Dhaka ০১:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
মামলা হলেই গ্রেফতার নয়, তদন্তে দায় পাওয়া গেলে ব্যবস্থা: আইজিপি `অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্রকাঠামোই জাতীয়তাবাদের উপহার’-অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বিপুল আনন্দ উৎসাহ উদ্দীপনায় দেশব্যাপী বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপিত ‘জুলাই আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সহস্রাধিক লোকের সাক্ষ্য’ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের অঙ্গীকার : প্রধান উপদেষ্টা সোয়াই নদীর পুনঃখনন কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে : ৫’শ মিটার কাজে বাঁধা দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ডিইউজে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতীকি ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত: সর্বোচ্চ আদালতে ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

অবশেষে এনআইডির আবেদন করলো সন্তু লারমা

  • Update Time : ০১:০০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২৩ Time View

রাঙামাটি প্রতিনিধি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি সাবেক গেরিলা নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা (৭৭) এ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি। অংশ নেননি বাংলাদেশের কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে। তবে এবার তাকে করোনাভাইরাস (কোভিট-১৯) তার মান ভাঙাতে সফল হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ভ্যাকসিন নিতে পারছিলেন না সন্তু লারমা। যে কারণে বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে আটকে যাচ্ছিলেন তিনি। ফলে অবেশেষে নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করালেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে-চলতি বছরের ২৯ আগস্ট রাঙামাটি জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে চরম গোপনীয়তায় নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত করতে ছবি তোলাসহ আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করেছেন তিনি। মূলত জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া করোনা টিকা নিতে না পারায় তিনি এই আবেদন করেছেন বলে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রভাবশালী সূত্র নিশ্চিত করেছেন। সূত্রটি আরও জানায়-নির্বাচন কমিশন অফিসে কঠোর গোপনীয়তা ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্যে দিয়ে তার ভোটার হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। সন্তু লারমা চেয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভোটার কার্যক্রম শেষ করতে। কিন্তু জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে তাকে জানানো হয় টেকনিক্যালি সেটা সম্ভব নয়। এরপর তিনি নির্বাচন কমিশন অফিসে এসে অত্যন্ত গোপনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন।

রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান গনমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘তিনি (সন্তু লারমা) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমাকে ফোন করে ভোটার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন নির্বাচন থাকায় তাকে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ’ তবে গোপনীয়তার কথা অস্বীকার করে নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে যে কেউ বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আমাদের কাছে এলে তাকেই আমরা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবো এটাই স্বাভাবিক।’

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য সন্তু লারমা আবেদন করলেও এখনো তা হাতে পাননি তিনি, তবে ভোটার তালিকায় ইতোমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছেন।

ভোটার হওয়ার ব্যাপারে সন্তু লারমার বক্তব্য পাওয়া না গেলেও ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকায় হোটেল সুন্দরবনে জেএসএস আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা বলেছিলেন, ‘এখানে আইডি কার্ড নেয়া না নেয়া যেমন সেই ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে, তেমনি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া না হওয়াও তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। আমার যেহেতু আইডি কার্ড এ পর্যন্ত প্রয়োজন হয় নাই সেজন্য আমি আইডি কার্ড করি নাই। আমি এই দেশের নাগরিক আমি কেন এ পর্যন্ত ভোটার হই নাই এ প্রশ্নটা তো এখন পর্যন্ত শাসক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কেউ জানতে চায় নাই।’

জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সামরিক শাখা শান্তিবাহিনীর সাবেক প্রধান সন্তু লারমা ১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এরপর সরকার তাকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করলেও কখনোই বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি।

এসএম/কেকে//ডেস্ক–

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

অবশেষে এনআইডির আবেদন করলো সন্তু লারমা

Update Time : ০১:০০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

রাঙামাটি প্রতিনিধি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি সাবেক গেরিলা নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা (৭৭) এ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি। অংশ নেননি বাংলাদেশের কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে। তবে এবার তাকে করোনাভাইরাস (কোভিট-১৯) তার মান ভাঙাতে সফল হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ভ্যাকসিন নিতে পারছিলেন না সন্তু লারমা। যে কারণে বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে আটকে যাচ্ছিলেন তিনি। ফলে অবেশেষে নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করালেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে-চলতি বছরের ২৯ আগস্ট রাঙামাটি জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে চরম গোপনীয়তায় নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত করতে ছবি তোলাসহ আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করেছেন তিনি। মূলত জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া করোনা টিকা নিতে না পারায় তিনি এই আবেদন করেছেন বলে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রভাবশালী সূত্র নিশ্চিত করেছেন। সূত্রটি আরও জানায়-নির্বাচন কমিশন অফিসে কঠোর গোপনীয়তা ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্যে দিয়ে তার ভোটার হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। সন্তু লারমা চেয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভোটার কার্যক্রম শেষ করতে। কিন্তু জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে তাকে জানানো হয় টেকনিক্যালি সেটা সম্ভব নয়। এরপর তিনি নির্বাচন কমিশন অফিসে এসে অত্যন্ত গোপনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন।

রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান গনমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘তিনি (সন্তু লারমা) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমাকে ফোন করে ভোটার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন নির্বাচন থাকায় তাকে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ’ তবে গোপনীয়তার কথা অস্বীকার করে নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে যে কেউ বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আমাদের কাছে এলে তাকেই আমরা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবো এটাই স্বাভাবিক।’

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য সন্তু লারমা আবেদন করলেও এখনো তা হাতে পাননি তিনি, তবে ভোটার তালিকায় ইতোমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছেন।

ভোটার হওয়ার ব্যাপারে সন্তু লারমার বক্তব্য পাওয়া না গেলেও ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকায় হোটেল সুন্দরবনে জেএসএস আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা বলেছিলেন, ‘এখানে আইডি কার্ড নেয়া না নেয়া যেমন সেই ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে, তেমনি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া না হওয়াও তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। আমার যেহেতু আইডি কার্ড এ পর্যন্ত প্রয়োজন হয় নাই সেজন্য আমি আইডি কার্ড করি নাই। আমি এই দেশের নাগরিক আমি কেন এ পর্যন্ত ভোটার হই নাই এ প্রশ্নটা তো এখন পর্যন্ত শাসক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কেউ জানতে চায় নাই।’

জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সামরিক শাখা শান্তিবাহিনীর সাবেক প্রধান সন্তু লারমা ১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এরপর সরকার তাকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করলেও কখনোই বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি।

এসএম/কেকে//ডেস্ক–