Dhaka ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

হুমকিতে রাকিনের বিদেশি বিনিয়োগ, প্রশ্নের মুখে দেশের ভাবমূর্তি

  • Update Time : ০৬:০২:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অগাস্ট ২০২২
  • / ০ Time View

অর্থনীতি ডেস্ক :
২০০৮ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগে (এফডিআই) বাংলাদেশের আবাসন খাতে যাত্রা করে রাকিন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি।

প্রতিষ্ঠানটিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ করা হয়েছে, যেখানে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি আবাসন প্রকল্পে কোম্পানিটি বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেছে এবং আরও কয়েকটি প্রকল্পে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

অথচ নানারকম আর্থিক অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারনে হুঁমকির মুখে পড়েছে সম্ভাবনাময় এই বিদেশী বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠানটি।

কোম্পানি পরিচালনায় বিদেশী পরিচালকদের বাংলাদেশে অনুপস্থিতি এবং দেশের সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন সম্পর্কে তাদের যথাযথ ধারণা না থাকার দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে শীর্ষ বাংলাদেশী কর্তাব্যক্তির ধারাবাহিক আর্থিক অনিয়মে কোম্পানিটি দূর্বল হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এর ফলে আস্থা হারাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা, সেইসাথে প্রশ্নের মুখে পড়ছে দেশের ভাবমূর্তিও।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এস এ কে একরামুজ্জামান নামে একজন বাংলাদেশী পরিচালক। কোম্পানি আইনের ১১০ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেয়ার পর পরবর্তী বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সেটার অনুমোদন নিতে হয়, কিন্ত ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি। তাই আইনের ধারা অনুযায়ী তার এই পদ অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছরধরে অবৈধভাবে তিনি এই পদে বহাল ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে দায়িত্বশীল ব্যক্তি।

পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি ছাড়াই একরামুজ্জামান কোম্পানির সম্পত্তি বন্ধক রেখে বির্ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। তাছাড়াও তিনি কোম্পানির নামে কয়েকটি অনুমোদনহীন ব্যাংক হিসাব খুলে সেগুলোতে সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কোম্পানির পরিচালনা পরিষদের অনুমতি ছাড়া কোনধরনের নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ‘স্টার পোরসেলিন’ নামে একটি কোম্পানির নামে ৭৩ কোটি ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন একরামুজ্জামান, যিনি একই কোম্পানির ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন। এই টাকা ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধের জন্য গত ৩ আগস্ট তারিখে তাকে একটি আইনী নোটিশ দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি এই নোটিশের কোন জবাব দেননি। একরামুজ্জামানের ১৪ বছর ধরে এমডি’র দায়িত্ব পালনকালে এই সময়ে কোম্পানির কোন লাভ দেখানো হয়নি, বরং প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়।

বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন না থাকা, কোম্পানির কার্যক্রমে সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন, কোম্পানিতে নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতি এবং তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলার কারনে বিগত ২৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত কোম্পানির ৮১তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তক্রমে এস এ কে একরামুজ্জামানকে সরিয়ে কোম্পানির সিইও লেবানিজ বংশোদ্ভুত সুইজারল্যান্ডের নাগরিক ফাদি বিতারকে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

সেই সাথে কোম্পানির আর্টিক্যাল অব অ্যাসোসিয়েশনের ১১৫ নম্বর সেকশন অনুযায়ী একরামুজ্জামানকে কোম্পানির পরিচালক পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়, সংশ্লিষ্ট এই সেকশনটি পূর্বে তিনি নিজেই অনুমোদন করেছিলেন।

বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম আর অসঙ্গতির অভিযোগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই ও ৩ আগস্ট তারিখে একরামুজ্জামানকে কোম্পানির পক্ষ থেকে দুটি লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি এর কোনটিরই জবাব দেননি। তাছাড়াও কোম্পানির ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ব্যাংক হিসাব খোলার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কোম্পানির পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে একটি ফোজদারী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিভিন্ন অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, অবৈধভাবে ১৮৪ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৩ মে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে তিনি ও তার ভাই কোম্পানির পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এই সময়ে রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এস এ কে একরামুজ্জামান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামীরা ২০১০ সালে দুবাইয়ে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল এবং থ্রি স্টার নামে দুটি অফশোর কোম্পানি খোলেন। পরে বাংলাদেশে ‘দুর্নীতির মাধ্যমে’ অর্জিত ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচার করেন। দুবাইয়ে ওই অর্থ উর্পাজনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি। ওই অর্থ কীভাবে উপার্জন করা হয়েছে তার কোনো তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে কখনও জানাননি বা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি।

একরামুজ্জামান বর্তমানে আরএকে সিরামিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একসময় দুবাইতে আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশনের সাবেক সিও এবং রাকিন ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. খাতের মাসাদের পিয়ন ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি।

সার্বিক বিষয়ে এস এ কে একরামুজ্জামানকে ইঙ্গিত করে রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির আইনী পরামর্শক ড. কাজী আক্তার হামিদ বলেন, কোন ব্যক্তি তার নিজস্ব লাভের কথা চিন্তা না করে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আর বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা একটা জঘন্য অপরাধ। সরকারকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার খাতিরে আরও বেশী সচেতন হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে এস এ কে একরামুজ্জামানের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি, এমনকি তার ফোনে ও হোয়াটস্অ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি করার কারণে রাকিন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি তাদের কয়েক’শ ফ্ল্যাট ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠানটির আইনি পরামর্শক জানান, নিবন্ধন দপ্তরের মহাপরিদর্শক নিবন্ধনের এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত চ্যালেন্জ করে উচ্চ আদালতে মামলা করা হয়েছে।

সূত্র : আমাদের নতুন সময়/ আমাদের সময় ডট কম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হুমকিতে রাকিনের বিদেশি বিনিয়োগ, প্রশ্নের মুখে দেশের ভাবমূর্তি

Update Time : ০৬:০২:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অগাস্ট ২০২২

অর্থনীতি ডেস্ক :
২০০৮ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগে (এফডিআই) বাংলাদেশের আবাসন খাতে যাত্রা করে রাকিন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি।

প্রতিষ্ঠানটিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ করা হয়েছে, যেখানে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি আবাসন প্রকল্পে কোম্পানিটি বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেছে এবং আরও কয়েকটি প্রকল্পে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

অথচ নানারকম আর্থিক অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারনে হুঁমকির মুখে পড়েছে সম্ভাবনাময় এই বিদেশী বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠানটি।

কোম্পানি পরিচালনায় বিদেশী পরিচালকদের বাংলাদেশে অনুপস্থিতি এবং দেশের সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন সম্পর্কে তাদের যথাযথ ধারণা না থাকার দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে শীর্ষ বাংলাদেশী কর্তাব্যক্তির ধারাবাহিক আর্থিক অনিয়মে কোম্পানিটি দূর্বল হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এর ফলে আস্থা হারাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা, সেইসাথে প্রশ্নের মুখে পড়ছে দেশের ভাবমূর্তিও।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এস এ কে একরামুজ্জামান নামে একজন বাংলাদেশী পরিচালক। কোম্পানি আইনের ১১০ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেয়ার পর পরবর্তী বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সেটার অনুমোদন নিতে হয়, কিন্ত ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি। তাই আইনের ধারা অনুযায়ী তার এই পদ অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছরধরে অবৈধভাবে তিনি এই পদে বহাল ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে দায়িত্বশীল ব্যক্তি।

পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি ছাড়াই একরামুজ্জামান কোম্পানির সম্পত্তি বন্ধক রেখে বির্ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। তাছাড়াও তিনি কোম্পানির নামে কয়েকটি অনুমোদনহীন ব্যাংক হিসাব খুলে সেগুলোতে সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কোম্পানির পরিচালনা পরিষদের অনুমতি ছাড়া কোনধরনের নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ‘স্টার পোরসেলিন’ নামে একটি কোম্পানির নামে ৭৩ কোটি ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন একরামুজ্জামান, যিনি একই কোম্পানির ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন। এই টাকা ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধের জন্য গত ৩ আগস্ট তারিখে তাকে একটি আইনী নোটিশ দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি এই নোটিশের কোন জবাব দেননি। একরামুজ্জামানের ১৪ বছর ধরে এমডি’র দায়িত্ব পালনকালে এই সময়ে কোম্পানির কোন লাভ দেখানো হয়নি, বরং প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়।

বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন না থাকা, কোম্পানির কার্যক্রমে সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন, কোম্পানিতে নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতি এবং তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলার কারনে বিগত ২৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত কোম্পানির ৮১তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তক্রমে এস এ কে একরামুজ্জামানকে সরিয়ে কোম্পানির সিইও লেবানিজ বংশোদ্ভুত সুইজারল্যান্ডের নাগরিক ফাদি বিতারকে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

সেই সাথে কোম্পানির আর্টিক্যাল অব অ্যাসোসিয়েশনের ১১৫ নম্বর সেকশন অনুযায়ী একরামুজ্জামানকে কোম্পানির পরিচালক পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়, সংশ্লিষ্ট এই সেকশনটি পূর্বে তিনি নিজেই অনুমোদন করেছিলেন।

বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম আর অসঙ্গতির অভিযোগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই ও ৩ আগস্ট তারিখে একরামুজ্জামানকে কোম্পানির পক্ষ থেকে দুটি লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি এর কোনটিরই জবাব দেননি। তাছাড়াও কোম্পানির ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ব্যাংক হিসাব খোলার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কোম্পানির পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে একটি ফোজদারী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিভিন্ন অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, অবৈধভাবে ১৮৪ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৩ মে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে তিনি ও তার ভাই কোম্পানির পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এই সময়ে রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এস এ কে একরামুজ্জামান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামীরা ২০১০ সালে দুবাইয়ে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল এবং থ্রি স্টার নামে দুটি অফশোর কোম্পানি খোলেন। পরে বাংলাদেশে ‘দুর্নীতির মাধ্যমে’ অর্জিত ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচার করেন। দুবাইয়ে ওই অর্থ উর্পাজনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি। ওই অর্থ কীভাবে উপার্জন করা হয়েছে তার কোনো তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে কখনও জানাননি বা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি।

একরামুজ্জামান বর্তমানে আরএকে সিরামিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একসময় দুবাইতে আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশনের সাবেক সিও এবং রাকিন ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. খাতের মাসাদের পিয়ন ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি।

সার্বিক বিষয়ে এস এ কে একরামুজ্জামানকে ইঙ্গিত করে রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির আইনী পরামর্শক ড. কাজী আক্তার হামিদ বলেন, কোন ব্যক্তি তার নিজস্ব লাভের কথা চিন্তা না করে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আর বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা একটা জঘন্য অপরাধ। সরকারকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার খাতিরে আরও বেশী সচেতন হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে এস এ কে একরামুজ্জামানের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি, এমনকি তার ফোনে ও হোয়াটস্অ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি করার কারণে রাকিন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি তাদের কয়েক’শ ফ্ল্যাট ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠানটির আইনি পরামর্শক জানান, নিবন্ধন দপ্তরের মহাপরিদর্শক নিবন্ধনের এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত চ্যালেন্জ করে উচ্চ আদালতে মামলা করা হয়েছে।

সূত্র : আমাদের নতুন সময়/ আমাদের সময় ডট কম//