Dhaka ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতীকি ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত: সর্বোচ্চ আদালতে ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট

বরগুনায় লঞ্চ আগুন : ছবির সঙ্গে মিলিয়ে পুড়ে যাওয়া লাশ শনাক্ত করছেন স্বজনেরা

  • Update Time : ১২:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১২ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক :
টাঙিয়ে রাখা ছবির মধ্যে থেকে নিজের স্বজনকে খোঁজার চেষ্টা করছেন নিকটজনেরা।

নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ছবি। ওই নোটিশ বোর্ড ঘিরে মৃতের স্বজনদের ভিড়। নোটিশ বোর্ডের ছবির সঙ্গে তাঁদের কাছে থাকা পুরোনো ছবি মিলিয়ে লাশ শনাক্তের চেষ্টা করছেন তাঁরা। এটি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান ফটকের চিত্র।

বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত যাত্রীদের লাশ শনাক্ত করতে আজ শনিবার ভোর থেকেই যাত্রীদের স্বজনেরা এ হাসপাতাল চত্বরে ভিড় করছেন। স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।

নিহত যাত্রীদের লাশ শনাক্ত করতে আজ ভোর থেকেই যাত্রীদের স্বজনেরা হাসপাতালে ভিড় করছেন।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটি প্রায় ৮০০ যাত্রী নিয়ে ঝালকাঠি শহরের কাছাকাছি পৌঁছার পর সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা জেলা প্রশাসন ৩৬ জনের লাশ গ্রহণ করেছে।

এই ৩৬ জনের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন বরগুনার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের বশির উদ্দিনের মেয়ে তাইফা আফরিন (১০), বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের মো. রিয়াজ (৩৫), পাথরঘাটার আবদুর রাজ্জাক, জাহানারা বেগম এবং বামনা উপজেলার স্বপ্নীল (১৪)। রাতেই এ পাঁচজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩১টি লাশ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

ভোরের আলো ফোটার আগেই বেতাগীর ফারুক হোসেন হাসপাতালে এসেছেন তাঁর বোন আর ভাগনির লাশ খুঁজতে। তাঁর হাতে বোন আর ভাগনির ছবি। নোটিশ বোর্ডে থাকা দুটি লাশের ছবির সঙ্গে স্বজনদের ছবির মিল রয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমার বোন ও তাঁর ছেলেমেয়ে ওই লঞ্চে ছিল। ভাগনে লঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে নদীতে পড়লেও আমার বোন আর ভাগনি এখনো নিখোঁজ। লাশের ছবিগুলোর মধ্যে দুটি ছবির সঙ্গে আমার কাছে থাকা বোন ও ভাগনির ছবির মিল আছে। লাশ দেখলে হয়তো নিশ্চিত হতে পারব।’

গতকাল শুক্রবার রাতে হাসপাতাল চত্বরে সদর উপজেলার আমতলী গ্রামের মো. স্বপনের সঙ্গে কথা হয়। লঞ্চে আগুনের ঘটনায় স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই নাতিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তিনি। স্বপন জানান, গতকাল দুর্ঘটনাকবলিত এলাকার একটি চর থেকে মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর রাতে হাসপাতালে রাখা লাশের মধ্যে থেকে স্ত্রীর লাশ খুঁজে পান তিনি। তবে তাঁর আরেক মেয়ে ও দুই নাতি এখনো নিখোঁজ।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬ জনের লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি লাশগুলো বেলা ১১টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হবে। বরগুনায় লাশ সংরক্ষণের হিমাগার না থাকার কারণে লাশগুলো বেশিক্ষণ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ১১টার পর লাশগুলোর ডিএনএ স্যাম্পল রেখে লাশ দাফন করা হবে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের জন্য ২৫ হাজার এবং চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

এ দূর্ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে শোক প্রকাশ করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

কেকে/এসএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বরগুনায় লঞ্চ আগুন : ছবির সঙ্গে মিলিয়ে পুড়ে যাওয়া লাশ শনাক্ত করছেন স্বজনেরা

Update Time : ১২:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
টাঙিয়ে রাখা ছবির মধ্যে থেকে নিজের স্বজনকে খোঁজার চেষ্টা করছেন নিকটজনেরা।

নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ছবি। ওই নোটিশ বোর্ড ঘিরে মৃতের স্বজনদের ভিড়। নোটিশ বোর্ডের ছবির সঙ্গে তাঁদের কাছে থাকা পুরোনো ছবি মিলিয়ে লাশ শনাক্তের চেষ্টা করছেন তাঁরা। এটি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান ফটকের চিত্র।

বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত যাত্রীদের লাশ শনাক্ত করতে আজ শনিবার ভোর থেকেই যাত্রীদের স্বজনেরা এ হাসপাতাল চত্বরে ভিড় করছেন। স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।

নিহত যাত্রীদের লাশ শনাক্ত করতে আজ ভোর থেকেই যাত্রীদের স্বজনেরা হাসপাতালে ভিড় করছেন।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটি প্রায় ৮০০ যাত্রী নিয়ে ঝালকাঠি শহরের কাছাকাছি পৌঁছার পর সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা জেলা প্রশাসন ৩৬ জনের লাশ গ্রহণ করেছে।

এই ৩৬ জনের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন বরগুনার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের বশির উদ্দিনের মেয়ে তাইফা আফরিন (১০), বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের মো. রিয়াজ (৩৫), পাথরঘাটার আবদুর রাজ্জাক, জাহানারা বেগম এবং বামনা উপজেলার স্বপ্নীল (১৪)। রাতেই এ পাঁচজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩১টি লাশ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

ভোরের আলো ফোটার আগেই বেতাগীর ফারুক হোসেন হাসপাতালে এসেছেন তাঁর বোন আর ভাগনির লাশ খুঁজতে। তাঁর হাতে বোন আর ভাগনির ছবি। নোটিশ বোর্ডে থাকা দুটি লাশের ছবির সঙ্গে স্বজনদের ছবির মিল রয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমার বোন ও তাঁর ছেলেমেয়ে ওই লঞ্চে ছিল। ভাগনে লঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে নদীতে পড়লেও আমার বোন আর ভাগনি এখনো নিখোঁজ। লাশের ছবিগুলোর মধ্যে দুটি ছবির সঙ্গে আমার কাছে থাকা বোন ও ভাগনির ছবির মিল আছে। লাশ দেখলে হয়তো নিশ্চিত হতে পারব।’

গতকাল শুক্রবার রাতে হাসপাতাল চত্বরে সদর উপজেলার আমতলী গ্রামের মো. স্বপনের সঙ্গে কথা হয়। লঞ্চে আগুনের ঘটনায় স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই নাতিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তিনি। স্বপন জানান, গতকাল দুর্ঘটনাকবলিত এলাকার একটি চর থেকে মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর রাতে হাসপাতালে রাখা লাশের মধ্যে থেকে স্ত্রীর লাশ খুঁজে পান তিনি। তবে তাঁর আরেক মেয়ে ও দুই নাতি এখনো নিখোঁজ।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬ জনের লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি লাশগুলো বেলা ১১টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হবে। বরগুনায় লাশ সংরক্ষণের হিমাগার না থাকার কারণে লাশগুলো বেশিক্ষণ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ১১টার পর লাশগুলোর ডিএনএ স্যাম্পল রেখে লাশ দাফন করা হবে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের জন্য ২৫ হাজার এবং চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

এ দূর্ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে শোক প্রকাশ করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

কেকে/এসএম//