Dhaka ০৭:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
মামলা হলেই গ্রেফতার নয়, তদন্তে দায় পাওয়া গেলে ব্যবস্থা: আইজিপি `অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্রকাঠামোই জাতীয়তাবাদের উপহার’-অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বিপুল আনন্দ উৎসাহ উদ্দীপনায় দেশব্যাপী বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপিত ‘জুলাই আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সহস্রাধিক লোকের সাক্ষ্য’ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের অঙ্গীকার : প্রধান উপদেষ্টা সোয়াই নদীর পুনঃখনন কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে : ৫’শ মিটার কাজে বাঁধা দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ডিইউজে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতীকি ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত: সর্বোচ্চ আদালতে ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

অনশন বাতিল: ফিরে গেলেন ইডেন ছাত্রলীগের ১২ নেত্রী

  • Update Time : ০৩:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১৯ Time View

সারাদেশ ডেস্ক: বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আমরণ অনশনে বসবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ১২ নেত্রী। এ জন্য তারা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়েও যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা ঘোষিত কর্মসূচি পালন না করেই ফিরে এলেন।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় অনশনের জন্য আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান ১২ নেত্রী। এসময় ফটকে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে দেড় ঘণ্টা অবস্থানের পর বের হয়ে আসেন তারা।

অনশনের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা অনশন বাতিল করেছি। এখন আমাদের নতুন কোনো কর্মসূচি নেই।

কেন অনশন বাতিল করলেন? কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন কে ছিলেন? এসব বিষয়ে জানতে চাইলেও তারা কোনো উত্তর দেননি। রিকশা নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

তবে পরে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কার হওয়া সিনিয়র সহ-সভাপতি সোনালী আক্তার বলেন, আমরা পার্টি অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল আওয়াল শামীম এসে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, আমাদের বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা বলেছেন। বহিষ্কারাদেশ বাতিল করার বিষয়ে তারা আশ্বস্ত করেছেন। এরপর আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে আমাদের নাম লিখে রাখা হয়। আমরা তাদের ওপর আস্থা রেখে চলে আসি।

এর আগে বেলা ১১টায় ইডেন কলেজে সংবাদ সম্মেলন করেন বহিষ্কৃত নেত্রীরা। সেখানে তারা জানান, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আমরণ অনশনে বসবেন। এর ৪০ মিনিট পর সংবাদ সম্মেলন শেষে ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন তারা।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈ বলেন, আমাদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা এই বহিষ্কারাদেশ মানি না। সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আমাদের কেন বহিষ্কার? আগে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তারা কেন পার পেয়ে যাচ্ছে।

এসময় বহিষ্কৃত নেত্রীরা অভিযোগ করেন, কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতে ২১ জন নেত্রী উপস্থিত থাকলেও শুধুমাত্র ১২ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা তাদের প্রতিহিংসার শিকার। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সম্পাদক ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের পক্ষ নিয়ে এসব করছেন।

এদিকে দুইপক্ষের রেষারেষি ও মারামারির ঘটনায় রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় ১৬ জনকে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। এতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এর জের ধরে পরের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ইডেন কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন ১০ জন। এর মধ্যে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

অনশন বাতিল: ফিরে গেলেন ইডেন ছাত্রলীগের ১২ নেত্রী

Update Time : ০৩:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

সারাদেশ ডেস্ক: বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আমরণ অনশনে বসবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ১২ নেত্রী। এ জন্য তারা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়েও যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা ঘোষিত কর্মসূচি পালন না করেই ফিরে এলেন।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় অনশনের জন্য আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান ১২ নেত্রী। এসময় ফটকে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে দেড় ঘণ্টা অবস্থানের পর বের হয়ে আসেন তারা।

অনশনের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা অনশন বাতিল করেছি। এখন আমাদের নতুন কোনো কর্মসূচি নেই।

কেন অনশন বাতিল করলেন? কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন কে ছিলেন? এসব বিষয়ে জানতে চাইলেও তারা কোনো উত্তর দেননি। রিকশা নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

তবে পরে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কার হওয়া সিনিয়র সহ-সভাপতি সোনালী আক্তার বলেন, আমরা পার্টি অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল আওয়াল শামীম এসে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, আমাদের বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা বলেছেন। বহিষ্কারাদেশ বাতিল করার বিষয়ে তারা আশ্বস্ত করেছেন। এরপর আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে আমাদের নাম লিখে রাখা হয়। আমরা তাদের ওপর আস্থা রেখে চলে আসি।

এর আগে বেলা ১১টায় ইডেন কলেজে সংবাদ সম্মেলন করেন বহিষ্কৃত নেত্রীরা। সেখানে তারা জানান, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আমরণ অনশনে বসবেন। এর ৪০ মিনিট পর সংবাদ সম্মেলন শেষে ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন তারা।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈ বলেন, আমাদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা এই বহিষ্কারাদেশ মানি না। সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আমাদের কেন বহিষ্কার? আগে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তারা কেন পার পেয়ে যাচ্ছে।

এসময় বহিষ্কৃত নেত্রীরা অভিযোগ করেন, কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতে ২১ জন নেত্রী উপস্থিত থাকলেও শুধুমাত্র ১২ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা তাদের প্রতিহিংসার শিকার। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সম্পাদক ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের পক্ষ নিয়ে এসব করছেন।

এদিকে দুইপক্ষের রেষারেষি ও মারামারির ঘটনায় রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় ১৬ জনকে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। এতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এর জের ধরে পরের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ইডেন কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন ১০ জন। এর মধ্যে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।