেই। তারা সমাবেশ করুক। আমরা ছাত্রলীগের সমাবেশ ৬ তারিখে এগিয়ে এনেছি। তবে এটি বিএনপির আন্দোলনের ফসল নয়, এটি শেখ হাসিনার উদারতা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখল ইসলাম আলমগীর কুমিল্লার গণসমাবেশে বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নয়াপল্টনেই হবে। ১০ ডিসেম্বরে ঢাকার গণসমাবেশে তারা নাকি আমাদের পূর্বাচলে পাঠাবে, তারপর বললেন ইজতেমা ময়দানে। এখন আরেকটু এগিয়ে এলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আমরা বলি, আরেকটু এগিয়ে আসুন, তা ছাড়া উপায় নেই। এগিয়ে আসতেই হবে। নয়াপল্টনেই সমাবেশ হবে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোনো রাজনৈতিক দলের একার নয়। সেখানে দেশের যেকোনো রাজনৈতিক দল নিজেদের সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করতে পারে। শান্তিপূর্ণভাবে কোনো দল সেখানে সমাবেশ করলে আওয়ামী লীগের আপত্তি নেই। তাদের দাবি, শহরের যে কোনো স্থানে বড় সমাবেশ হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়। দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সেই বিবেচনায় সব দলের উচিত উদ্যানে সভা-সমাবেশ করা।

ডিএএম/কেকে//

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *