Dhaka ১১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল হচ্ছে

  • Update Time : ০৭:০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২
  • / ৩ Time View

কলকাতা প্রতিনিধি:
সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডের মৃত্যু এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় কান্ডের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভায় রড় ধরনের রদবদল করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে আরও ৪-৫ জন মন্ত্রীকেও।

পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় আনা হচ্ছে ৫-৬ জন নতুন মুখ। সেই দলে কারা রয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। তবে আগামী বুধবার ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১ আগস্ট রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন থেকে মমতা বলেছেন, আমাদের মন্ত্রিসভায় একটা পরিবর্তন হবে। সাধন পাণ্ডে, সুব্রত মুখোপাধ্যায় মারা গিয়েছেন। পার্থদা জেলে আছেন। অনেকগুলো দফতর ফাঁকা পড়ে আছে। ওই দপ্তরগুলোর কাজ কে করবেন? আমার পক্ষে সবটা একা করা সম্ভব নয়। ভাগাভাগি করে করতে হবে। তাই আগামী বুধবার বিকেল চারটার সময় রদবদল হবে। ৪-৫ জনকে দলের কাজে লাগাব। তাই তাঁদের মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হবে। আর ৫-৬ জন নতুন মুখ আনা হবে মন্ত্রিসভায়।

বর্তমান মন্ত্রিসভার কাদের ওপর কোপ পড়তে চলেছে, তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে বাদ পড়াদের নাম জানাননি মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কারা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছেন, তা নিয়েও স্পষ্ট করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে মমতার সরকার।

রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী (গ্রামোন্নয়ন) ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। গত বছর নভেম্বরে প্রয়াত হয়েছিলেন তিনি। ক্রেতা ও সুরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন সাধন পাণ্ডে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মারা গেছেন তিনি। এ দুজনের মারা যাওয়ার পরও মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় রদবদল করেননি। তবে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী তথা সাময়িক বহিষ্কৃত শিল্পমন্ত্রী জেলে যেতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) নজর আরও কয়েকজন মন্ত্রীর ওপর রয়েছে। তাই আগেই জায়গা সাফ করে নিজেকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন মমতা। এমনটাই মনে করছেন বিরোধীরা।

বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, মাননীয়া (মমতা) ভয় পেয়েছেন। তাই এবার চুপ। কয়েকদিন আগেও সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরাদ হাকিম, মদন মিত্রকে সিবিআই নিজেদের দফতরে ডেকেছিল। গ্রেফতার হবে জেনে স্বয়ং নেত্রী চলে গিয়েছিলেন সিবিআই দফতরে। বিশাল জমায়েত নিয়ে দফতরে ধর্না দিয়েছিলেন। নেত্রী বলেছিলেন—বিজেপি রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে, ওসব বিজেপির চাল, এভাবে গ্রেফতার করা যাবে না।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দলনেতা শুভেন্দু আরও বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেলা নেত্রী গেলেন না? যাবেন কী করে? সুপ্রিম কোর্ট তো ইডিকে পূর্ণশক্তি দিয়েছেন। এবার মাননীয়া যাবেন কোথায়? শিক্ষক দুর্নীতি মামলা তো ২০১৭ সাল থেকে চলছে। সিবিআই পার্থদাকে দু’দুবার ডেকেছে। তখন নেত্রী তাকে সরিয়ে দেননি কেন? এখন বুঝেছেন পরিস্থিতি খারাপ। বলছেন, দলের কালিমালিপ্তদের ছেঁটে ফেলা হবে। আসলে তা নয়। মাননীয়া বুঝেছেন, এখনই যদি রদবদল না করেন তবে আগামী বিপদ মাননীয়া ও তাঁর ভাতিজার ওপর পড়বে। তাই যাদের ওপর ইডির নজর তাঁদের আগেই ছেঁটে ফেলতে চাইছেন তিনি।

পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অভিনেত্রী অর্পিতাকে আগে থেকে চিনতেন সেই তথ্যও তুলে ধরেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত রোববার পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে বলেছেন, উদ্ধার হওয়া টাকা তার নয়। তার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং দলের কারা করছেন সময় এলেই তা জানতে পারবেন। সেই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তাহলে ওসব কার টাকা? বলে দিন। রাস্তায় তো আর পড়ে ছিল না!

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পদ অনুযায়ী মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই তাঁর আসন। তৃণমূলের এত গুরুত্বপূর্ণ নেতা এখন ইডির হেফাজতে। আর খুব সহজে যে তিনি ছাড়া পাচ্ছেন না, তা ভালোই বোঝা যাচ্ছে। ফলে দল ও মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে চাইছেন মমতা। এমনটাই মত বিরোধীদের।

ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেয়া বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়, প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায় এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। এদের প্রত্যেকেরই ভাবমূর্তি স্বচ্ছ।

বাম-কংগ্রেসের আধিপত্য শেষে গতবছর তুমুল আলোচনায় আসা বিজেপিকে হারিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস। নানা বিরোধিতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে রাজ্যের সিংহভাগ জনগনের আস্থায় পরিনত হয়েছে মমতার নেতৃত্ব।

ডিএএম/এসএ//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল হচ্ছে

Update Time : ০৭:০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২

কলকাতা প্রতিনিধি:
সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডের মৃত্যু এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় কান্ডের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভায় রড় ধরনের রদবদল করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে আরও ৪-৫ জন মন্ত্রীকেও।

পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় আনা হচ্ছে ৫-৬ জন নতুন মুখ। সেই দলে কারা রয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। তবে আগামী বুধবার ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১ আগস্ট রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন থেকে মমতা বলেছেন, আমাদের মন্ত্রিসভায় একটা পরিবর্তন হবে। সাধন পাণ্ডে, সুব্রত মুখোপাধ্যায় মারা গিয়েছেন। পার্থদা জেলে আছেন। অনেকগুলো দফতর ফাঁকা পড়ে আছে। ওই দপ্তরগুলোর কাজ কে করবেন? আমার পক্ষে সবটা একা করা সম্ভব নয়। ভাগাভাগি করে করতে হবে। তাই আগামী বুধবার বিকেল চারটার সময় রদবদল হবে। ৪-৫ জনকে দলের কাজে লাগাব। তাই তাঁদের মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হবে। আর ৫-৬ জন নতুন মুখ আনা হবে মন্ত্রিসভায়।

বর্তমান মন্ত্রিসভার কাদের ওপর কোপ পড়তে চলেছে, তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে বাদ পড়াদের নাম জানাননি মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কারা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছেন, তা নিয়েও স্পষ্ট করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে মমতার সরকার।

রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী (গ্রামোন্নয়ন) ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। গত বছর নভেম্বরে প্রয়াত হয়েছিলেন তিনি। ক্রেতা ও সুরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন সাধন পাণ্ডে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মারা গেছেন তিনি। এ দুজনের মারা যাওয়ার পরও মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় রদবদল করেননি। তবে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী তথা সাময়িক বহিষ্কৃত শিল্পমন্ত্রী জেলে যেতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) নজর আরও কয়েকজন মন্ত্রীর ওপর রয়েছে। তাই আগেই জায়গা সাফ করে নিজেকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন মমতা। এমনটাই মনে করছেন বিরোধীরা।

বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, মাননীয়া (মমতা) ভয় পেয়েছেন। তাই এবার চুপ। কয়েকদিন আগেও সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরাদ হাকিম, মদন মিত্রকে সিবিআই নিজেদের দফতরে ডেকেছিল। গ্রেফতার হবে জেনে স্বয়ং নেত্রী চলে গিয়েছিলেন সিবিআই দফতরে। বিশাল জমায়েত নিয়ে দফতরে ধর্না দিয়েছিলেন। নেত্রী বলেছিলেন—বিজেপি রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে, ওসব বিজেপির চাল, এভাবে গ্রেফতার করা যাবে না।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দলনেতা শুভেন্দু আরও বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেলা নেত্রী গেলেন না? যাবেন কী করে? সুপ্রিম কোর্ট তো ইডিকে পূর্ণশক্তি দিয়েছেন। এবার মাননীয়া যাবেন কোথায়? শিক্ষক দুর্নীতি মামলা তো ২০১৭ সাল থেকে চলছে। সিবিআই পার্থদাকে দু’দুবার ডেকেছে। তখন নেত্রী তাকে সরিয়ে দেননি কেন? এখন বুঝেছেন পরিস্থিতি খারাপ। বলছেন, দলের কালিমালিপ্তদের ছেঁটে ফেলা হবে। আসলে তা নয়। মাননীয়া বুঝেছেন, এখনই যদি রদবদল না করেন তবে আগামী বিপদ মাননীয়া ও তাঁর ভাতিজার ওপর পড়বে। তাই যাদের ওপর ইডির নজর তাঁদের আগেই ছেঁটে ফেলতে চাইছেন তিনি।

পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অভিনেত্রী অর্পিতাকে আগে থেকে চিনতেন সেই তথ্যও তুলে ধরেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত রোববার পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে বলেছেন, উদ্ধার হওয়া টাকা তার নয়। তার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং দলের কারা করছেন সময় এলেই তা জানতে পারবেন। সেই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তাহলে ওসব কার টাকা? বলে দিন। রাস্তায় তো আর পড়ে ছিল না!

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পদ অনুযায়ী মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই তাঁর আসন। তৃণমূলের এত গুরুত্বপূর্ণ নেতা এখন ইডির হেফাজতে। আর খুব সহজে যে তিনি ছাড়া পাচ্ছেন না, তা ভালোই বোঝা যাচ্ছে। ফলে দল ও মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে চাইছেন মমতা। এমনটাই মত বিরোধীদের।

ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেয়া বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়, প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায় এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। এদের প্রত্যেকেরই ভাবমূর্তি স্বচ্ছ।

বাম-কংগ্রেসের আধিপত্য শেষে গতবছর তুমুল আলোচনায় আসা বিজেপিকে হারিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস। নানা বিরোধিতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে রাজ্যের সিংহভাগ জনগনের আস্থায় পরিনত হয়েছে মমতার নেতৃত্ব।

ডিএএম/এসএ//