নিজস্ব প্রতিবদেক:
শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে সিলেটের ঐতিহাসিক আলীয়া মাদরাসা মাঠে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে শুক্রবার রাতেই জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা পৌঁছেছেন সভাস্থলে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার নেতা-কর্মীরা সিলেট মাঠে এসে পৌঁছেছেন। পথে পথে বাধা পেরিয়ে সিলেট অভিমুখে এখন লাখো মানুষের ঢল নামছে। হাজারো মটর সাইকেলে সমাবেশমূখী কর্মীরা।
শুক্র ও শনিবার দুই দিনের বাস ধর্মঘটের কারণে সড়কপথের ধর্মঘট এড়িয়ে সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে নৌপথে এসেছেন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
নৌপথে ধর্মঘট না থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সিলেট নগরের কানিশাইল মজুমদার পাড়া খেয়াঘাটে আসে আটটি বাল্কহেড। প্রতিটি বাল্কহেডে ৮০ থেকে ১০০ জন করে নেতা-কর্মী সিলেটে পৌঁছান। সড়কপথের এক থেকে দেড় ঘণ্টার পথ নৌপথে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাগছে বলে জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।
ওই খেয়াঘাটে আগে থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী। সুনামগঞ্জের আটটি বাল্কহেড ঘাটে পৌঁছালে হাততালি ও স্লোগান দিয়ে নেতা-কর্মীদের স্বাগত জানান তারা।
ছাতক মোল্লাপাড়া থেকে আসা নৌকাচালক আবদুল গফুর বলেন, সকাল ১০টায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন। বেলা সাড়ে ৩টায় সিলেটের ঘাটে এসে পৌঁছান। সিলেট পৌঁছানোর আগে লামাকাজি এলাকায় পুলিশ নৌকা থামাতে বলেছিল। কিন্তু তারা নৌকা থামাননি।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাজিদপুর গ্রামের বাসিন্দা শামসুল হক বলেন, গাড়ি বন্ধ করা হয়েছে। বাধ্য হয়েই নৌকা নিয়ে আসতে হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘যত বাধা আসুক, আমরা দমব না। সিলেটের সমাবেশ সফল হবেই।’
সিলেটে প্রথমে ধর্মঘট ডাক দেয়া হয়েছিল শুধু শনিবার অর্থাৎ গণসমাবেশের দিন। এই এক দিনের ধর্মঘট হঠাৎ নেয়া হলো দুই দিনে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই দিন বন্ধ থাকবে পরিবহন। হবিগঞ্জ জেলা আরো একধাপ এগিয়ে। তারা ডাক দিয়েছে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট।
এদিকে শত বাধা পেরিয়ে প্রায় আট হাজার মোটরসাইকেলে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা সিলেটে এসে রাতেই পৌঁছেন।
প্রতিটি মোটরসাইকেলের নেতাকর্মীদের হাতে বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উঁচিয়ে উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার থেকে হাওরের উপজেলা জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও শাল্লার নেতাকর্মীরা নৌকা, ট্রলার, লঞ্চযোগে কিংবা সড়কপথে কৌশলে খাবার-দাবার নিয়ে আলিয়া মাদরাসা মাঠে পৌঁছেন। মাঠেই তারা ফেইসবুক লাইভ করে আগত নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে তুলছেন। রান্না করে নিজেরাই খাবার খেয়ে ধুম-ধাম করে নেচে গেয়ে রাত কাটান।
সভাস্থলে যোগ দিয়েছেন বড়লেখা পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম, জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি রবিন বিএনপি নেতা আবু হুরায়রা সাব মাস্টার, জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো: শাহজাহান মিয়া, শান্তিগঞ্জ উপজেলার জাসাসের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম, দিরাই উপজেলার জাসাস নেতা সৈদুর রহমান।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলোকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত ভাবে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বৈরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই প্রতিটি সমাবেশ উপস্থিত হচ্ছেন লাখো মানুষ।
এসএম/কেকে//
Leave a Reply