Dhaka ০১:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

জজ মিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

  • Update Time : ০৪:০৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ০ Time View

নিজস্ব প্রতিবদেক :
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মামলায় বিনা অপরাধে জেল খাটা নিরিহ মো. জালাল ওরফে জজ মিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে জজ মিয়ার আটক আদেশ এবং চার বছর কারাভোগ কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না-রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, ঢাকার ডিসি এবং মতিঝিল ও সেনবাগ থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট ১১ বিবাদীকে (রেসপনডেন্ট) এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি অরবিন্দ কুমার রায়।

জজ মিয়ার বিষয়ে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর এ রিট করা হয়। এর আগে গত ১১ আগস্ট জজ মিয়ার পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও আইনজীবী মোহাম্মদ কাউছার স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১১ জন বরাবরে এ বিষয়ে আইনি নোটিশ দেন। আরও যাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন- ঢাকার জেলা প্রশাসক, মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), নোয়াখালীর সেনবাগ থানার ওসি, পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), তৎকালীন আইজিপি খোদা বক্স চৌধুরী, তৎকালীন এএসপি আব্দুর রশিদ, তৎকালীন এএসপি মুনশি আতিকুর রহমান ও তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন।

নোটিশে ওই ঘটনার জন্য জড়িত ব্যক্তিদের দায় নির্ধারণের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। যাদের দায় পাওয়া যাবে তাদের কাছ থেকে ওই ক্ষতিপূরণ আদায় করে জজ মিয়াকে দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি লুৎফুজ্জামান বাবরসহ জড়িত ব্যক্তিদের স্থাবর সম্পত্তি জব্দের আইনগত পদক্ষেপের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। নোটিশে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। নোটিশে কোনো সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিটটি করেন জজ মিয়া।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলের নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিন সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে রক্ষা পেলেও আহত হন। তার কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভয়াবহ বর্বরোচিত নজীরবিহীন নৃশংতম হামলার সময় আওয়ামী লীগের নেতারা মানবঢাল তৈরি করে জননেত্রীকে নিরাপদে নিয়ে যান। ওই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমান মৃত্যুবরণ করেন। আহত হন দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংবাদিকসহ কয়েকশো মানুষ। ওই হামলায় পঙ্গুত্ববরণ করে এখনো যন্ত্রণাময় জীবন পাড় করছেন অনেকে।

২০০৫ সালের ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে ধরে আনা হয় জজ মিয়া নামের নিরীহ যুবককে। জজ মিয়াকে ১৭ দিন রিমান্ডে রেখে, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে একটি সাজানো জবানবন্দি আদায় করে সিআইডি। ২০০৫ সালের ২৬ জুন আদালতে দেয়া ওই কথিত স্বীকারোক্তিতে জজ মিয়া বলেছিলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বড় ভাইদের নির্দেশে তিনি অন্যদের সঙ্গে গ্রেনেড হামলায় অংশ নেন। ওই বড় ভাইয়েরা হচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, জয়, মোল্লা মাসুদ ও মুকুল।’

পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে নতুন করে এই মামলার তদন্তের উদ্যোগ নেয়। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১১ জুন এ-সংক্রান্ত মামলা দুটির অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অব্যাহতি দেয়া হয় জোট সরকারের আমলে গ্রেফতার হওয়া জজ মিয়াকে। বিনা অপরাধে কয়েকবছর কারাভোগ করতে হয়েছিল তাকে। ইতোমধ্যে ওই মামলায় বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে। বিচার চলাকালে জজ মিয়াকে ফাঁসানোর গল্প সাক্ষ্য প্রমানে উঠে এসেছে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়
বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিপক্ষে আনা আপিল শুনানি শিগগিরই শুরু হচ্ছে হাইকোর্টে। সাংবাদিকদের এ কথা জানান এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

ডিএ//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জজ মিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

Update Time : ০৪:০৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবদেক :
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মামলায় বিনা অপরাধে জেল খাটা নিরিহ মো. জালাল ওরফে জজ মিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে জজ মিয়ার আটক আদেশ এবং চার বছর কারাভোগ কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না-রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, ঢাকার ডিসি এবং মতিঝিল ও সেনবাগ থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট ১১ বিবাদীকে (রেসপনডেন্ট) এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি অরবিন্দ কুমার রায়।

জজ মিয়ার বিষয়ে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর এ রিট করা হয়। এর আগে গত ১১ আগস্ট জজ মিয়ার পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও আইনজীবী মোহাম্মদ কাউছার স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১১ জন বরাবরে এ বিষয়ে আইনি নোটিশ দেন। আরও যাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন- ঢাকার জেলা প্রশাসক, মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), নোয়াখালীর সেনবাগ থানার ওসি, পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), তৎকালীন আইজিপি খোদা বক্স চৌধুরী, তৎকালীন এএসপি আব্দুর রশিদ, তৎকালীন এএসপি মুনশি আতিকুর রহমান ও তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন।

নোটিশে ওই ঘটনার জন্য জড়িত ব্যক্তিদের দায় নির্ধারণের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। যাদের দায় পাওয়া যাবে তাদের কাছ থেকে ওই ক্ষতিপূরণ আদায় করে জজ মিয়াকে দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি লুৎফুজ্জামান বাবরসহ জড়িত ব্যক্তিদের স্থাবর সম্পত্তি জব্দের আইনগত পদক্ষেপের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। নোটিশে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। নোটিশে কোনো সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিটটি করেন জজ মিয়া।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলের নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিন সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে রক্ষা পেলেও আহত হন। তার কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভয়াবহ বর্বরোচিত নজীরবিহীন নৃশংতম হামলার সময় আওয়ামী লীগের নেতারা মানবঢাল তৈরি করে জননেত্রীকে নিরাপদে নিয়ে যান। ওই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমান মৃত্যুবরণ করেন। আহত হন দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংবাদিকসহ কয়েকশো মানুষ। ওই হামলায় পঙ্গুত্ববরণ করে এখনো যন্ত্রণাময় জীবন পাড় করছেন অনেকে।

২০০৫ সালের ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে ধরে আনা হয় জজ মিয়া নামের নিরীহ যুবককে। জজ মিয়াকে ১৭ দিন রিমান্ডে রেখে, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে একটি সাজানো জবানবন্দি আদায় করে সিআইডি। ২০০৫ সালের ২৬ জুন আদালতে দেয়া ওই কথিত স্বীকারোক্তিতে জজ মিয়া বলেছিলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বড় ভাইদের নির্দেশে তিনি অন্যদের সঙ্গে গ্রেনেড হামলায় অংশ নেন। ওই বড় ভাইয়েরা হচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, জয়, মোল্লা মাসুদ ও মুকুল।’

পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে নতুন করে এই মামলার তদন্তের উদ্যোগ নেয়। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১১ জুন এ-সংক্রান্ত মামলা দুটির অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অব্যাহতি দেয়া হয় জোট সরকারের আমলে গ্রেফতার হওয়া জজ মিয়াকে। বিনা অপরাধে কয়েকবছর কারাভোগ করতে হয়েছিল তাকে। ইতোমধ্যে ওই মামলায় বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে। বিচার চলাকালে জজ মিয়াকে ফাঁসানোর গল্প সাক্ষ্য প্রমানে উঠে এসেছে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়
বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিপক্ষে আনা আপিল শুনানি শিগগিরই শুরু হচ্ছে হাইকোর্টে। সাংবাদিকদের এ কথা জানান এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

ডিএ//