Dhaka ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

সগিরা মোর্শেদের মেয়ের সাক্ষ্যগ্রহণে বাধা নেই : হাইকোর্ট আদেশ

  • Update Time : ০৩:২২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
  • / ০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৯৮৯ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে আলোচিত সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায় তার মেয়ের সাক্ষ্যগ্রহণের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের করা আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।

রাষ্ট্রপক্ষের ১০ নম্বর সাক্ষী হলেন সগিরা মোর্শেদের মেয়ে সামিয়া সারওয়াত চৌধুরী। গত জুনে তার আংশিক জবানবন্দি রেকর্ড করে বিচারিক আদালত। এরপরই সামিয়ার সাক্ষ্যগ্রহণ না করার জন্য আবেদন করেন তার চাচা আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও চাচি সায়েদাতুল মাহমুদ শাহীন। ঘটনার সময় সামিয়ার বয়স ছিল পাঁচ বছর। কিন্তু এখন তার বয়স ৩২ বছর। সাক্ষ্য নেয়া হলে আসামিরা ন্যায় বিচার পাবেন না। আসামিদের এ আবেদন খারিজ করে দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৯ ও ৪৩৫ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন মামলা করেন। ওই আবেদনে সগিরা খুনের মামলার নথি তলবের পাশাপাশি বিচার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়।
১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছামাত্র মোটরবাইকে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তিনি দৌড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথেই সগিরা মোর্শেদ সালাম মারা যান। ওইদিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন সগিরা মোর্শেদ সালামের স্বামী সালাম চৌধুরী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনকে শনাক্ত করলেও অজ্ঞাত কারণে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণ নামে একজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।

১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দীক। সাক্ষ্য নেয়া হয় সাতজনের। সাক্ষ্যে বাদীপক্ষ থেকে বলা হয়, তদন্তকালে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজা গ্রেফতার হন। কিন্তু মারুফ রেজার নাম বাদ দিয়েই অভিযোগপত্র দেয়া হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে মারুফ রেজার নাম আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ১৯৯১ সালের ২৩ মে মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজার রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট মামলাটির অধিকতর তদন্তের আদেশ ও বিচারকাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি অধিকতর তদন্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন।

পরের বছরের ২৭ আগস্ট জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই মামলার বিচারকাজ স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সম্প্রতি বিষয়টি এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের নজরে আনলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৯ সালে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আদেশ দেন।

এ ঘটনার ৩০ বছর পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এরপর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার আসামিরা হলেন- নিহত সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজা। এছাড়া পূর্ববর্তী অভিযোগপত্রে মন্টু ঘোষের নাম ছিল। ও চাচি সায়েদাতুল মাহমুদ শাহীন। ঘটনার সময় সামিয়ার বয়স ছিল পাঁচ বছর। কিন্তু এখন তার বয়স ৩২ বছর। সাক্ষ্য নেয়া হলে আসামিরা ন্যায় বিচার পাবেন না।

আসামিদের এ আবেদন খারিজ করে দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৯ ও ৪৩৫ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন মামলা করেন। ওই রিভিশনে সগিরা খুনের মামলার নথি তলবের পাশাপাশি বিচার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। আজ শুনানি শেষে আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেন।

কেকে/ডিএএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সগিরা মোর্শেদের মেয়ের সাক্ষ্যগ্রহণে বাধা নেই : হাইকোর্ট আদেশ

Update Time : ০৩:২২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৯৮৯ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে আলোচিত সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায় তার মেয়ের সাক্ষ্যগ্রহণের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের করা আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।

রাষ্ট্রপক্ষের ১০ নম্বর সাক্ষী হলেন সগিরা মোর্শেদের মেয়ে সামিয়া সারওয়াত চৌধুরী। গত জুনে তার আংশিক জবানবন্দি রেকর্ড করে বিচারিক আদালত। এরপরই সামিয়ার সাক্ষ্যগ্রহণ না করার জন্য আবেদন করেন তার চাচা আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও চাচি সায়েদাতুল মাহমুদ শাহীন। ঘটনার সময় সামিয়ার বয়স ছিল পাঁচ বছর। কিন্তু এখন তার বয়স ৩২ বছর। সাক্ষ্য নেয়া হলে আসামিরা ন্যায় বিচার পাবেন না। আসামিদের এ আবেদন খারিজ করে দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৯ ও ৪৩৫ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন মামলা করেন। ওই আবেদনে সগিরা খুনের মামলার নথি তলবের পাশাপাশি বিচার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়।
১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছামাত্র মোটরবাইকে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তিনি দৌড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথেই সগিরা মোর্শেদ সালাম মারা যান। ওইদিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন সগিরা মোর্শেদ সালামের স্বামী সালাম চৌধুরী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনকে শনাক্ত করলেও অজ্ঞাত কারণে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণ নামে একজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।

১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দীক। সাক্ষ্য নেয়া হয় সাতজনের। সাক্ষ্যে বাদীপক্ষ থেকে বলা হয়, তদন্তকালে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজা গ্রেফতার হন। কিন্তু মারুফ রেজার নাম বাদ দিয়েই অভিযোগপত্র দেয়া হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে মারুফ রেজার নাম আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ১৯৯১ সালের ২৩ মে মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজার রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট মামলাটির অধিকতর তদন্তের আদেশ ও বিচারকাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি অধিকতর তদন্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন।

পরের বছরের ২৭ আগস্ট জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই মামলার বিচারকাজ স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সম্প্রতি বিষয়টি এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের নজরে আনলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৯ সালে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আদেশ দেন।

এ ঘটনার ৩০ বছর পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এরপর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার আসামিরা হলেন- নিহত সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজা। এছাড়া পূর্ববর্তী অভিযোগপত্রে মন্টু ঘোষের নাম ছিল। ও চাচি সায়েদাতুল মাহমুদ শাহীন। ঘটনার সময় সামিয়ার বয়স ছিল পাঁচ বছর। কিন্তু এখন তার বয়স ৩২ বছর। সাক্ষ্য নেয়া হলে আসামিরা ন্যায় বিচার পাবেন না।

আসামিদের এ আবেদন খারিজ করে দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৯ ও ৪৩৫ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন মামলা করেন। ওই রিভিশনে সগিরা খুনের মামলার নথি তলবের পাশাপাশি বিচার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। আজ শুনানি শেষে আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেন।

কেকে/ডিএএম//