দণ্ডিতদের হাজতবাস মোট সাজা থেকে বাদের বিধান মানতে হবে : আপিল বিভাগ
- Update Time : ০৭:০৩:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
- / ২ Time View
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক :
যাবজ্জীবন পর্যন্ত দণ্ডিতদের সাজার মেয়াদ গণনার ক্ষেত্রে হাজতবাস বাদ দিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ক এর বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে বলেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
২৬ বছর ধরে কারাবন্দি যাবজ্জীবন দণ্ডিত এক আসামির লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজ এ আদেশ দেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ক ধারা অনুসারে কোনো আদালত একজন অভিযুক্তকে কোনো অপরাধে দণ্ডিত করেন, সে ক্ষেত্রে ওই আদালত ওই অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যতদিন জেল হাজতে থাকবেন, তা কারাদণ্ড হতে বাদ দেবেন। যদি দণ্ডের চেয়ে জেল হাজতের মেয়াদ বেশি হয় তাহলে ওই ব্যক্তি দণ্ড ভোগ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং অন্য অপরাধ না থাকলে জেল হাজত থেকে তৎক্ষণাৎ মুক্তি দিতে হবে।
এ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল।
সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রায়হান চৌধুরী।
আইনজীবী রায়হান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আসামি ইউনুছ আলীকে ডাবল মার্ডার মামলায় প্রথমে নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। পরে হাইকোর্ট মৃত্যদণ্ড থেকে কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। আদালতে আসামি পক্ষ থেকে বলা হয়, এ পর্যন্ত ইউনুছ আলী ২৬ বছর হাজত খেটেছেন। প্রচলিত সিআরপিসির ৩৫ ক ধারায় বলা হয়েছে, বিচারের সময়ে আসামি যতদিন হাজতবাস করবেন, হাজতবাসকালীন এই সময় সাজা থেকে বাদ যাবে। এ ক্ষেত্রে ইউনুছ আলীর রায়ে ৩৫ক ধারা উল্লেখ করা ছিল না।
আদালত বলেছেন, ৩৫ক ধারা অনুসারে তিনি যতদিন হাজতে ছিলেন তা বাদ যাবে। জেল কর্তৃপক্ষ এটা হিসাব করে দেখবেন তার শাস্তির মেয়াদ কতদিন আছে। তা দেখে মুক্তি দেবেন।
আইনজীবী রায়হান বলেন, প্রায় ২৬ বছর ধরে ইউনুছ আলী কারাবাসে করছেন। জেলকোড অনুযায়ী যেটার কারাবাস হয় ৩৪ বছরের মতো। যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর ধরে নিলে আমি চার বছর বেশি কারাবাস করছি। আজকে আদালত বলেছেন, সিআরপিসির ৩৫ক ধারা যেন পালন করা হয় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত সবখানে (কারা কর্তৃপক্ষ, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) পাঠিয়ে দেয়া হবে। যাতে করে এটা সবাই যেন মেনে চলে।
তিনি বলেন, যারা অনেক দিন ধরে জেল হাজতে আছে তারা এ রায়ের সুবিধা পাবেন। তারা কারগার থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন।
১৯৯৫ সালের জুন মাসে নাটোর সদর উপজেলার চকপাড়ায় হত্যা মামলায় সেনবাগ লক্ষ্মীকোল এলাকার আফছার মন্ডলের ছেলে ইউনুছ আলীসহ দুই জনকে ২০০২ সালের ১৭ নভেম্বর বিচারিক আদালত মৃত্যুদণ্ড দেন। বাকি ৮ জনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন। আপিলের পর ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট ইউনুছ আলীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে ইউনুস আলী। যা আজ পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন।
ডিএিএম/এসকে//