Dhaka ০৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতীকি ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত: সর্বোচ্চ আদালতে ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট

কুড়িগ্রামের সেই ৫ দিনমজুরের হাইকোর্টে জামিন

  • Update Time : ০৪:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অক্টোবর ২০২১
  • / ৮ Time View

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক :
করোনায় প্রণোদনা দেয়া হবে প্রতারক চক্রের এমন ফাঁদে পড়ে অর্থ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটার পাঁচ দিনমজুরকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পাঁচ দিনমজুর হলেন-রণজিৎ কুমার, ফুলমনি রানি,প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র ও সুবল চন্দ্র।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট অবকাশকালীন ভার্চ্যুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে এই জামিন আবেদন করা হয়। আইনজীবী শিশির এই দিনমজুরদের পক্ষে বিনা ফিতে মামলাটি পরিচালনা করেছেন।

আইনজীবী শিশির মনির জানান, আদালত বলেছেন, যারা লুটপাট করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলো না। দিনমজুর সাধারণ মানুষকে কেন ফাঁসানো হলো? এ প্রশ্ন রেখে আদালত তাদের এক বছরের জামিন দিয়েছেন।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের বাসিন্দা রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মোহন্ত। সহজ-সরল দিনমজুর ও খেটে খাওয়া এসব কৃষকের জীবন চলে দারিদ্র্যের চরম কশাঘাতে। তাদের কাছে হঠাৎ একদিন এসে হাজির হন ‘স্বপন’ নামে এক ব্যক্তি।

অভাব ঘোচাতে তাদের সরকারি সহায়তা পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন স্বপন। তিনি বলেন, সহায়তা আসবে ব্যাংকে, তাই সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ‘স্বপনের’ কথায় রাজি হয়ে যান রনজিৎ কুমার আর প্রভাস চন্দ্ররা। নিজের নামটুকুও লিখতে না পারা এসব কৃষকের নামে সোনালী ব্যাংক নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) শাখায় খোলা হয় সঞ্চয়ী হিসাব।

এরপর কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হবে বলে তাদের পাঁচজনকে ঢাকায় নিয়ে যান স্বপন। সেখানে অনেক কাগজে সই নিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠান।

কিছুদিনের মধ্যে রণজিৎ কুমারের সঞ্চয়ী হিসাবে ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭২০ টাকা, প্রবাস চন্দ্র রায়ের হিসাব নম্বরে ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ১২০ টাকা, সুবল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৭২০ টাকা, কমল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮০ টাকা এবং ফুলমণি রানির হিসাব নম্বরে ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ৫২০ টাকা জমা হয়। তবে এত টাকা জমা হওয়ার খবর ওই কৃষকরা পাননি। গাড়ি ভাড়ার টাকা ছাড়া তেমন কোনো অর্থ সহায়তাও ‘স্বপন মিয়া’ তাদের দেননি। সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশায় তারা দিন গুনছেন।

গত ১ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের একটি ভুয়া অ্যাডভাইস দাখিলের মাধ্যমে জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংক থেকে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে নয় জনের নামে মামলা হয়েছে। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক। সেই মামলায় নয় জনের মধ্যে পাঁচজন হলেন- ‘রণজিৎ কুমার, প্রবাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র, ফুলমণি রানী ও সুবল চন্দ্র।’
মামলায় অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রশিদ, অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, মাস্টাররোলে কর্মরত তানভীর ও ঢাকার উত্তরখান জামতলা এলাকার শাহেনা আক্তার।

গত ২ জুলাই দুপুরের দিকে সবার বাড়িতে হাজির ‍পুলিশ। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র রায়, কমল চন্দ্র রায়, ফুলমণি রানিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

আইনজীবী শিশির মনির জানান, পরে সুবল চন্দ্রও গ্রেফতার হন। নিম্ন আদালতে তাদের জামিন নামঞ্জুরের পর হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আজ তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

এসএইচ/এসকে/

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কুড়িগ্রামের সেই ৫ দিনমজুরের হাইকোর্টে জামিন

Update Time : ০৪:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অক্টোবর ২০২১

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক :
করোনায় প্রণোদনা দেয়া হবে প্রতারক চক্রের এমন ফাঁদে পড়ে অর্থ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটার পাঁচ দিনমজুরকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পাঁচ দিনমজুর হলেন-রণজিৎ কুমার, ফুলমনি রানি,প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র ও সুবল চন্দ্র।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট অবকাশকালীন ভার্চ্যুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে এই জামিন আবেদন করা হয়। আইনজীবী শিশির এই দিনমজুরদের পক্ষে বিনা ফিতে মামলাটি পরিচালনা করেছেন।

আইনজীবী শিশির মনির জানান, আদালত বলেছেন, যারা লুটপাট করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলো না। দিনমজুর সাধারণ মানুষকে কেন ফাঁসানো হলো? এ প্রশ্ন রেখে আদালত তাদের এক বছরের জামিন দিয়েছেন।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের বাসিন্দা রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মোহন্ত। সহজ-সরল দিনমজুর ও খেটে খাওয়া এসব কৃষকের জীবন চলে দারিদ্র্যের চরম কশাঘাতে। তাদের কাছে হঠাৎ একদিন এসে হাজির হন ‘স্বপন’ নামে এক ব্যক্তি।

অভাব ঘোচাতে তাদের সরকারি সহায়তা পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন স্বপন। তিনি বলেন, সহায়তা আসবে ব্যাংকে, তাই সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ‘স্বপনের’ কথায় রাজি হয়ে যান রনজিৎ কুমার আর প্রভাস চন্দ্ররা। নিজের নামটুকুও লিখতে না পারা এসব কৃষকের নামে সোনালী ব্যাংক নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) শাখায় খোলা হয় সঞ্চয়ী হিসাব।

এরপর কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হবে বলে তাদের পাঁচজনকে ঢাকায় নিয়ে যান স্বপন। সেখানে অনেক কাগজে সই নিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠান।

কিছুদিনের মধ্যে রণজিৎ কুমারের সঞ্চয়ী হিসাবে ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭২০ টাকা, প্রবাস চন্দ্র রায়ের হিসাব নম্বরে ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ১২০ টাকা, সুবল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৭২০ টাকা, কমল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮০ টাকা এবং ফুলমণি রানির হিসাব নম্বরে ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ৫২০ টাকা জমা হয়। তবে এত টাকা জমা হওয়ার খবর ওই কৃষকরা পাননি। গাড়ি ভাড়ার টাকা ছাড়া তেমন কোনো অর্থ সহায়তাও ‘স্বপন মিয়া’ তাদের দেননি। সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশায় তারা দিন গুনছেন।

গত ১ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের একটি ভুয়া অ্যাডভাইস দাখিলের মাধ্যমে জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংক থেকে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে নয় জনের নামে মামলা হয়েছে। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক। সেই মামলায় নয় জনের মধ্যে পাঁচজন হলেন- ‘রণজিৎ কুমার, প্রবাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র, ফুলমণি রানী ও সুবল চন্দ্র।’
মামলায় অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রশিদ, অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, মাস্টাররোলে কর্মরত তানভীর ও ঢাকার উত্তরখান জামতলা এলাকার শাহেনা আক্তার।

গত ২ জুলাই দুপুরের দিকে সবার বাড়িতে হাজির ‍পুলিশ। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র রায়, কমল চন্দ্র রায়, ফুলমণি রানিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

আইনজীবী শিশির মনির জানান, পরে সুবল চন্দ্রও গ্রেফতার হন। নিম্ন আদালতে তাদের জামিন নামঞ্জুরের পর হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আজ তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

এসএইচ/এসকে/