সারাদেশ ডেস্ক :
ওএমএস ও টিসিবির কার্যক্রম সমন্বয়ে সংশ্লিষ্টদের ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত সোমবার ‘ওএমএস ও টিসিবির কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় প্রক্রিয়া’ নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
পরিপত্র অনুযায়ী, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডে ওএমএসে (খোলা বাজারে বিক্রি) ১৫ দিনে পাঁচ কেজি করে মাসে ১০ কেজি চাল মিলবে।
ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি ও পেঁয়াজের সঙ্গে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামেলি কার্ডে মিলবে ওএমএসের চালও। চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী ২ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু হবে।
পরিপত্রে বলা হয়, পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের (পিএফডিএস) আওতায় খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি। খাদ্যশস্যের বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা রোধ করে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে মূল্য সহায়তা দেয়া এবং বাজার দর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পরিচালিত ওএমএস কার্যক্রমে টিসিবির কার্ডধারীদের সমন্বয় করে খাদ্যশস্য বিতরণে ১২টি পদ্ধতি অনুসরণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয় পরিপত্রে।
১. ওএমএস কার্যক্রমে চাল বিক্রয় করার জন্য ক্রেতাদের দুটি আলাদা লাইন করতে হবে। একটি লাইনে সাধারণ ক্রেতা এবং অন্য লাইনে টিসিবির কার্ডধারীরা দাঁড়াবেন।
২. টিসিবির কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাল প্রদান করতে হবে। ডিলারের কাছে সংশ্লিষ্ট দিনের চালের বরাদ্দ শেষ হয়ে গেলে পরবর্তীতে আসার অনুরোধ জানাতে হবে।
৩. টিসিবির কার্ডধারীরা পাক্ষিক (১৫ দিনে) ৫ কেজি করে মাসে দু বার মোট ১০ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবেন। টিসিবির কার্ডধারীকে চাল দেয়ার পর ওএমএস ডিলাররা টিসিবির কার্ডের পিছনে নমুনা সিল/পাঞ্চিং মেশিন দিয়ে কার্ডের ওপরে প্রতিবারের জন্য একটি ছিদ্র করে দেবেন।
৪. জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন ডিলারের কার্যক্রম তদারকি করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক তদারকি কর্মকর্তা/ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করতে হবে। তদারকি কর্মকর্তা/ট্যাগ অফিসার বিক্রয় স্থলে দিনের বিক্রয়যোগ্য খাদ্যশস্যের বস্তা ও পরিমাণ সর্ম্পকে সন্তুষ্ট হয়ে বিক্রয় আদেশ দেবেন।
৫. জনপ্রতি নির্ধারিত পরিমাণ চাল আটা বিক্রয় ও বিক্রিত খাদশস্যের মাস্টার রোল ডিলাররা তৈরি করে সংরক্ষণ করবেন।
৬. ওএমএস বিক্রয় কেন্দ্র সহজে চিহ্নিতকরণের জন্য দোকান বা ট্রাকে প্যানাফ্লেক্স (লাল রং) ব্যানার (৬ ফুট বাই ৩ ফুট) ঝুলাতে হবে এবং প্যানাফ্লেক্স (লাল রং) ব্যানারে মাথাপিছু সর্বোচ্চ কত কেজি চাল আটা দেওয়া হবে এবং প্রতি কেজির মূল্য কত টাকা তা উল্লেখ থাকতে হবে।
৭. জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক/উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা ওএমএস কমিটির সভা আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং সভা আয়োজনের পর লোকাল ক্যাবল টেলিভিশনের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৮. কর্মসূচির শুরুর প্রথম দিন অর্থাৎ ১ সেপ্টেম্বর খাদ্য সচিব ও খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এক বা একাধিক কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করবেন।
৯. প্রথম পর্যায়ে প্রচারের জন্য বিক্রয় কেন্দ্রের কমান্ড এরিয়াতে ঢোল শহরত ও মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ জানতে পারে।
১০. আঞ্চলিক/জেলা/উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
১১. প্রতিদিন বিকেল ৫টার মধ্যে সব আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা ই-মেইলের মাধ্যমে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় সম্পর্কিত তথ্য খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব তথ্য সমন্বিত করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবশ্যিকভাবে পাঠাতে হবে।
১২. ‘খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় (ওএমএস) নীতিমালা, ২০১৫’ এর সব নির্দেশাবলী যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
Leave a Reply